বালি

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২২:২৮, ৪ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Added Ennglish article link)
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

বালি  (Sand)  কোয়ার্টজ দানা (বালি দানা) দ্বারা তৈরি আলগা বস্ত্ত, যেমন বেলাভূমি বা বালিয়াড়ি। বালি দানাগুলো মূলত সিলিকাময়, তবে কখনো কখনো চুনময়, জিপসাম সমৃদ্ধ বা উৎপত্তিগত দিক থেকে আগ্নেয়গিরিক। বালিকণাগুলো মূলত কোয়ার্টজ, কেলাসিত শিলার বিচূর্ণন দ্বারা বা কেলাসিত শিলা থেকে উদ্ভূত হওয়ার কারণে এদের আকারের পরিসর ০.০৫ থেকে ২.০০ মিলিমিটার। শিলার বিচূর্ণনের পরে বালিকণাগুলো প্রধানত পানি, হিমবাহ বা বায়ু দ্বারা পরিবাহিত হয়। বিভিন্ন প্রকার মৃত্তিকাতে বালিকণার পরিমাণ ভিন্ন হয়ে থাকে। স্থূল বালিকণাতে সর্বাধিক পরিমাণে সিলিকা থাকে কিন্তু মিহি বালিকণাতে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস বিদ্যমান। মৃত্তিকা কণার শ্রেণিবিন্যাসে USDA সিস্টেম অনুসারে অতি স্থূল, স্থুল, মধ্যম, মিহি ও অতিমিহি বালিকণার পরিসর যাক্রমে ১.০০ থেকে ২.০০, ০.১০ থেকে ০.৫০, ০.২৫ থেকে ০.৫০, ০.১০ থেকে ০.২৫ এবং ০.০৫ থেকে ০.১০ মিলিমিটার। কিন্তু মৃত্তিকা কণার আন্তর্জাতিক শ্রেণিবিন্যাসে বালিকণাকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে, যথা- স্থূল (০.২০ থেকে ২.০০ মিলিমিটার) এবং মিহি (০.০২ থেকে ০.২০ মিলিমিটার) বালিকণা। স্থূল বালিকণা মৃত্তিকার গাঠনিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এসব কণা মৃত্তিকাতে পানি ও বায়ুর প্রবেশ্যতাকে প্রভাবিত করে। যেহেতু বালিকণা তুলনামূলকভাবে অবিয়োজিত প্রাথমিক মণিক দ্বারা গঠিত, সেহেতু পুষ্টি উপাদান সরবরাহে এদের গুরুত্ব অনেক কম এবং তাৎপর্যহীন, অধিকন্তু, অধিক পরিমাণে বালিকণার উপস্থিতি সাধারণত মৃত্তিকার আঠালোভাব ও নমনীয়তাকে হ্রাস করে এবং মৃত্তিকাকে ভঙ্গুর ও নরম করে। কৃষি কাজে বেলে মৃত্তিকাকে সহজেই কর্ষণ করা সম্ভব হয়।

বাংলাদেশ বালি ও পলি অবক্ষেপের দিক থেকে মোটামুটি সমৃদ্ধ। যদিও বাংলাদেশের সব মৃত্তিকাতেই বালিকণা বিদ্যমান তবুও  পুরাতন হিমালয় সানুদেশীয় সমতলভূমি মৃত্তিকার অন্তঃস্তর, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র পললভূমির কোন কোন অংশ এবং গঙ্গানদীর পশ্চিম পললভূমিতে ব্যাপক আকারে বালির অবক্ষেপ দেখা যায়। ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর চর এলাকাতেও বালি পাওয়া যায়। এসব বালি উন্নতমানের এবং প্লাস্টার ও পূর্ণকারক বস্ত্ত হিসেবে ব্যবহূত হয়। প্রতি বছর বর্ষাকালে এসব এলাকায় নতুন বালির অবক্ষেপ সঞ্চিত হয়। নদী থেকে এসব বালি উত্তোলন করার ফলে নদীর খাত পানি প্রবাহের জন্য সুগম হয়। অধিকন্তু, এ কাজের জন্য স্থানীয় জনগণের কাজের সুযোগ সৃষ্টি করে। ফলে সরকারের রাজস্ব আয়ও বৃদ্ধি পায়। কিন্তু মেঘনা ও কর্ণফুলি নদীর কোন কোন অংশ সাগরের জোয়ার দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার কারণে বালি ও পলিগুলো সামান্য লবণাক্ত হয়ে পড়ে। ফলে এসব এলাকার বালি নিম্নমানের।  [রামেশ্বর মন্ডল]