মিরপুর উপজেলা (কুষ্টিয়া)

মিরপুর উপজেলা (কুষ্টিয়া জেলা)  আয়তন: ৩১৭.৩৫ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°৪৫´ থেকে ২৪°০০´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৫০´ থেকে ৮৯°০৬´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ভেড়ামারা ও ঈশ্বরদী উপজেলা, দক্ষিণে আলমডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া সদর উপজেলা, পূর্বে কুষ্টিয়া সদর, পশ্চিমে দৌলতপুর (কুষ্টিয়া), গাঙ্গনী ও আলমডাঙ্গা উপজেলা।

জনসংখ্যা ২৮৫০৮৯; পুরুষ ১৪৬৬৩৬, মহিলা ১৩৮৪৫৩। মুসলিম ২৭৮৭৫৭, হিন্দু ৬২৫২ এবং অন্যান্য ৮০। এ উপজেলায় কোল ও বুনো আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।

জলাশয় পদ্মা, কুমার ও গড়াই নদী এবং সাগরখালী খাল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন মিরপুর থানা গঠিত হয় ১৮৮৫ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১ আগস্ট ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
১২ ১২২ ১৮৭ ২৭৪০৬ ২৫৭৬৮৩ ৮৯৮ ৪৮.৫ ৩৫.৯
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৮.৮১ ১৫ ১৮৮৩৫ ২১৩৮ ৪৬.২
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৩.৫৪ ৮৫৭১ ২৪২১ ৫৩.৫
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
আমবাড়ীয়া ১৩ ৩৫৭৩ ৭৮৬৪ ৭৭৫৫ ৩৮.৪৪
আমলা ১৪ ৬৭৩৫ ১২৮১৯ ১১৮৯৮ ৪১.৮১
কুরশা ৫৮ ৫৮৮৬ ৯৪১১ ৯০৮১ ৩০.৬৬
চিথুলিয়া ৪৩ ৭৫৪২ ১৩৯৭০ ১৩১৩৬ ৩৫.১৪
ছাতিয়ান ৩৬ ৬২৮২ ১১৭০৩ ১১১১৭ ৩৫.২২
তালবাড়িয়া ৯৪ ৪৭৭১ ৯৬৭২ ৮৮৮১ ৩৭.০৩
পোড়াদহ ৮০ ৬৯৬২ ১৭২১৮ ১৬১৯২ ৪০.১৭
ফুলবাড়ীয়া ৭৩ ৫৩৩১ ৬২০৩ ৫৭৭১ ৩৫.৭৩
বহালবাড়িয়া ২১ ৪৪৬৪ ১১৫০৬ ১০৭৮৮ ৩৮.৬৩
বারুইপাড়া ২৯ ৬৭৮৪ ১২৪১১ ১১৯৪৩ ৪২.৯১৪
মালিহাদ ৬৫ ৭৫০০ ১১০৪৯ ১০৪৯৫ ২৪.০৭
সরদারপুর ৮৭ ৭৩৯৪ ১২৯১৭ ১২৪৫৪ ৩৩.৫৮

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান  মসজিদ ২৮০, মন্দির ১৮, মাযার ১। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: আল মোশাররফ জামে মসজিদ, বহুবাড়ীয়া পুরাতন জামে মসজিদ, খাদিমপুর বাজার মসজিদ এবং পোড়াদহের বাবুপাড়া সিংহবাবুদের মন্দির, সদরপুর মন্দির, মিরপুর পৌর মন্দির ও আবদুর রহমানের মাযার।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৩৭.১%; পুরুষ ৩৯.২%, মহিলা ৩৪.৯%। কলেজ ১২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৩, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১২৪, স্যাটেলাইট স্কুল ৩, মাদ্রাসা ৯, মক্তব ৩০। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: মিরপুর মাহমুদা চৌধুরী ডিগ্রি কলেজ (১৯৮৬), মিরপুর ডিগ্রি কলেজ (১৯৯৯), আমলাসদরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৮৯৯), মিরপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৩), পোড়াদহ হাইস্কুল (১৯২৭), মিরপুর সরকারি পাইলট বালিকা বিদ্যালয় (১৯৮৩)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী মাসিক: অরুণোদয়; সাময়িকী: প্রতিধ্বনি।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৬, মহিলা সংগঠন ৭, সিনেমা হল ১।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৬.৫৪%, অকৃষি শ্রমিক ২.৯০%, শিল্প ১.০৮%, ব্যবসা ১৩.২৩%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.৩৫%, চাকরি ৪.৭৫%, নির্মাণ ১.২৯%, ধর্মীয় সেবা ০.১৭%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৩৬% এবং অন্যান্য ৬.৩৩%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৩.৭৬%, ভূমিহীন ৪৬.২৪%। শহরে ৩৮.৬২% এবং গ্রামে ৫৫.৩৪% পরিবারের  কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, পাট, আখ, আলু, তামাক, সরিষা, পান, সূর্যমুখী ফুল।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তিসি, তিল।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, জাম, কলা, কাঁঠাল।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৩৫, গবাদিপশু ৯, হাঁস-মুরগি ৫, হ্যাচারি ৪।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১০৬.৭৯ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১১২.২ কিমি, কাঁচারাস্তা ৪৪২.৫৪ কিমি; রেলওয়ে ৩৫ কিমি; নৌপথ ১.০৭ নটিক্যাল মাইল।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরুর গাড়ি, ঘোড়ার গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা রাইসমিল, কটন মিল, সুগারমিল, বিড়ি কারখানা, ওয়েল্ডিং কারখানা।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, তাঁতশিল্প, বাঁশের কাজ, বেতের কাজ, কাঠের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ১২, মেলা ৩। মিরপুর পশুর হাট, খাদিমপুর হাট ও পোড়াদহ কাপড়ের হাট এবং হাজারহাটি গ্রামের বৈশাখী মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য   তামাক, পাট, পান।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচীর আওতাধীন। তবে ২৯.৫৫% পরিবারের  বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৪.০৪%, ট্যাপ ০.৪৮%, পুকুর ০.২১% এবং অন্যান্য ৫.২৭%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৩৪.১২% (গ্রামে ৩২.২০% ও শহরে ৫২.৫০%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩৬.৪১% (গ্রামে ৩৬.৬১% ও শহরে ৩৪.৪৩%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। তবে ২৯.৪৭% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, ক্লিনিক ১৩, পরিবার পরিকল্পনা কল্যাণ কেন্দ্র ১০।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৮২৩, ১৮৩৭, ১৮৫৯, ১৮৬৪, ১৮৬৭, ১৮৭১, ১৮৮৭, ১৯০০, ১৯৩০, ১৯৩৮, ১৯৪৮, ১৯৫৪, ১৯৬১ ও ১৯৭১ সালের বন্যা, ঘুর্ণিঝড় ও সাইক্লোনে এ উপজেলার বহু লোকের প্রাণহানী ঘটে এবং ঘরবাড়ি ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষে বহু লোকের প্রাণহানি ঘটে।

এনজিও ব্র্যাক, আশা, বিআরডিবি, স্বনির্ভর বাংলাদেশ, সেতু, জাগরণ।  [আরিফ নিশির]

তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; মিরপুর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।