রায়গঞ্জ উপজেলা

Banglapedia admin (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ১৭:৩৭, ১ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

রায়গঞ্জ উপজেলা (সিরাজগঞ্জ জেলা) আয়তন: ২৫৯.৭৪ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°২৫´ থেকে ২৪°৩৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°২৪´ থেকে ৮৯°৩৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে শেরপুর ও ধুনট উপজেলা, দক্ষিণে উল্লাপাড়া এবং কামারখন্দ উপজেলা, পূর্বে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা, পশ্চিমে তাড়াস উপজেলা।

জনসংখ্যা ৩১৭৬৬৬; পুরুষ ১৫৮৬০৪, মহিলা ১৫৯০৬২। মুসলিম ২৮২৫৫৮, হিন্দু ৩৪৮১৯, খ্রিস্টান ৩৮ এবং অন্যান্য ২৫১।

জলাশয় প্রধান নদী: করতোয়া, ইছামতি ও বাঙ্গালী।

প্রশাসন রায়গঞ্জ থানা গঠিত হয় ১৯৩৭ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৪ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
১৯১ ২৬৭ ১৮৮৯০ ২৯৮৭৭৬ ১২২৩ ৫৪.৮ (২০০১) ৩৬.৭
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
- ২৯ ১৭৩১৮ - ৬১.৩
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
২.৬২ (২০০১) ১৫৭২ ২৫৮১ (২০০১) ৫৫.৩
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
ঘুরকা ৫৭ ৬৪৬৭ ১৯০৪৬ ১৮৪৭৮ ৪২.৭
চান্দাইকোনা ১৯ ৭৯০৬ ২০৬৪৩ ২০৬৪৩ ৪১.৯
ধানগড়া ৩৮ ৫৩৬১ ১৪৪৭১ ১৪৪৯৪ ৩৬.৬
ধামাইনগর ২৮ ৮৫৪৮ ৯৯৮৮ ১০৫২৩ ৩৫.৩
ধুবিল ৪৭ ৬৬২৫ ১৪২৩২ ১৪২১১ ৩৫.৪
নলকা ৬৬ ৭৬৭৫ ১৯৯৪৮ ১৯৯৭৯ ৩৭.২
পাঙ্গাশি ৭৬ ৬৫৭৪ ১৯৬০৭ ১৯৮৭৪ ৩০.২
ব্রহ্মগাছা ১৩ ৬৮৯৬ ২০০২৭ ১৯৯০২ ৩১.৩
সোনাখাড়া ৮৫ ৬৩৯৩ ১১৯৮৭ ১২২৯৫ ৪০.৪

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্মসম্পদ ধানগড়া মসজিদ (ধানগড়া ইউনিয়ন), খারিজা ঘুঘাট মসজিদ (ধুবিল ইউনিয়ন), বিরাট রাজার বাড়ি (নিমগাছি)।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালে পাকবাহিনী সলংগা, পাঙ্গাশি, ধানগড়া ও চান্দাইকোনা বাজারে ব্যাপক গণহত্যা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। মুক্তিযুদ্ধের সময় রায়গঞ্জ ৭নং সেক্টরের অধীন ছিল। এই উপজেলায় পাকবাহিনী ও তাদের দোসরদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের তিনটি যুদ্ধ হয়। এগুলি ছিল ব্রহ্মগাছা, রায়গঞ্জ থানা এবং রায়গঞ্জ সিও অফিস এলাকার যুদ্ধ। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বগুড়া পতনের পর পাকসেনারা ঢাকার উদ্দেশ্যে পালিয়ে যাবার পথে রায়গঞ্জ এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণের মুখে পড়ে এবং শত্রুরা বিপর্যস্ত ও ছত্রভঙ্গ অবস্থায় এলাকা পার হয়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। ১২ ডিসেম্বর এ উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়।

বিস্তারিত দেখুন রায়গঞ্জ উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৯।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৩৬১, মন্দির ৫৫, মাজার ২। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: ধানগড়া মসজিদ, খারিজা ঘুঘাট মসজিদ, ভোলা দেওয়ানের (রহ.) মাযার, রাজার বাড়ি মন্দির।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৩৮.১%; পুরুষ ৪১.১%, মহিলা ৩৫.২%। কলেজ ১১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪৩, মাদ্রাসা ৩৭। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: সলংগা ডিগ্রি কলেজ (১৯৭০), হাজী ওয়াহেদ মরিয়াম ডিগ্রি কলেজ (১৯৭২), ধানগড়া মহিলা কলেজ (১৯৯৯), সলংগা মহিলা কলেজ (১৯৯৯), চান্দাইকোনা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২১), ধানগড়া উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫০), জে.কে.এ মান্নান উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৭৩), ধানগড়া ফাজিল মাদ্রসা (১৯৭৬)।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৯.২৭%, অকৃষি শ্রমিক ২.৯৩%, শিল্প ৪.৪৬%, ব্যবসা ১১.২৫%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.৫১%, চাকরি ৩.৯০%, নির্মাণ ০.৯০%, ধর্মীয় সেবা ০.১৭%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.১৮% এবং অন্যান্য ৫.৩৩%।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ২, সাংস্কৃতিক সংগঠন ২, মহিলা সংগঠন ৩, খেলার মাঠ ৬।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৫.৯৯%, ভূমিহীন ৪৪.০১%। শহরে ৩৫.৫৯% এবং গ্রামে ৫৬.৪৯% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, আলু, আখ, গম, ডাল, শাকসবজি।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, লিচু, কলা, পেঁপে, পেয়ারা, জাম।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৩৮, গবাদিপশু ৮, হাঁস-মুরগি ২৮, হ্যাচারি ৫।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১২৮ কিমি, কাঁচারাস্তা ৬৪৩ কিমি। ব্রিজ ২৪, কালভার্ট ২৫৭।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, ডুলি, ঘোড়ার গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা চালকল, আটাকল, বরফকল, করাতকল, ওয়েল্ডিং কারখানা।

কুটিরশিল্প তাঁতশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, সুচিশিল্প, বাঁশের কাজ, বেতের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৯, মেলা ৫। চান্দাইকোনা হাট, সলংগা হাট, ধামাইর হাট আমশড়া হাট, ব্রক্ষ্মগাছা হাট, নলকা হাট, রুদ্রপুর হাট, কৃষ্ণদিয়া হাট এবং নিমগাছি মেলা ও ধানগড়া মেলা উল্লখযোগ্য।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৩৩.৬% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৫.৪%, ট্যাপ ০.৭% এবং অন্যান্য ৩.৯%। এ উপজেলার ২৩.৩২% অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৬১.৮% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ২৮.৮% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৯.৪% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, স্বাস্থ্যকেন্দ্র ৯।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৮৯৭, ১৯৪৩ ও ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষে এ উপজেলায় প্রাণহানি ঘটে। এছাড়া ১৮৮৫ ও ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে এ উপজেলার ঘরবাড়ি ও অন্যান্য সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়।

এনজিও ব্র্যাক, প্রশিকা, অঙ্কুর কল্যাণ সংস্থা। [মোনায়েম খান]

তথ্যসূূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; রায়গঞ্জ উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।