মধু

Mukbil (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ০৮:৫১, ২ মার্চ ২০১৫ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

মধু  মৌমাছি কর্তৃক ফুলের মিষ্টি নির্যাস থেকে সংগৃহীত মৌচাকে সঞ্চিত এক প্রকার তরল আঠালো এক খাদ্যসামগ্রী। উৎস হিসেবে ফুল ও উদ্ভিদের নাম অনুসারে এবং প্রক্রিয়াজাতকরণের ধরন অনুযায়ী মধু শ্রেণীবিভক্ত। মধুর রং, স্বাদ ও গন্ধ মৌমাছির সংগৃহীত মিষ্টরসের ধরনের উপর নির্ভরশীল। এর প্রধান রাসায়নিক উপাদান ফ্রুক্টোজ (levulose) এবং ডেক্সট্রোজ (glucose)। এছাড়া সুক্রোজ, প্রোটিন, পটাসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাঙ্গানিজ, সোডিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, লৌহ, অ্যালুমিনিয়াম, তামা, ক্লোরিন, গন্ধক এবং ভিটামিন ‘এ’, ‘বি’, ‘সি’, ‘কে’ ও ‘ই’ এতে উপস্থিত থাকে। ক্যালরিক মান প্রায় ৩,০৪০ ক্যালরি/কিলোগ্রাম। মধু বহুল ব্যবহূত খাদ্য ও ঔষধ।

মধু আহরণকারী মৌমাছি ও মৌচাক

বাংলাদেশে প্রধানত Apis dorsata ও A. cerana indica প্রজাতি দুটি থেকে মধু সংগৃহীত হয়। প্রথমটি পোষ মানে না, কিন্তু বাংলাদেশের বেশির ভাগ মধু উৎপাদন করে। আর দ্বিতীয়টি পোষ মানে। ঘরে ও বনে মৌচাক বাঁধে। মৌমাছিপালন খুলনা, যশোর, বগুড়া, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, ঢাকা ও চট্টগ্রামে ক্রমে জনপ্রিয় হচ্ছে। প্রায় ৫০ প্রজাতির মধুদায়ী উদ্ভিদ শনাক্ত করা গেছে।

সুন্দরবন প্রধান মধু উৎপাদন এলাকা। এখান থেকে আসে দেশের মোট উৎপন্নের শতকরা প্রায় ২০ ভাগ। এই মধু প্রধানত গরান বা গোলপাতা গাছের ফুল থেকে সংগৃহীত হয়।

সুন্দরবনের আরেক মধু খালশি জাতের। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ মধু পাওয়া যায় সরিষা, আম এবং কুল গাছের ফুল থেকে। বুনো ও গৃহজাত অন্য মধু হলো নারিকেল, পিঁয়াজ ও লিচু জাতের। ডিসেম্বর-জুন মৌমাছির মধু সংগ্রহের মৌসুম, তবে ফেব্রুয়ারি-এপ্রিলে সবচেয়ে বেশি। ১৯৯৫-৯৬ সালে দেশে বনজাত মধুর পরিমাণ ছিল প্রায় ১০৯ মে টন। বিশ্বে মোট উৎপাদন প্রায় ১৫ লক্ষ মে টন। চীন প্রধান উৎপাদক (প্রায় ২৫%) এবং জার্মানি প্রধান ভোক্তা (জনপ্রতি ১.৮ কেজি)। ভারতে মাথাপিছু মধুপানের মাত্রা প্রায় ৯ গ্রাম, বাংলাদেশে ২ গ্রাম।  [মোস্তফা কামাল পাশা]