অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ

অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ (Antiviral Drugs) হলো এফডিএ দ্বারা অনুমোদিত ওষুধ যা ভাইরাল সংক্রমণের বা নিয়ন্ত্রণের জন্য উপসর্গ ও সংক্রামকতা নিয়ন্ত্রণ এবং অসুস্থতার মাত্রা ও সময়কালকে কমিয়ে আনতে ব্যবহৃত হয়। উপলব্ধ বেশিরভাগ অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ প্রধান এইচআইভি, হারপিস ভাইরাস, হেপাটাইটিস বি/সি ভাইরাস, ইনফ্লয়েঞ্জা এ/বি ভাইরাসের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত এই উপাদানগুলো মূলত ভাইরাল জীবনচক্রের নির্দিষ্ট ধাপ/পর্যায়ে কাজ করে। যেমন: পোষকের সাথে সংযুক্তি, বাহ্যিক আবরণ বিচ্যুতি, ভাইরাল mRNA (V-mRNA) এর সংশ্লেষণ, (V-DNA) বা (V-V-RNA)-এর অনুলিপন, বংশধর ভাইরাসের সমাবেশ, পোষকের শরীরে সংক্রমিত নতুন ভাইরাসের ভাইরাস মুক্তি। অ্যান্টিভাইরাল ওষুধগুলোকে তাদের নিজ নিজ কর্মপ্রক্রিয়ার কৌশলের উপর ভিত্তি করে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়, যেমন: পোষক শরীরে ভাইরাসের প্রবেশ রোধ করে এন্ট্রি-ব্লকার, নিউক্লিওসাইড/নিউক্লিওটাইড অ্যানালগ ভাইরাস জিনোম সংশ্লেষণে হস্তক্ষেপ করে।

ভাইরাসজনিত রোগের চিকিৎসায় নির্দিষ্ট কোনো ওষুধ পাওয়া কঠিন কারণ ভাইরাসগুলো অন্তকোষীয় পরজীবী। এই নির্জীব ভাইরাস কণা নির্দিষ্ট পোষকের বিপাকীয় প্রক্রিয়া ব্যবহার করে জীবনলাভ ও বংশ বৃদ্ধি করে। অ্যান্টিভাইরাল ওষুধগুলো সাধারণ অ্যান্টিবায়োটিক থেকে আলাদা কারণ অ্যান্টিবায়োটিক জীবন্ত ব্যাকটেরিয়া কোষের অভ্যন্তরে সংঘটিত বিভিন্ন বিপাকীয় কাজে বাধা দেয় ও শেষ পর্যন্ত তাদের নিরপেক্ষ ও নির্জীব বস্তুতে পরিণত করে। অ্যান্টিবায়োটিক ভাইরাসের সংক্রমণে কাজ করে না, এবং ভাইরাস প্রোটিন-নির্দিষ্ট অ্যান্টিভাইরাল ওষুধগুলোও ভাইরাসকে পুরোপুরি নিষ্ক্রিয় করে না। ওষুধগুলো, ভাইরাসের অনুলিপনে হস্তপেক্ষ করে পোষকের শরীরে ভাইরাসের সংখ্যা কমায়, যাতে করে শরীরের সহজাত রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা সহজে ভাইরাস নির্মূল করতে পারে। একই পরিবারভুক্তি বিভিন্ন প্রজাতির ভাইরাসের মধ্যে টার্গেট-সাইট একই হলে অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ সামগ্রিক কার্যকারিতা দেখাবে।

অ্যান্টিভাইরাল ড্রাগ রেজিস্ট্যান্স অ্যান্টিভাইরাল থেরাপির ক্ষেত্রে একটি প্রতিবন্ধকতা। এক্ষেত্রে, ভাইরাস জিনোটাইপের পরিবর্তনের কারণে ওষুধের সংবেদনশীলতা হ্রাস পায়। ফ্লু/করোনা ভাইরাসের মতো আরএনএ ভাইরাসের ক্ষেত্রে, আরএনএ পলিমারেজ দ্বারা জিনোম অনুলিপনের সময় উৎপন্ন ভুল সংশোধনের কোনো ‘ফুলপ্রুফ’ পদ্ধতি নেই। তাই অ্যান্টিভাইরাল ওষুধের কার্যকারিতা প্রশ্নাতীত নয়। [মামুন রশিদ চৌধুরী]