বড় জামালপুর মসজিদ

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২২:১৯, ৪ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Added Ennglish article link)
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

বড় জামালপুর মসজিদ গাইবান্ধা জেলার সাদুল্লাপুর থানার অন্তর্গত বড় জামালপুর গ্রামে অবস্থিত। পীরগঞ্জ থানা সদর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার পূর্বে ও সাদুল্লাপুর থানা সদর হতে ৬ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত মসজিদটি তিন গম্বুজবিশিষ্ট।

নিচু ভিত্তির উপর নির্মিত আয়তাকৃতির এ মসজিদের পরিমাপ ভেতরের দিকে উত্তর-দক্ষিণে ১১.৪০ মিটার ও পূর্ব-পশ্চিমে ৩ মিটার এবং বাইরের দিকে যথাক্রমে ১৩.৯০ মিটার ও ৫.৫০ মিটার। এর ফাসাদ দেওয়ালে তিনটি খিলানকৃত প্রবেশপথ আছে। সেগুলির মধ্যে মাঝেরটি পাশের দুটির চেয়ে সামান্য বড়। উত্তর ও দক্ষিণ দিকের দেয়ালে একটি করে জানালা আছে। এগুলি ইটের জালি দ্বারা বদ্ধ। মসজিদের কিবলা দেয়ালে মাঝের প্রবেশপথ বরাবর একটি মাত্র মিহরাব আছে। মসজিদের কোণাগুলিতে কোন স্তম্ভ নেই। ছাদপাঁচিলে আটটি মিনার আছে; চারটি সম্মুখভাগের ছাদপাঁচিলে এবং বাকিগুলি পেছনদিকের ছাদপাঁচিলে। এ মিনারগুলির মাথায় ছিল কলস ও পদ্মকলি চূড়াসহ ছোট ছোট গম্বুজ।

দুটি আড়াআড়ি খিলান মসজিদের অভ্যন্তরভাগকে তিনটি ‘বে’-তে বিভক্ত করেছে। এর প্রত্যেকটি অষ্টকোণাকৃতির পিপাসহ গম্বুজ দ্বারা আবৃত। মধ্যের ‘বে’-টি পাশের দুটির চেয়ে খানিকটা বড়। পিপাগুলির ভার দু’পাশের খিলানগুলির উপর সরাসরি ন্যস্ত। কোণগুলি মনোরম বাংলা পেন্ডেন্টিভে পূর্ণ। দ’ুদিকের দু’টি গম্বুজের চেয়েও মাঝের গম্বুজটি বড়। গম্বুজগুলি পূর্ণ বিকশিত পদ্মফুলের এবং কলস ও পদ্মকলি নকশায় অলংকৃত। পূর্বে মসজিদ এলাকাটি প্রাচীর বেষ্টিত ছিল, কিন্তু এখন প্রাচীর ধ্বসে গেছে, মাত্র কয়েক স্থানে তার চিহ্ন মেলে। সম্প্রতি মসজিদের সম্মুখভাবে একটি বারান্দা সংযোজিত হয়েছে।

এ মসজিদের নির্মাণ তারিখের কোন লেখ-প্রমাণ নেই। তবে স্থানীয় ঐতিহ্য অনুযায়ী হাজী জামালুদ্দীন, যিনি মসজিদ চত্বরের উত্তর দিকে সমাধিস্থ, এ মসজিদটি নির্মাণ করেন। কথিত আছে যে, তিনি স্থানীয় মুগল প্রশাসনের অধীনে রাজস্ব কর্মকর্তা ছিলেন। এ বর্ণনা অনেকটা সত্য বলেই মনে হয়, কারণ যে গ্রামে মসজিদটি অবস্থিত, সে গ্রামের নামও তাঁর নামানুসারে হয়েছে। প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত দরিয়াপুর মসজিদ এর সাথে এর শৈলী-সাদৃশ্য লক্ষ্য করে মসজিদের নির্মাণকাল আঠারো শতকের প্রথম দিক ধরা যায়। [সুলতান আহমদ]