বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো-বিবিএস

Mukbil (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ০৭:১০, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো-বিবিএস (Bangladesh Bureau of Statistics-BBS)  সরকারি পরিসংখ্যানের প্রধান উৎস। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের এই বিভাগ সকল প্রকার পরিসংখ্যানগত উপাত্ত সংগ্রহ, প্রক্রিয়াজাতকরণ, সংরক্ষণ এবং প্রকাশনার দায়িত্বপ্রাপ্ত। দেশের পরিসংখ্যান ব্যবস্থার অধিকাংশই বিবিএস কেন্দ্রিক। সরকারিভাবে ১৯৭৪ সালের আগস্ট মাসে এই বিভাগ সৃষ্টি করা হয়। ১৯৭৫ সালের জু্লাই মাসে একটি পৃথক পরিসংখ্যান বিভাগও প্রতিষ্ঠা করা হয়। একজন সচিব পরিসংখ্যান বিভাগের প্রধান হিসেবে এবং পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে থাকেন। মহাপরিচালককে একজন সহকারী মহাপরিচালক সহায়তা প্রদান করেন। নীতিগত বিষয়াদিতে বিবিএস পরিসংখ্যান বিভাগের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণাধীন।

বিবিএস-এর প্রধান কাজ দেশের উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ, গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা, নীতি নির্ধারণ প্রভৃতির জন্য অর্থনৈতিক খাতসমূহের উপাত্ত সংগ্রহ, সম্পাদনা, বিশ্লেষণ ও প্রকাশ করা এবং সকল প্রকার পরিসংখ্যান কর্মসূচি, যেমন- আদমশুমারি, কৃষিশুমারি, শিল্প কারখানা শুমারি, স্থাপনা শুমারি পরিচালনা করা। শ্রমশক্তি, জনসংখ্যাতাত্ত্বিক অবস্থা, কৃষি, পারিবারিক আয়-ব্যয় প্রভৃতি ক্ষেত্রে জাতীয় পর্যায়ের জরিপ কার্য পরিচালনা প্রভৃতির জন্যও ব্যুরো দায়িত্বপ্রাপ্ত।

সাতটি ক্রিয়ামূলক শাখার সমন্বয়ে বিবিএস গঠিত: ১) জনসংখ্যা, জনসংখ্যাতত্ত্ব (demography) এবং জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন ব্যবস্থা; ২) শিল্প, বাণিজ্য, মজুর পরিসংখ্যান ও জাতীয় আয়; ৩) কৃষি পরিসংখ্যান; ৪) শিল্প পরিসংখ্যান; ৫) গবেষণা, প্রশিক্ষণ ও নমুনা জরিপ; ৬) কম্পিউটার, উপাত্ত প্রক্রিয়াজাতকরণ ও পরিসংখ্যান মানচিত্র অঙ্কন এবং ৭) দলিল-পত্র সংরক্ষণ, প্রকাশনা ও প্রতিলিপি তৈরি।

উল্লিখিত শাখাসমূহের প্রতিটি একজন পরিচালক এবং অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়ে গঠিত। ব্যুরোর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যসমূহ অর্জনের জন্য দেশের প্রতিটি সাবেক জেলা সদর এবং প্রতিটি থানা বা উপজেলা সদরে বিবিএস-এর পরিসংখ্যান অফিস খোলা হয়েছে। জেলা পরিসংখ্যান কার্যালয়ের প্রধান আঞ্চলিক পরিসংখ্যান কর্মকর্তা, যিনি তাঁর আওতাধীন থানা বা উপজেলা পরিসংখ্যান কার্যালয়ে মাঠ পর্যায়ের কর্মকান্ড সমন্বয় সাধন এবং তত্ত্বাবধান করে থাকেন। এছাড়া তিনি বিভিন্ন নমুনা জরিপ পরিচালনা করেন। বর্তমানে সারাদেশে ২৩টি জেলা পরিসংখ্যান কার্যালয় এবং ৪৬০টি থানা বা উপজেলা পরিসংখ্যান কার্যালয় রয়েছে। থানা বা উপজেলা পরিসংখ্যান কার্যালয়ের প্রধান হচ্ছেন থানা বা উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা। মাঠ পর্যায়ের সকল প্রকার পরিসংখ্যান উপাত্ত সংগ্রহ, মাঠ পর্যায়ে আদমশুমারি ও জরিপকার্য পরিচালনা প্রভৃতি কর্মকান্ড থানা বা উপজেলা পরিসংখ্যান কার্যালয় থেকে পরিচালনা করা হয়ে থাকে।

বিবিএস নিয়মিত মাসিক বুলেটিন, যেমন - বাংলাদেশের পরিসংখ্যান বুলেটিন (Statistical Bulletin of Bangladesh), বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সূচক (Economic Indicator of Bangladesh), বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি (Economic Situation of Bangladesh); বার্ষিক প্রকাশনা, যেমন - বাংলাদেশের পরিসংখ্যান বর্ষগ্রন্থ (Statistical Year Book of Bangladesh), বাংলাদেশের পরিসংখ্যান পকেটগ্রন্থ (Statistical Pocket Book of Bangladesh), বাংলাদেশের কৃষি বর্ষগ্রন্থ (Agricultural Year Book of Bangladesh), থানা/উপজেলা পরিসংখ্যান (Thana/Upazila Statistics), বৈদেশিক বাণিজ্য পরিসংখ্যান (Foreign Trade Statistics of Bangladesh) ইত্যাদি প্রকাশ করে থাকে। এছাড়া প্রতি দশ বছর অন্তর অন্তর বিবিএস আদমশুমারি বুলেটিন ও রিপোর্ট (Census Bulletins and Reports), আদমশুমারি জাতীয় ভলিউম (Population Census National Volumes), গ্রামীণ জনসংখ্যার জেলাওয়ারি শুমারি রিপোর্ট (Village Population Census for Districts), কৃষিশুমারি রিপোর্ট (Reports on the Agricultural Census of Bangladesh), শিল্প-কারখানা শুমারি রিপোর্ট (Census of Manufacturing Industries) প্রভৃতি প্রকাশ করে থাকে। বিবিএস ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে পরিচালিত বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি সম্পদ ও ওয়াই টু কে সমস্যা এলাকা চিহ্নিতকরণ জরিপ রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। এসকল রিপোর্ট ছাড়াও বিবিএস অনেক বিষয়ভিত্তিক প্রকাশনাও প্রকাশ করে থাকে। [মণীন্দ্র কুমার রায়]