সমুদ্রপৃষ্ঠ

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২৩:০৬, ৪ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Added Ennglish article link)
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

সমুদ্রপৃষ্ঠ (Sea Level)  সমুদ্রের জোয়ারভাটার মাঝামাঝি তল বা উচ্চতা, যা কোন স্থানের ভূমি উত্থান এবং মহাসাগরীয় গভীরতা পরিমাপক নির্দেশক রেখা (datum) হিসেবে ব্যবহূত হয়ে থাকে। তাত্ত্বিকভাবে ধরে নেওয়া যায় যে, সমুদ্রপৃষ্ঠ স্থির এবং মহাদেশের দিকে মুখ করে অবস্থিত স্থায়ী অনুভূমিক একটি পৃষ্ঠ। কিন্তু বিভিন্ন উপাদানের ক্রিয়াকলাপের ফলাফলে সমুদ্রপৃষ্ঠ স্থানভেদে কয়েক মিটার পর্যন্ত কম বেশি হতে পারে। জোয়ারভাটার উঠানামা, জলরাশির তাপমাত্রা ও লবণাক্ততার পরিবর্তন, ঋতু পরিবর্তন, ঊর্ধ্ব নিঃসরণ, নদ-নদীর সরবরাহের পরিবর্তন প্রভৃতির প্রভাবে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতার প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হয়ে থাকে। যদি উপরের সবগুলো কারণকে উপেক্ষা করা যায়, তবে সমুদ্রপৃষ্ঠের ক্রমবর্ধিষ্ণু পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব। পরিবর্তনশীল এই প্রভাবকগুলোর কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা সেকেন্ড থেকে শুরু করে বছর পর্যন্ত সময়কালের মধ্যে বাড়তে বা কমতে পারে। বহুবিধ প্রয়োজনে কোন নির্দিষ্ট স্থানে সমুদ্রপৃষ্ঠের গড় সমতল (mean sea level, or MSL) জানা অত্যাবশ্যক। যান্ত্রিক জোয়ারভাটা গজের সাহায্যে দীর্ঘকালব্যাপী সমুদ্রপৃষ্ঠ পরিমাপনের মাধ্যমে গড় সমুদ্রপৃষ্ঠ নির্ণয় করা হয়ে থাকে।

পৃথিবীর বিগত ইতিহাস থেকে একাধিকবার সমুদ্রপৃষ্ঠ পরিবর্তনের প্রমাণ পাওয়া যায়। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতার ক্রমশ বৃদ্ধির ফলে বিশ্ব জনগোষ্ঠীর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া, তথা নিম্ন উচ্চতা বিশিষ্ট বদ্বীপ অঞ্চলসমূহ প­াবিত হওয়ার আশঙ্কা একটি গুরুত্বপূর্ণ পারিবেশিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, বাংলাদেশও ক্ষতিগ্রস্ত দেশসমূহের তালিকার অর্ন্তভুক্ত। ইতোমধ্যে বিভিন্ন প­াবন মাত্রায় ২০৫০ সাল নাগাদ জনসংখ্যা, ভূমিব্যবহার এবং জাতীয় আয়ে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা হয়েছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের ১৪৪-২০৯ সেমি উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশের প্রায় ১৬-১৮% বাসযোগ্য ভূমি প­াবিত হওয়া এবং বর্তমান মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৩-১৫% ও মোট জাতীয় আয়ের (জিডিপি) প্রায় ১৩% পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।  [মোহা. শামসুল আলম]