আগৈলঝারা উপজেলা

আগৈলঝারা উপজেলা (বরিশাল জেলা)  আয়তন: ১৫৫.৪৭ বর্গ কি.মি। অবস্থান: ২২°৫৪´ থেকে ২৩°০৩´ উত্তর অক্ষাংশ ৯০°০৩´ থেকে ৯০°১৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তর ও পূর্বে গৌরনদী উপজেলা, দক্ষিণে উজিরপুর উপজেলা, পশ্চিমে কোটালিপাড়া উপজেলা।

জনসংখ্যা ১৪৯৪৫৬; পুরুষ ৭২৪২১; মহিলা ৭৭০৩৫। মুসলমান ৮২৭২০, হিন্দু ৬৩১৭৫, বৌদ্ধ ৬, খ্রিস্টান ৩৫৫৩ এবং অন্যান্য ২।

জলাশয় বিষারকান্দি, গৌর ও নান্দা নদী এবং ধোপার পারের বিল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন আগৈলঝারা থানা গঠিত হয় ১৬ জুন ১৯৮১ সালে এবং উপজেলায় রূপান্তরিত হয় ১৯৮৩ সালের ৭ নভেম্বর।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ৭৮ ৯৬ ১০৮৫৭ ১৩৮৫৯৯ ৯৬১ ৭২.০ ৬২.২
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৭.৪০ ১০৮৫৭ ১৪৬৭ ৭২.০
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
গৈলা ৪৭ ৬২৯৮ ১৫৫৮০ ১৬৭৪৩ ৬৫.৪
বাকল ১৫ ৭৯৫৬ ১২৬৬৭ ১৩০৫৪ ৬২.৯
বাগধা ১৩ ৮৭১৩ ১৪৬২৭ ১৫৬৭৯ ৫৯.৬
রতœপুর ৮৭ ৬৫১৪ ১৪১৮৮ ১৫০৯৩ ৬২.৮
রাজিহার ৭৯ ৮৯৩৭ ১৫৩৫৯ ১৬৪৬৬ ৬৩.৬

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ ফুল্লশ্রীর মনসা মন্দির (সুলতানি আমল, কবি বিজয়গুপ্ত এটি প্রতিষ্ঠা করেন), গৈলার প্রাচীন দুর্গ, ধরাধরের দিঘি (বেলুহার), ছবিখারপাড় দিঘি।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় কোদালধোয়া গ্রামের লক্ষ্মণদাস সার্কাসের মালিক লক্ষ্মণদাস-সহ ৮ জন গ্রামবাসীকে পাকবাহিনী নির্মমভাবে নির্যাতন করে হত্যা করে। উপজেলার মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে যেসব যুদ্ধ করে সেগুলির মধ্যে পয়সার হাট যুদ্ধ এবং আমবৌলার যুদ্ধ উল্লেখযোগ্য। উপজেলার কাটিরায় ১টি বধ্যভূমি এবং রান্তায় ১টি গণকবর আছে।

বিস্তারিত দেখুন আগৈলঝাড়া উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ১।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৬২.৯%; পুরুষ ৬৫.৪%, মহিলা ৬০.৬%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ডিগ্রি কলেজ (১৯৭২), আগৈলঝারা কলেজ, কবীন্দ কলেজ (সংস্কৃত কলেজ), ভেগাই হালদার পাবলিক একাডেমী (১৯১৯), গৈলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৮৯৩), বাগধা মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯২২), বাহাদুরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯২৪), আগৈলঝারা হাইস্কুল, পয়সার হাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সেরাল হাইস্কুল, জোবারপাড় খ্রিস্টান মিশনারি স্কুল, ঘোড়ার পাড় খ্রিস্টান মিশনারি স্কুল, পূর্ব সুজনকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৪, ক্লাব ৩৫, সিনেমা হল ১।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬০.৮%, অকৃষি শ্রমিক ১.৯৬%, ব্যবসা ১৫.৪%, চাকরি ৮.৫%, নির্মাণ ৪.১%, পরিবহন ২.০% এবং অন্যান্য ৭.২৪%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৮২.১১%, ভুমিহীন ১৭.৮৯%। শহরে ১.৯১% ও গ্রামে ৮২.৮৮% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষিফসল ধান, গম, আলু, পাট, কলা, পান, সরিষা, ডাল।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি চিনা, কাউন, তিসি, অড়হর।

প্রধান ফল-ফলাদিব আম, কাঁঠাল, কলা, লিচু, জাম, তরমুজ, পেঁপে।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার এ উপজেলায়  মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার রয়েছে।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ২১৩ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৪২ কিমি, কাঁচারাস্তা ৩৩৪ কিমি; নৌপথ ১৮২ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, ঘোড়া ও গরুর গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা ফ্লাওয়ার মিল, রাইস মিল, স’মিল, ওয়েল মিল, আইস ফ্যাক্টরি।

হাটবাজার ও মেলা সাহেবের হাট, পয়সার হাট, আস্কর কালীবাড়ি হাট, বাকল হাট, গৈলা বাজার ও কোদালধোয়া বারুণী মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য   পান, পাট, কচুরিপানার তৈরি কাগজ।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার ৪৯.৫% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয় জলের উৎস নলকূপ ৮৮.০%, ট্যাপ ০.৩% এবং অন্যান্য ১১.৭%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলায় ৮৫.২% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ১২.২% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ২.৬% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র হাসপাতাল ৪, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৭, পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৫, ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৬।

এনজিও কেয়ার, ব্র্যাক, কারিতাস, আশা, প্রশিকা, তরঙ্গ।  [অপূর্ব লাল হালদার]

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; আগৈলঝারা উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।