রপ্তানি ঋণ গ্যারান্টি স্কিম

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২২:৫১, ৪ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Added Ennglish article link)
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

রপ্তানি ঋণ গ্যারান্টি স্কিম দেশের রপ্তানিকারকদের মালামাল রপ্তানির ঝুঁকি থেকে নিরাপত্তা প্রদানের জন্য ১৯৭৮ সালে প্রবর্তিত একটি সরকারি কর্মসূচি। যে সকল ঝুঁকি থেকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়ে থাকে তার মধ্যে রয়েছে ক্রেতাদের দেউলিয়াত্ব বা মূল্য পরিশোধে অক্ষমতা এবং রাজনৈতিক বাধানিষেধের জন্য অর্থপ্রাপ্তিতে বিলম্ব। এই স্কিমটি রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো এবং বাণিজ্য, শিল্প ও অর্থ মন্ত্রণালয়সমূহের উদ্যোগে চালু করা হয়েছিল। যুক্তরাজ্যে ১৯১৯ সালে সর্বপ্রথম প্রবর্তিত এক্সপোর্ট ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিমকে ভিত্তি করে ১৯৬২ সালে পাকিস্তানে একই নামে একটি কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।

বাংলাদেশে সাধারণ বীমা কর্পোরেশন নামে একটি রাষ্ট্র-পরিচালিত সাধারণ বীমা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক স্কিমটি পরিচালিত হয়ে আসছে। এই স্কিমে নতুন উৎপাদিত দ্রব্যাদি রপ্তানিতে এবং/অথবা নতুন বাজার সৃষ্টিতে উৎসাহ প্রদান করা হয়ে থাকে এবং এই লক্ষ্যে ক্রেতাদের দেউলিয়াত্ব ও বৈদেশিক বাণিজ্যসম্পৃক্ত রাজনৈতিক ঝুঁকিসমূহের নিশ্চয়তা প্রদান করে থাকে। এই স্কিমের আওতায় রপ্তানিকারকদের দ্রব্যাদি উৎপাদনের সময় এবং রপ্তানি ও বিদেশি ক্রেতাদের নিকট থেকে অর্থপ্রাপ্তির মধ্যবর্তী সময়ের জন্য রপ্তানিকারকগণ যাতে ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করতে পারেন তার জন্যও গ্যারান্টি দেওয়া হয়। বাংলাদেশের রপ্তানিকারকগণ সর্বাধিক ১৮০ দিনের জন্য ক্রেডিট সুবিধা ভোগ করতে পারেন। ১৯৯০ থেকে ১৯৯৫ সালের মধ্যে কাঁচা পাট, পাটজাত দ্রব্যাদি, চামড়াজাত দ্রব্যাদি, হিমায়িত খাদ্য, তৈরি পোশাক, হস্তশিল্পজাত দ্রব্যাদি ও ন্যাপথা রপ্তানিকারকগণ এই স্কিমের সুবিধাদি ভোগ করেন। মালামাল জাহাজে বোঝাই করার আগে ও পরে উভয়ক্ষেত্রেই গ্যারান্টি দেওয়া হয়ে থাকে। এতে প্রাপ্য পরিশোধে অসামর্থ্য ও বিলম্বের ক্ষেত্রে ঝুঁকি মিটানোর অঙ্গীকার করা হয়। সাধারণত বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে ঝুঁকির ৭৫% থেকে ৮০% ভাগ এবং রাজনৈতিক ঝুঁকির ৯৫% ভাগ মিটানো হয়ে থাকে। ১৯৭৮-১৯৯৫ সালে ৬৪.২৩ বিলিয়ন টাকা মূল্যমানের ৫,২২৩টি গ্যারান্টি ইস্যু করা হয়। এই গ্যারান্টিসমূহের প্রিমিয়াম আয় ছিল ২.২৮ বিলিয়ন টাকা, দাবি মেটানো হয়েছিল ১.১৮ বিলিয়ন টাকা এবং দাবি মেটানোর অপেক্ষায় ছিল ১.৬৪ বিলিয়ন টাকা।

সরকার নিয়োজিত দশ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি এক্সপোর্ট ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম সংক্রান্ত দাবিসমূহ মীমাংসা করে থাকে। অবশ্য স্কিমটির সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের উন্নততর ও পেশাগত দক্ষতা এবং জনবলের অভাব রয়েছে। রপ্তানিকারকগণ এবং বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহেরও বিষয়টি সম্বন্ধে যথাযথ প্রশিক্ষণ বা জ্ঞান নেই। উৎপাদিত দ্রব্যাদির গুণাগুণ এবং সেবাদান তৎপরতায় উদ্যোগের অভাব স্কিমটির যথাযথ বাস্তবায়ন ব্যাহত করে থাকে।  [এম হবিবুল্লাহ]