ফুলবাড়ী উপজেলা (দিনাজপুর)

Mukbil (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ১০:৫৯, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

ফুলবাড়ী উপজেলা (দিনাজপুর জেলা)  আয়তন: ২২৯.৫৫ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৫°১৭´ থেকে ২৫°৩২´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৪৪´ থেকে ৮৯°০১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে পার্বতীপুর ও চিরিরবন্দর উপজেলা, দক্ষিণে বিরামপুর উপজেলা, পূর্বে নবাবগঞ্জ  উপজেলা (দিনাজপুর) ও বিরামপুর উপজেলা, পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য।

জনসংখ্যা ১৫১৯৩৯; পুরুষ ৭৮৮০৩, মহিলা ৭৩১৩৬। মুসলিম ১২৬০৪৪, হিন্দু ২০৮২৭, বৌদ্ধ ২৩৩৫, খ্রিস্টান ৬৩ এবং অন্যান্য ২৬৭০।

জলাশয় প্রধান নদী: ছোট যমুনা।

প্রশাসন ফুলবাড়ী থানা গঠিত হয় ১৮৫৭ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৪ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
১৫৮ ১৫১ ২৭৭৪৩ ১২৪১৯৬ ৬৬২ ৫৬.১ ৪৬.৪
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
১৬.০৫ ১৪ ২৭৭৪৩ ১৭২৮ ৫৬.১
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
আলাদীপুর ২৫ ৭৭৮০ ৮৯৬০ ৮১৬৩ ৪৭.৬৭
এলুয়ারী ৪৭ ৯৭৫৯ ১০৭৫০ ১০০০০ ৪৯.৫৭
কাজিহাল ৬৬ ৯১২৭ ৯৪৩৬ ৮৭১০ ৫১.১৫
খয়েরবাড়ী ৭৬ ৩৪৯০ ৪৫৮৪ ৪৪৮৬ ৪৬.৩১
বেতদীঘি ২৮ ৮৫০৪ ১০০৬২ ৯৬০০ ৪৪.৯৯
দৌলতপুর ৩৮ ৫০০২ ৬৪৯৮ ৬০৪৭ ৪৪.৪৪
শিবনগর ৮৪ ৯০৯৮ ১৪২০৩ ১২৬৯৭ ৪১.৯১

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ দামোদরপুর নগরী, গড় গোবিন্দ।

ঐতিহাসিক ঘটনাবলি ১৯৪৭ সালে এ উপজেলায় শামসুদ্দিন আহমদ ও রূপনারায়ণের নেতৃত্বে তেভাগা আন্দোলন সংঘটিত হয়। ১৯৭১ সালের ২৯ মার্চ দিনাজপুর রোডে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর লড়াইয়ে মুক্তিযোদ্ধারা পাকসেনাদের কয়েকটি গাড়ি, গোলাবারুদ, অস্ত্র-শস্ত্রসহ বহু রসদপত্র হস্তগত করে।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন গণকবর ও বধ্যভূমি ১ (বারই); স্মৃতিসৌধ ১ (সুজাপুর উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ)।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৮.২%; পুরুষ ৫২.১%, মহিলা ৪৪%। কলেজ ৬, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪৪, ভোকেশনাল কেন্দ্র ৮, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১০২, মাদ্রাসা ১৮। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: দৌলতপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১২), রামচন্দ্রপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৩), রাজারামপুর এসইউ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৩), রুদ্রানী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৫), সুজাপুর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৯), ফুলবাড়ী জিএম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২০), ফুলবাড়ী ডিএস ফাজিল মাদ্রাসা।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী সাপ্তাহিক: জনমত (অবলুপ্ত)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান  লাইব্রেরি ১, ক্লাব ৪১, যাত্রাদল ২, সিনেমা হল ৪।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৮.৮৩%, অকৃষি শ্রমিক ২.৯৮%, শিল্প ০.৯%, ব্যবসা ১২.৪১%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.৭৩%, চাকরি ৫.৫৫%, নির্মাণ ০.৬৫%, ধর্মীয় সেবা ০.২%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.১৭% এবং অন্যান্য ৪.৫৮%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫০.২৯%, ভূমিহীন ৪৯.৭১%। শহরে ৪৪.৪১% এবং গ্রামে ৫১.৫৩% পরিবারের  কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, পাট, আখ, আলু, ডাল, তৈলবীজ, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি আউশ ধান, ভাদুই ধান, পান, তামাক।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, কলা, কাঁঠাল।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার গবাদিপশু ১২৫, হাঁস-মুরগি ১০৫।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৭০ কিমি, কাঁচারাস্তা ৪৫০ কিমি; রেলপথ ১৬ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরুর গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা রাইসমিল, স’মিল, অয়েল মিল, আইস ফ্যাক্টরি, ছাপাখানা।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, মৃৎশিল্প, বাঁশের কাজ, কাঠের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৪৮, মেলা ৩। ফুলবাড়ী বাজার হাট, বারই হাট, আমবাড়ি হাট, আমডুঙ্গী হাট, আটপুকুর হাট, মাদিলা হাট এবং ফুলবাড়ী মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য   ধান, গম, কলা।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২২.৮৮% পরিবারের  বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

প্রাকৃতিক সম্পদ  এ উপজেলায় ১৯৯৭ সালে কয়লার খনি আবিস্কৃত হয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৪.৬৭%, পুকুর ০.২%, ট্যাপ ০.৫১% এবং অন্যান্য ৪.৬২%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ১৫.৭৭% (গ্রামে ১০.১২% এবং শহরে ৪২.৫৬%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ২০.০৪% (গ্রামে ১৯.৫৭% এবং শহরে ২২.২৩%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৬৪.১৯% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র হাসপাতাল ১, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য এবং পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৬, ক্লিনিক ২।

এনজিও ব্র্যাক, আশা, ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ। [রেজাউল করিম]

তথ্যসূত্র  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; ফুলবাড়ী উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।