মুস্তফি, অর্ধেন্দুশেখর

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২২:৪৭, ৪ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Added Ennglish article link)
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

মুস্তফি, অর্ধেন্দুশেখর (১৮৫০-১৯০৯)  অভিনেতা ও নাট্যাচার্য। ১৮৫০ সালের ২৫ জানুয়ারি কলকাতার বাগবাজারে তাঁর জন্ম। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি না থাকলেও ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে তাঁর প্রগাঢ় পান্ডিত্য ছিল। পাথুরিয়াঘাটার রাজবাড়ির সঙ্গে আত্মীয়তাসূত্রে তাদের প্রতিষ্ঠিত নাট্যমঞ্চে অর্ধেন্দুশেখরের অভিনেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে। সতেরো বছর বয়সে ১৮৬৭ সালের ২ নভেম্বর তিনি কিছু কিছু বুঝি নাটকে প্রথম অভিনয় করেন। ব্যঙ্গাত্মক এ নাটকে অভিনয় করার কারণে রাজবাড়ির আশ্রয় থেকে তিনি বিতাড়িত হন। তখন তিনি বাল্যবন্ধুদের দ্বারা গঠিত বাগবাজার অ্যামেচার থিয়েটারে যোগদান করেন। এখানে সধবার একাদশী নাটকে কেনারাম চরিত্রে অভিনয় করে স্বয়ং নাট্যকার দীনবন্ধু মিত্রের অকুণ্ঠ প্রশংসা লাভ করেন। এ সৌখিন দলটির নামেই পরবর্তীকালে অর্ধেন্দুশেখরের প্রচেষ্টায় একটি সাধারণ রঙ্গালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।

এই সাধারণ রঙ্গালয়ের যাত্রা শুরু হয় দীনবন্ধু মিত্রের নীলদর্পণ নাটক দিয়ে। এ নাটকে অর্ধেন্দুশেখর একসঙ্গে গোলোক বসু, সাবিত্রী ও উড সাহেব এ তিন পুরুষ ও স্ত্রী চরিত্রে অভিনয় করে নজির সৃষ্টি করেন। বিশেষত উড চরিত্রে তিনি বিস্ময়কর সাফল্য অর্জন করেন। সাহেবি কায়দায় নির্ভুল  ইংরেজি উচ্চারণ, চলাফেরা, আদব-কায়দা ও অভিব্যক্তিতে তাঁর সমকক্ষ কেউ ছিল না। গিরিশচন্দ্র ঘোষের অসম্ভব জনপ্রিয়তার পাশাপাশি ভিন্ন ধারায় অভিনয় করে দর্শকদের কাছে তিনি সমান জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। গিরিশ ঘোষ অভিনয় করতেন সুরেলা কণ্ঠে, আর অর্ধেন্দু অভিনয় করতেন দৃপ্তকণ্ঠে। তিনি গুরুগম্ভীর, হাস্যরসাত্মক ও ইংরেজ সব ধরনের চরিত্র সমান দক্ষতায় ফুটিয়ে তুলতে পারতেন। গিরিশচন্দ্রের মতে অর্ধেন্দুর অভিনয় ছিল অননুকরণীয়।  অমৃতলাল বসু তাঁকে ‘বিধাতার হাতেগড়া অভিনেতা’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।

অর্ধেন্দুশেখর আরও যেসব চরিত্রে অভিনয় করে অনন্যসাধারণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন সেগুলি: নবীন তপস্বিনী-তে জলধর, দুর্গেশনন্দিনী-তে বিদ্যাদিগ্গজ, সিরাজদ্দৌলায় ড্রেক, মীরকাশিমে হলওয়েল, হে ও মেজর অ্যাডাম্স, প্রফুল্লে রমেশ, রিজিয়ায় ঘাতক, প্রতাপাদিত্যে রডা ইত্যাদি। তিনি নাট্যশিক্ষক হিসেবেও বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন। ১৯০৯ সালের ৫ সেপ্টেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়।  [ওয়াহিদা মল্লিক]