মুরারী চাঁদ কলেজ

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২৩:২০, ৪ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Added Ennglish article link)
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

মুরারী চাঁদ কলেজ সিলেটে অবস্থিত বাংলাদেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী কলেজ। এটি এম.সি কলেজ নামে সমধিক পরিচিত। তৎকালীন রায়নগরের জমিদার রাজা গিরীশ চন্দ্র রায় তাঁর মাতামহ মুরারী চাঁদ রায়ের স্মৃতি রক্ষার্থে ১৮৮৬ সালের ১৭ জুন প্রতিষ্ঠা করেন মুরারী চাঁদ হাই স্কুল। ১৮৯১ সালে স্কুলে কলেজ বিভাগ (এফ.এ ক্লাশ) খোলার অনুমতি দেয় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। ১৮৯২ সালের ২৭ জুন দ্বিতীয় গ্রেডের কলেজ হিসেবে ১৮ জন ছাত্র ও ৪ জন শিক্ষক নিয়ে আসাম প্রদেশের একমাত্র কলেজ হিসেবে মুরারী চাঁদ কলেজের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। ১৮৯৩ সালে মুরারী চাঁদ কলেজ থেকে এফ.এ পরীক্ষায় প্রথম ব্যাচ ছাত্র অংশগ্রহণ করে। ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে জমিদারবাড়িসহ কলেজ ভবনটি ধ্বংস হয়ে গেলে রাজা কলেজটি পুনঃনির্মাণ করেন। ১৯০৮ সালে সরকার মুরারী চাঁদ কলেজকে মাসিক ৫০০ টাকা গ্র্যান্ট-ইন-এইড্ মঞ্জুরি প্রদান করেন। ১৯১২ সালের ১ এপ্রিল ৯৮ জন ছাত্র ও ৬ জন শিক্ষক নিয়ে মুরারী চাঁদ কলেজ সরকারিকরণ করা হয়। স্কুলের পাশে গোবিন্দ পার্কে (বর্তমান হাসান মার্কেট) কলেজের জন্য আলাদা ভবন (চং বাংলো) নির্মিত হয়। ১৯১৬ সালে কলেজে বি.এ ক্লাশ চালু হয় এবং ১৯১৭ সালে বি.এ পরীক্ষায় প্রথম ব্যাচের ছাত্ররা অংশগ্রহণ করে। ১৯১৮ সালে এ কলেজে প্রথম সংস্কৃত বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু হয়। ১৯২১ সালের ১৯ আগস্ট আসামের শিক্ষা মন্ত্রী সিলেটের কৃতি সন্তান খান বাহাদুর সৈয়দ আব্দুল মজিদ (কাপ্তান মিয়া)-কে সঙ্গে নিয়ে আসামের গভর্নর স্যার উইলিয়াম মরিস নতুন করে থ্যাকারে টিলায় মুরারী চাঁদ কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। কলেজটি ১৯২৫ সালে গোবিন্দ পার্ক থেকে থ্যাকারে টিলায় স্থানান্তরিত হয়।

ষাটের দশকের শুরুতে শরীফ কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে কলেজের উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতক শাখা পৃথক করার পরিকল্পনা গৃহীত হয়। তদনুযায়ী কলেজের পূর্ব পাশে ১৯৬৬ সালের জুলাই থেকে সিলেটে একটি স্বতন্ত্র উচ্চমাধ্যমিক সরকারি কলেজ চালু করা হয়। নবপ্রতিষ্ঠিত কলেজটিকে মুরারী চাঁদ উচ্চমাধ্যমিক কলেজ এবং পুরাতন মুরারী চাঁদ কলেজকে সিলেট সরকারি কলেজ নামকরণ করা হয়। এর পেছনে যুক্তি ছিল, রাজা গিরীশচন্দ্র কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত মুরারী চাঁদ কলেজটি ছিল উচ্চমাধ্যমিক কলেজ এবং সেটি সরকারি ব্যয়ে ডিগ্রি পর্যায়ে উন্নীত হয়েছিল। ১৯৯৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর তদানীন্তন শিক্ষা সচিব হেদায়েত আহমদের উদ্যোগে কলেজের পূর্বনাম মুরারী চাঁদ কলেজ বহাল রাখা হয় এবং নতুন কলেজটিকে ডিগ্রি পর্যায়ে উন্নীত করে সিলেট সরকারি কলেজ নামকরণ করা হয়। মুরারী চাঁদ কলেজে উচ্চমাধ্যমিক বিজ্ঞান শাখাসহ দুটি অনুষদে মোট পনেরটি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) এবং বারোটি বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্স চালু রয়েছে। অধ্যক্ষসহ কলেজে মোট শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা ১৩৩। বর্তমানে (২০১০) এর ছাত্রছাত্রী সংখ্যা প্রায় দশ হাজার। কলেজে একটি সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার আছে। ২০০০ সালে কলেজটি দেশের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি পায়।  [সৈয়দা সামসুন্নাহার]