হোসেন কুলী বেগ

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২৩:১৯, ৪ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Added Ennglish article link)
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

হোসেন কুলী বেগ  বাংলার সুবাহদার। তিনি ছিলেন ওয়ালী বেগ জুল-কদরের পুত্র এবং বৈরাম খান খান-ই-খানানের ভাগ্নে। তিনি মুগল সম্রাট  আকবরের সেনাবাহিনীর একজন সাধারণ সৈনিক হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। বৈরাম খানের বিদ্রোহকালে হোসেন কুলী বেগ তার পিতাকে নিয়ে বৈরাম খানের পক্ষ গ্রহণ করেন। বৈরাম খানের পতনের পর সম্রাট আকবর তাঁকে বন্দি করেন। পরবর্তী সময়ে হোসেন কুলী বেগকে ক্ষমা করা হয় এবং তাঁকে তাঁর পদে পুনর্বহাল করা হয়। এরপর থেকে হোসেন কুলী বেগ তাঁর বাকি জীবন অত্যন্ত আন্তরিকতা ও আনুগত্যের সাথে মুগল সাম্রাজ্যের স্বার্থে কাজ করেন এবং অতি দ্রুত পদোন্নতি লাভ করেন।  মুনিম খানের মৃত্যুর পর ১৫৭৫ খিস্টাব্দে সম্রাট আকবর তাঁকে ‘খান-ই-জাহান’ উপাধিসহ বাংলার সুবাহদার নিযুক্ত করেন।

সুবাহদার হিসেবে বাংলায় খান-ই-জাহান-এর প্রধান দায়িত্ব ছিল আফগানদের কবল থেকে প্রদেশকে পুনরুদ্ধার করে সেখানে মুগল কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা। দীর্ঘ সংগ্রামের পর ১৫৭৬ খ্রিস্টাব্দের ১২ জুলাই  রাজমহলের যুদ্ধে তিনি আফগানদের পরাজিত করেন এবং বাংলার আফগান সুলতান দাউদ খান কররানীকে বন্দি ও শিরশ্ছেদ করেন। তিনি আরও অগ্রসর হয়ে দাউদ খানের অবশিষ্ট অনুসারীদের পরাজিত করেন এবং সাতগাঁও মুগল সাম্রাজ্যভুক্ত করেন।

তবে দাউদ খানের পরাজয় ও মৃত্যু বাংলায় মুগল সাম্রাজ্য বিস্তারের পথকে পুরোপুরি সুগম করে নি। বাংলার ভাটি অঞ্চলে নতুন সমস্যার সৃষ্টি হয়। সেখানে দুর্বিনীত আফগান দলপতি ও ভূঁইয়াগণ  ঈসা খানের নেতৃত্বে মুগলদের বিরুদ্ধে পুনরায় লড়াই শুরু করার প্রস্ত্ততি নিচ্ছিলেন। ঈসা খান ও তাঁর মিত্রদেরকে শাস্তি প্রদানের লক্ষ্যে খান-ই-জাহান ১৫৭৮ খ্রিস্টাব্দে ভাটি অঞ্চলে অভিযান করেন এবং ভাওয়ালে শিবির স্থাপন করেন। প্রাথমিক পর্যায়ে কিছুটা সাফল্য লাভ করলেও মুগল বাহিনী কাসতুলে নৌ-যুদ্ধে ঈসা খানের নিকট শোচনীয়ভাবে পরাজয় বরণ করে। এরপর খান-ই-জাহান ভাটি অঞ্চল ত্যাগ করেন এবং ১৫৭৮ খ্রিস্টাব্দে বাংলার মুগল রাজধানী  তান্ডার নিকটবর্তী কোন এক স্থানে তাঁর মৃত্যু হয়।  [এ.এ শেখ মোহম্মদ আসরারুল হক চিশতি]