মাহমুদ খান মসজিদ

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২২:৪৩, ৪ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Added Ennglish article link)
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

মাহমুদ খান মসজিদ  চট্টগ্রাম শহরের পাহাড়তলী এলাকার জোলাপাড়ায় একটি ঢিবির শীর্ষে অবস্থিত। স্থানীয় জনসাধারণ মসজিদটিতে অনেকবার সংস্কার এবং সম্প্রসারণ করায় বর্তমানে এর আদি বৈশিষ্ট্য অনেকটাই হারিয়ে গেছে।

বাইরের দিকের চারকোণে চারটি অষ্টভুজাকার বুরুজসহ ইট দিয়ে তৈরী এ মসজিদের পরিকল্পনা আয়তাকার। ভেতরের দিকে এর পরিমাপ ৭.৪৭ মি × ৪.১৯ মি। পার্শ্ববুরুজগুলি ছাদের অনুভূমিক বপ্র (Parapet) ছাড়িয়ে উপরে উঠে গেছে এবং এর শীর্ষে রয়েছে কলস নকশার শীর্ষচূড়া শোভিত ক্ষুদ্র গম্বুজ (Cupola)। মসজিদে প্রবেশের জন্য রয়েছে খিলানযুক্ত প্রবেশপথ-পূর্ব দিকে তিনটি এবং উত্তর ও দক্ষিণে একটি করে। এ প্রবেশ পথগুলিতে রয়েছে দুটি করে খিলান। এর মধ্যে বাইরের খিলানটি ভেতরেরটির তুলনায় উঁচু এবং প্রশস্ত। কিবলা দেওয়ালে রয়েছে তিনটি অবতল মিহরাব। কেন্দ্রীয় মিহরাবটি অর্ধ অষ্টভুজাকৃতির এবং দুপাশের দুটি আয়তাকার। প্রচলিত রীতি অনুযায়ী কেন্দ্রীয় প্রবেশপথ এবং কেন্দ্রীয় মিহরাব অপেক্ষাকৃত প্রশস্ত এবং দেওয়াল থেকে বহির্গত আয়তাকার প্রক্ষেপণের মধ্যে স্থাপিত। এ প্রক্ষেপণের দুপ্রান্তে রয়েছে সরু অষ্টভুজাকৃতির ছোট মিনার (Turret)। মিনারগুলি বপ্র ছাড়িয়ে উপরে উঠে গেছে এবং এগুলির শীর্ষে রয়েছে কলস নকশা শোভিত শীর্ষচূড়াযুক্ত ক্ষুদ্রাকৃতির গম্বুজ। অভ্যন্তর ভাগের তিনটি ‘বে ’ এর মধ্যে কেন্দ্রীয় ‘বে’টি বর্গাকৃতির এবং এর উপরে রয়েছে একটি বড় গম্বুজ। আয়তাকার অন্য ‘বে’গুলিতে আচ্ছাদন হিসেবে ব্যবহূত হয়েছে অর্ধগম্বুজ আকৃতির ভল্ট। কিন্তু বাইরের দিকে অর্ধগম্বুজগুলির উপরে রয়েছে একটি করে মেকি গম্বুজ। দুপাশের এ দুটি অর্ধগম্বুজ ভল্ট এবং কেন্দ্রীয় প্রবেশপথ ও কেন্দ্রীয় মিহরাবের উপরের বদ্ধ খিলান কেন্দ্রীয় গম্বুজটির ভার বহন করছে। বাইরে থেকে মসজিদটিকে তিনটি গম্বুজে আচ্ছাদিত বলে মনে হয়, যার কেন্দ্রীয় গম্বুজটি অন্য দুটির তুলনায় বড়। তিনটি গম্বুজের প্রতিটি একটি করে অষ্টভুজ পিপার (Drum) উপর স্থাপিত এবং এগুলির শীর্ষে রয়েছে পদ্ম-কলস নকশার শীর্ষ চূড়া।

বপ্র এবং পিপার গায়ে রয়েছে একটি বদ্ধ পদ্ম-পাপড়ি নকশার সারি। গম্বুজের ভেতরের দিকের শীর্ষে রয়েছে স্তরীভূত গোলাপ নকশা। দেওয়ালের ভেতরের এবং বাইরের অংশ পলেস্তারা আচ্ছাদিত এবং রয়েছে হালকা চুনের প্রলেপ।

কেন্দ্রীয় প্রবেশ পথের উপরে স্থাপিত শিলালিপি অনুসারে জানা যায়, জনৈক মাহমুদ খান মসজিদটি নির্মাণ করেন। দুর্ভাগ্যবশত এর নির্মাণ কালটি শিলালিপি থেকে মুছে গেছে। স্থানীয় জনশ্রুতি অনুসারে চট্টগ্রামের মুগল শাসক মুজাফফর খান-এর অধীনস্থ দীউয়ান মাহমুদ খান কর্তৃক ১৬৮৮ খ্রিস্টাব্দে মসজিদটি নির্মিত হয়। এ জনশ্রুতি সত্যও হতে পারে, কারণ এ মসজিদের পরিকল্পনা এবং নির্মাণ শৈলী নিকটবর্তী হামযা খান মসজিদের (নির্মাণকাল ১৬৮২ খ্রি.) অনুরূপ বলে মনে হয়।  [এম.এ বারি]