বাকেরগঞ্জ উপজেলা

Mukbil (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ০৫:৪৯, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

বাকেরগঞ্জ উপজেলা (বরিশাল জেলা)  আয়তন: ৪১.৯৯ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°২৭´ থেকে ২২°৪০´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°১২´ থেকে ৯০°৩৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে নলছিটি ও বরিশাল সদর উপজেলা, দক্ষিণে মির্জাগঞ্জ, দুমকি এবং বাউফল উপজেলা, পূর্বে বাউফল ও ভোলা সদর উপজেলা, পশ্চিমে নলছিটি, বেতাগী ও রাজাপুর উপজেলা।

জনসংখ্যা ৩৫৩৯০৯; পুরুষ ১৭৪০৭৬, মহিলা ১৭৯৮৩৩। মুসলিম ৩১৬৪৪৪, হিন্দু ৩৬২৭৫, বৌদ্ধ ১১২২, খ্রিস্টান ১৪ এবং অন্যান্য ৫৪।

জলাশয় প্রধান নদী: তেঁতুলিয়া, বরিশাল, খাইরাবাদ, পান্ডো, চর আমাদ্দি, বিশখালী, রাঙ্গামাটিয়া, করখানা।

প্রশাসন বাকেরগঞ্জ থানা গঠিত হয় ১৮৭৪ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
১৪ ১৫১ ১৯০ ১৯৭৪৮ ৩৩৪১৬১ ৮৫৭ ৬৬.৬ ৫৮.৯
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৬.২২ ০৯ ১৭ ১৫১৭৬ ২৪৪০ ৬৭.৯৬
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৭.৭৯ ৪৫৭২ ৫৮৭ ৬২.৩২
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
কলসকাঠি ৬৭ ৬০৮৭ ১২৯৪৯ ১৩১৭১ ৬৫.২৭
কাবাই ৬১ ৭৩৯৮ ১১৯৬৭ ১২২৭৭ ৫৫.৫৩
গারুরিয়া ৫৪ ৮১৬৬ ১৩৭২৬ ১৪৭৮৪ ৫৯.৮৯
চরাদি ১৩ ৭০৬৯ ১০৩৮৩ ১০৮২৩ ৫৭.৮৫
চর আমাদ্দি ২০ ৬১০৭ ৯৭৯২ ১০০৮৯ ৫৩.৩৫
দরিয়াল ২৭ ৯০৪৮ ১৪৬২৪ ১৪৮৯৫ ৫৩.৮২
দুধাল ৩৩ ৭৭৭৯ ১২৭৯৫ ১৩৫০১ ৬১.১৮
দুর্গাপাশা ৪০ ৫৮৬৪ ৭৭৩৬ ৭৭৫৩ ৫৫.৯৫
নলুয়া ৭৪ ৩৮০৬ ৬৫৬২ ৬৯৬৪ ৬০.৮৯
নিয়ামতি ৮১ ৭৩৯৩ ১৪৮৬৭ ১৪৮৬৯ ৬০.৬৩
প্রাদী শিবপুর ৮৮ ৭৫১২ ১৩৬৩৮ ১৪৫২৬ ৫৮.২০
ফরিদপুর ৪৭ ৫৭৬৩ ৯১৭৯ ৯৪৪২ ৫৫.৫০
বঙ্গশ্রী ৯৪ ১০০৩৬ ১৭৯০২ ১৮৩২৭ ৬০.৫৫
ভরপাশা ১২ ৬৬৮৫ ১০২৩৩ ১০৯৫৯ ৬৩.২৫

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ মেহেন্দিগঞ্জ জামে মসজিদ (মুগল আমলে নির্মিত), জগদ্বাত্রী পূজা মন্দির (দশম শতাব্দী), গান্ধী আশ্রম, রাম কৃষ্ণ আশ্রম।

মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি মুক্তিযুদ্ধের সময় এ উপজেলার কলসকাঠি বাজারে পাকবাহিনী ১৮১ জন মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করে। এছাড়াও এ এলাকায় ব্যাপক লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও গণহত্যা সংঘটিত হয়।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন ভাস্কর্য ১।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৮৬৯, মন্দির ১২১, গির্জা ১, মাযার ২। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: বাকেরগঞ্জ বন্দর জামে মসজিদ, শিয়ালঘুনির মসজিদ, মেহেন্দীগঞ্জ জামে মসজিদ, নসরত গাজীর মসজিদ, নিয়ামতি বিবি চিনির মসজিদ, গোবিন্দপুর হরিরাম সংকীর্তন মন্দির, রামকৃষ্ণ মিশন ও পাদ্রী শিবপুরের খ্রিস্টানদের গির্জা, বার আউলিয়ার মাযার, বার আউলিয়ার দরগা।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫৯.৩%; পুরুষ ৬১.৬%, মহিলা ৫৭.১%। কলেজ ৭, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৬৬, প্রাথমিক বিদ্যালয় ২৩৪, মাদ্রাসা ৭২। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: বাদলপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ (১৯২৪), বাকেরগঞ্জ জেএসইউ হাইস্কুল (১৯০৯), চর আমাদ্দি ডব্লিউকে মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯২৪), কামারখালী কেএসইউ মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯২৬), ডিজিএল মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯২৭), কাকধরা এ.কে.এম ইনস্টিটিউশন (১৯২৩), দুধাল ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা (১৯২১)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী সপ্তাকাশ, দর্পণ।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৭,  ক্লাব ৬০, মহিলা সংগঠন ৫, নাট্যদল ৪, সিনেমা হল ৩, খেলার মাঠ ৩২।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৪২%, অকৃষি শ্রমিক ৫.৭৬%, শিল্প ১.০৪%, ব্যবসা ১৭.৬৫%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.৬৭%, চাকরি ১৫.২৪%, নির্মাণ ২.২৭%, ধর্মীয় সেবা ০.২৪%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ২.৬৫% এবং অন্যান্য ১১.৪৮%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬৯.৬৩%, ভূমিহীন ৩০.৩৭%। শহরে ৫৭.৮% এবং গ্রামে ৭০.২৯% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, পাট, সরিষা, আলু, পান।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি ডাল, কাউন, তিসি, অড়হর।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, কলা, লিচু, জাম, সুপারি, পেঁপে, নারিকেল।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৪৮৭, হাঁস-মুরগি ২০, গবাদিপশু ২০, হ্যাচারি ৩।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ২৬ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৬৯ কিমি, কাঁচারাস্তা ৭০০ কিমি; নদীপথ ৬৯ নটিক্যাল মাইল।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি।

শিল্প ও কলকারখানা ফ্লাওয়ার মিল ১, স’মিল ৫০, রাইসমিল ৭৫, আইস ফ্যাক্টরি ২, ওয়েল্ডিং কারখানা ১২, ইটভাটা ২৮।

কুটিরশিল্প লৌহশিল্প ৭২, তাঁতশিল্প ১৫, মৃৎশিল্প ৯৭, বাঁশের কাজ ১৭৬।

হাটবাজার ও মেলা কলসকাঠি হাট, বোয়ালিয়া হাট, কালীগঞ্জ হাট, কামারখালি হাট, নিয়ামতি হাট ও চামটা হাট এবং রথের মেলা, রামকৃষ্ণ মিশনের মেলা ও প্রাদ্রী শিবপুরের মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য   পান, কলা, সুপারি।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৪.৮৪% (শহরে ৪৬.৩৮% ও গ্রামে ২৩.৬৩%) পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯০.১৩%, পুকুর ৭.৭৫% এবং অন্যান্য ২.০৭%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৪৩.৪১% (গ্রামে ৪১.৯৮% এবং শহরে ৬৮.৮৮%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৫১.১৭% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৫.৪২% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র হাসপাতাল ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৭, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৭।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৯০৬ সালে পামড়ি পোকার আক্রমণে ফসল নষ্ট হয়ে সৃষ্ট দুর্ভিক্ষ।

এনজিও কেয়ার, ব্র্যাক, কারিতাস, আশা,  প্রশিকা।  [মো. মিজানুর রহমান]

তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; বাকেরগঞ্জ উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।