যিশু

Mukbil (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ০৪:১৭, ৮ মার্চ ২০১৫ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

যিশু (আনু. খ্রিপূ ৪-খ্রি ৩০)  খ্রিস্টান ধর্মালম্বীগণ যিশুকে জীবের মুক্তিদাতা হিসেবে গণ্য করে এবং বিশ্বাস করে যে, তিনি ছিলেন সৃষ্টিকর্তার পুত্র এবং কুমারী মেরীর গর্ভে তাঁর জন্ম। ইসলাম ধর্মমতে মহানবী  হযরত মুহাম্মাদ (স.) -এর পূর্বে আরও যে হাজার হাজার নবী পৃথিবীতে এসেছিলেন যিশু তাঁদের একজন। ইসলাম ধর্মে তিনি নবী ইসা (আ.) নামে স্বীকৃত। Christ শব্দটি গ্রিক শব্দ Christos থেকে এসেছে। এর অর্থ সৃষ্টিকর্তার একজন নির্বাচিত ব্যক্তি। যিশুকে Messiah বা ত্রাণকর্তাও বলা হয়। যিশু জীবন ও শিক্ষণীয় বাণীর প্রধান উৎস বাইবেলের Gospels of Matthew, Mark, Luke এবং John অধ্যায়গুলি। এসব বিবরণ থেকে জানা যায় যে, যিশু ফিলিস্তিনের বেথলেহেমে জন্মগ্রহণ করেন এবং নাজরেথে লালিত-পালিত হন।

যিশুর বয়স যখন প্রায় ৩০ তখন তিনি John the Baptist-এর কাছে দীক্ষা গ্রহণ করেন। পরে তিনি এক নির্জন জায়গায় চলে যান। সেখানে ৪০দিন ও রাত প্রার্থনা এবং উপবাসের মাধ্যমে তিনি আত্মসংযম অর্জনে সক্ষম হন। এই নির্জনবাস থেকে ফিরে যিশু Kingdom of God বা সৃষ্টিকর্তার রাজত্ব সম্পর্কে প্রচার শুরু করেন। বাইবেলে বর্ণিত আছে যে, তিনি অনেক অলৌকিক ঘটনা সংঘটিত করেন, যেমন রুগ্নকে সুস্থ করা, অন্ধকে দৃষ্টিদান করা, মৃতকে বাঁচিয়ে তোলা ইত্যাদি। ফলে অনেক লোক তাঁর অনুসারী হয়। তাদের মধ্যে বারোজন ছিলেন তাঁর প্রধান শিষ্য। এই বারোজনের একজন পল যিশুর বাণী প্রচার করেন, পিটার গির্জা প্রতিষ্ঠা করেন এবং অপরজন জুদাস ইসক্যারিওট (Judas Iscariot) তাঁর বিরুদ্ধাচরণ করেন।

যিশুর মতবাদ প্রচারে ইহুদিরা এবং রোমের শাসকরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁকে হত্যা করার সুযোগ খুঁজতে থাকে। যিশু যখন ইহুদিদের Passover (মিশর থেকে ইহুদিদের বিতাড়ন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত) উৎসবে যোগদানের জন্য জেরুজালেমে যান তখন জনগণ তাঁকে প্রবল উৎসাহের সঙ্গে স্বাগত জানায়। কিন্তু পরেই তাঁকে বন্দি করা হয় এবং ইহুদিদের সর্বোচ্চ আদালত Sanhedrin কর্তৃক ধর্মদ্রোহিতার অপরাধে তাঁকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়। পরে তাঁকে রোমানদের জুদাইয়া অঞ্চলের শাসক Pontius Pilate-এর সম্মুখে আনা হয় এবং তিনিও তাঁর মৃত্যুদন্ডাজ্ঞা অনুমোদন করেন। Golgotha-য় ক্রুসে বিদ্ধ করে যিশুর মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়। খ্রিস্টানরা বিশ্বাস করে যে, যিশু ক্রুসে বিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর তিনদিন পর পুনর্জীবিত হন এবং পরে স্বর্গে চলে যান।

পাশ্চাত্য চার্চের নিয়মানুসারে প্রতি বছর ২৫ ডিসেম্বর  ক্রিস্টমাসএর মাধ্যমে তাঁর জন্মোৎসব পালিত হয়। কিন্তু প্রাচ্যের Orthodox Church এ উৎসবটি পালন করে Epiphany (বেথলেহেমে শিশু যিশুর নিকট মেজাইর আগমন) উপলক্ষে ৬ জানুয়ারি। তাঁর ক্রুসবিদ্ধের ঘটনা স্মরণ করা হয় Easter-এ। মুসলমানরা যিশুকে শ্রদ্ধা করে, কিন্তু ক্রুসে বিদ্ধ হয়ে তাঁর মৃত্যু স্বীকার করে না। ঐতিহাসিকভাবে প্রামাণ্য যিশুর কোনো ছবি নেই। চতুর্থ শতকে শ্মশ্রুবিহীন এক যুবক হিসেবে তাঁকে চিত্রিত করা হয়। পরবর্তীকালে তাঁর দাড়ি ও কাঁধ পর্যন্ত লম্বা চুল এবং ক্রুসবিদ্ধ ছবিও অঙ্কিত হয়। মধ্যযুগের চিত্রাঙ্কনে তাঁকে প্রায়ই দেখানো হতো মা মেরীর কোলে এক শিশু হিসেবে।  [সেলমন এইচ ডিও]

আরও দেখুন খ্রিস্টধর্ম