ভাটিয়ালি

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২২:৩৫, ৪ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Added Ennglish article link)
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

ভাটিয়ালি  এক ধারার  লোকগীতি। এর প্রধান বৈশিষ্ট্য সুরের দীর্ঘ টান ও লয়। প্রচলিত মতে মাঝিমাল্লাদের গান থেকে ভাটিয়ালি সুরের উৎপত্তি। নিকট অতীতে নদীবিধৌত বাংলাদেশে সাধারণত নদীর ভাটির স্রোতে নৌকা বাইতে মাঝিদের তেমন বেগ পেতে হতো না। তাই সেই অবসর ও আনন্দে তারা লম্বা টানে গলা ছেড়ে গান গাইত। কালক্রমে এই গানই ভাটিয়ালি গান নামে পরিচিতি লাভ করে। বাংলাদেশের ময়মনসিংহ ও সিলেট জেলায় এই গান বিশেষভাবে প্রচলিত।

ভাটিয়ালি একক সঙ্গীত। প্রেম ও ঈশ্বর এর প্রধান বিষয়। এতে একদিকে লৌকিক প্রেমচেতনা, অন্যদিকে আধ্যাত্মিক চেতনা প্রতিফলিত হয়। বিষয় ও অবস্থাভেদে এর অনেক শ্রেণীভেদ আছে। এক সময় বাংলাদেশে ভাটিয়ালি গানের পাঁচটি ধাঁচ প্রচলিত ছিল। তবে এই ধাঁচগুলির কয়েকটি বর্তমানে চর্চা হয় না। সচরাচর  মুর্শিদি ও বিচ্ছেদী নামে পরিচিত দুধরণের গানই ভাটিয়ালির অন্তর্গত। বাংলা লোকনাট্যে, বিশেষত গাজীর গানে বহুস্থলে ভাটিয়ালির দুএকটি ধাঁচের সাক্ষাৎ মেলে।

অনেক ক্ষেত্রে গানের বিশেষ চরণের সুর নির্দেশক হিসেবে ‘ভাটিয়ালি’ শব্দটির প্রয়োগ লক্ষ করা যায়। সাধারণত পালা বা পাঁচালির বন্দনা অংশে প্রথম চরণ উজান ও দ্বিতীয় চরণ ভাইটাল বা ভাটিয়ালি নামে আখ্যাত হয়, যেমন: পুবেতে বন্দনা করলাম পুবের ভানুশ্বর। একদিকে উদয়রে ভানু চৌদিকে পশর\

বাংলা লোকসঙ্গীতের বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক আঞ্চলিক গানে ভাটিয়ালি সুরের প্রয়োগ আছে। প্রাচীন বাংলায় ভাটিয়ালি রাগের প্রচলন ছিল।  সেখশুভোদয়া গ্রন্থে বিধৃত ভাদু গান ভাটিয়াল রাগে গায়। শ্রীকৃষ্ণকীর্তনেও ভাটিয়ালি গানের উল্লেখ পাওয়া যায়।  [সমবারু চন্দ্র মহন্ত]