মহাস্থবির, আর্যবংশ

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২২:৪০, ৪ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Added Ennglish article link)
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

মহাস্থবির, আর্যবংশ (১৯১৫-১৯৯৪)  বৌদ্ধ পন্ডিত ও সমাজসেবক। ১৯১৫ সালের ২২ অক্টোবর  চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া উপজেলার লাখেরা গ্রামে তাঁর জন্ম। ১৯৩১ সালে তিনি স্থানীয় লাখেরা অভয় বিহারের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ প্রজ্ঞালঙ্কার মহাস্থবিরের নিকট  প্রব্রজ্যা (শ্রামণ্য) ধর্মে দীক্ষিত হন। ১৯৩৩ সালে শ্রীলঙ্কা গিয়ে তিনি ওরিয়েন্টাল মহাবিদ্যালয়ে সুদীর্ঘ নয় বছর অধ্যয়ন শেষে  পালি সাহিত্য ও  ত্রিপিটক শাস্ত্রে পান্ডিত্য অর্জন করেন। সিংহলী ভাষা ও সাহিত্যেও তিনি যথেষ্ট ব্যুৎপত্তি অর্জন করেন। সেখানে তিনি  উপসম্পদা (ভিক্ষুব্রত) গ্রহণ এবং ‘শ্রীসদ্ধর্মাচার্য’ উপাধি লাভ করেন। ১৯৪১ সালে দেশে ফিরে আর্যবংশ লাখেরা অভয় বিহারের অধ্যক্ষ হন এবং বঙ্গীয় শিক্ষাপর্ষদের অধীনে পালি বিনয়, সুত্ত ও অভিধর্ম বিষয়ে ‘বিশারদ’ উপাধি লাভ করেন।

পালি শিক্ষার প্রসারের লক্ষ্যে আর্যবংশ স্বগ্রামে পালিটোল এবং স্বগ্রামবাসীদের ধর্মীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে লাখেরা অভয় বিহারে সুবৃহৎ ও মনোরম বুদ্ধমূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ১৯৪৯ সালে ভারতীয় মহাবোধি সোসাইটির আমন্ত্রণে সোসাইটির প্রধান কার্যালয় সংলগ্ন অনাথ আশ্রম পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ১৯৫০ সালে তিনি দিল্লিস্থ মহাবোধি সোসাইটি পরিচালিত বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ নিযুক্ত হয়ে আমৃত্যু এ পদে আসীন ছিলেন। তাঁরই উদ্যোগে বি.আর আম্বেদকর ১৯৫৬ সালে নাগপুরে বুদ্ধজয়ন্তী অনুষ্ঠানে পঞ্চাশ হাজারের অধিক অনুসারীসহ  বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করেন। একই বছর তিনি দিল্লি, আগ্রা, আলীগড় ও বিহার প্রদেশের হাজার হাজার আম্বেদকর অনুসারীকেও বৌদ্ধধর্মে দীক্ষিত করেন।

১৯৮৮ সালে আর্যবংশ মহাবোধি সোসাইটির সভাপতিপদে বৃত হন এবং আমৃত্যু এ পদে অধিষ্ঠিত থাকেন। তিনি বহু গ্রন্থ প্রণয়ন ও অনুবাদ করেন। ইংরেজিতে রচিত Gems of the Dhamma, Teachings of the Buddha, Buddhism and World Peace (৪ খন্ড) তাঁর মৌলিক রচনা। পালি ছন্দ ও অলঙ্কারবিষয়ক একমাত্র গ্রন্থ সুবোধালঙ্কার তিনিই অনুবাদ করেন। এ ছাড়া তিনি বাংলায় সরল বৌদ্ধ বন্দনাবিধি, বুদ্ধানুশাসন ও ত্রিরত্ন বন্দনা এবং হিন্দিতে তথাগতকা উপদেশ রচনা করেন। ১৯৯৪ সালের ২ অক্টোবর নতুন দিল্লিতে তাঁর মৃত্যু হয়।  [ভিক্ষু সুনীথানন্দ]