সরিষাবাড়ী উপজেলা

সরিষাবাড়ী উপজেলা (জামালপুর জেলা)  আয়তন: ২৬৩.৪৮ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৩৪´ থেকে ২৪°৫০´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৪৩´ থেকে ৮৯°৫৬´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে মাদারগঞ্জ ও জামালপুর সদর উপজেলা, দক্ষিণে ভূঞাপুর উপজেলা, পূর্বে গোপালপুর ও ধনবাড়ী উপজেলা, পশ্চিমে সারিয়াকান্দি, কাজীপুর ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা।

জনসংখ্যা ৩১৬০০৭; পুরুষ ১৬১৬৮৩, মহিলা ১৫৪৩২৪। মুসলিম ৩০৭২২২, হিন্দু ৮৬৯২, বৌদ্ধ ৩৯ এবং অন্যান্য ৫৪।

জলাশয় যমুনা ও ঝিনাই নদী এবং কাউয়ামারা বিল ও বালাকুড়িয়া বিল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন সরিষাবাড়ী থানা গঠিত ১৯৬০ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
১৩৮ ১৮২ ৪৯৬৮৪ ২৬৬৩২৩ ১১৯৯ ৫০.২ ৩৭.১
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার(%)
২১.৯৫ ৩৬ ৪৮৬৯৭ ২২১৮ ৫০.৫
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
২.০১ ৯৮৭ ৪৯১ ৩১.৬
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
আওনা ১০ ৭৫৫৩ ১৪৭৭২ ১৪২৩১ ৪৩.২৫
কামরাবাদ ৪২ ৪১৭৯ ৮৭৭৪ ৭০৪৩ ২৯.১৩
ডোয়াইল ৩১ ৮২৪৫ ২১৩৪৬ ২১২৬১ ৩৮.২৬
পিংনা ৬৩ ৭২০৩ ১৪৬৮৮ ১৪৪৫৫ ৩৪.২৫
পোগলদিঘা ৭৩ ৯৮৮৩ ২৮০৫৪ ২৬৪১৭ ৪৫.৪৪
ভাটারা ২১ ৬১১৬ ১৫৩৩৬ ১৪৬৮৫ ৩৪.৮৩
মহাদান ৫২ ৬৫৬৪ ১৮০০০ ১৭৪৫০ ৩৫.৪৬
সাতপোয়া ৮৪ ৯৫৩৪ ১৫৬৬৪ ১৪১৩৪ ২৪.৯১

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ পাঁচ গম্বুজ বিশিষ্ট রসপাল জামে মসজিদ (ঊনবিংশ শতাব্দী), নরপাড়া দুর্গ (ষোড়শ শতাব্দী)।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন গণকবর ৮ (বাউসী ব্রীজ সংলগ্ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চত্বর, আরামনগর, আউটার সিগন্যাল, শাইচারপাড়া, কান্দারপাড়া, চেঁচিয়াবাধা, পিংনা শাহী মসজিদ, পাড়পাড়া)।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান  মসজিদ ৫৩০, মন্দির ১৯।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৩৯.২%; পুরুষ ৪২.৯%, মহিলা ৩৫.৩%। কলেজ ৯, হোমিওপ্যাথি কলেজ ১, কারিগরি কলেজ ২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৫, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১১৭, কমিউনিটি বিদ্যালয় ৪, গণশিক্ষা কেন্দ্র ৫৫, মাদ্রাসা ২৩। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ: আলহাজ্ব রিয়াজউদ্দিন তালুকদার ডিগ্রি কলেজ (১৯৬৭), পিংনা ইংলিশ হাইস্কুল (১৮৭৯), পিংনা উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯৬), ডোয়াইল উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১১), চাপার কোণা মহেশচন্দ্র উচ্চবিদ্যালয় (১৯১৯), সরিষাবাড়ী রাণী নিদমণি মডেল হাইস্কুল (১৯২০), সরিষাবাড়ী আর.ডি.এম উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২০), বলরিদিয়ার প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮৬৯), পোগলদিঘা প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮৯০), আরামনগর কামিল মাদ্রাসা (১৯২২), পিংনা মাদ্রাসা (সম্রাট শাজাহানের আমলে প্রতিষ্ঠিত)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী সাপ্তাহিক: নবতান।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান নাট্যদল ১, সিনেমা হল ২, লাইব্রেরি (মসজিদ ভিত্তিক) ৭৬, ক্লাব ৬৫, মহিলা সমিতি ৩২, খেলার মাঠ ১৭।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৩.৮৪%, অকৃষি শ্রমিক ২.৭৬%, শিল্প ১.৩১%, ব্যবসা ১২.২৯%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.৯১%, চাকরি ৮.০৬%, নির্মাণ ১.২৮%, ধর্মীয় সেবা ০.২২%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৩৬% এবং অন্যান্য ৬.৯৭%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬৫.৯০%, ভূমিহীন ৩৪.১০%। শহরে ৪৭.৫৬% এবং গ্রামে ৬৯.৩৯% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, গম, সরিষা, আখ, চীনাবাদাম, মিষ্টি আলু, মসুরি, পান, হলুদ, মরিচ, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি  চিনা, কাউন, তিল, তিসি।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, নারিকেল, সুপারি, কলা, পেঁপে।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার গবাদিপশু ৫, গবাদিপশু প্রজনন কেন্দ্র ৪, হাঁস-মুরগি ১৫, হ্যাচারি ৩।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১১৯ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ২৭ কিমি, কাঁচারাস্তা ২৯৬ কিমি; নৌপথ ১৬ নটিক্যাল মাইল; রেলপথ ১৭ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, ডুলি।

শিল্প ও কলকারখানা পাটকল, সার কারখানা, ওয়েল্ডিং কারখানা।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, তাঁতশিল্প, নকশী কাঁথা, কাঠের কাজ, বাঁশের কাজ, বেতের কাজ, পাট ও তুলার কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৬০, মেলা ৩। আরামনগর হাট, বয়ড়া হাট, পিংনা হাট ও ভাটারা হাট এবং বগারপাড় মেলা ও বাউসী পঞ্চপীর মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য পাট, পাটজাত দ্রব্য, সরিষা, চাল, মরিচ, সার, দুধ।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৩.৫৫% (শহরে ৪০.০৫% এবং গ্রামে ২০.৪৭%) পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯২.১৬%, ট্যাপ ১.৮৩%, পুকুর ০.০৯% এবং অন্যান্য ৫.৯২%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ২১.৭১% (শহরে ২১.৩২% এবং গ্রামে ২১.৭৮%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৫০.৯৯% (শহরে ৫০.৬১% এবং গ্রামে ৫১.০৬%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। তবে ২৭.৩০% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৮, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৪, ডায়গনস্টিক সেন্টার ২।

এনজিও ব্র্যাক, আশা, কারিতাস, কেয়ার, ডানিডা। [সৈয়দ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী]

তথ্যসূত্র  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; সরিষাবাড়ী উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।