পায়োরিয়া

Mukbil (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ১০:৫৪, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

পায়োরিয়া (Pyorrhea)  দাঁত ও মাড়ির একটি প্রদাহজনিত রোগ, যে রোগে দাঁতের গোড়ায় পুঁজ সৃষ্টি হতে পারে। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে রোগটি বেশি দেখা যায়। দাঁত মাড়ির সংযোগস্থলে থুথুর মিনারেল থেকে তৈরি টার্টার (Tartar) নামক পাথুরে পদার্থ ও খাদ্যের ভগ্নাংশ জমা হয়ে এ রোগের সূত্রপাত ঘটায়। মাড়ি ক্রমে সংকুচিত হয় এবং দাঁতের গোড়া অবমুক্ত হয়। পিছনে সরে যায় এবং এতে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঘটে। ব্যাকটেরিয়ার ক্রমবৃদ্ধি এবং বিষাক্ত ও প্রদাহকারক উপাদানসমূহের অবমুক্তির ফলে মাড়িতে প্রদাহ, ব্যথা ও রক্তপাতের সূচনা হয়। সহায়ক অস্থিকলা ধীরে ধীরে ক্ষয় হয়ে দাঁতকে নড়বড়ে করে এবং শেষ পর্যন্ত দাঁত পড়ে যায়। এই রোগের প্রধান কারণ দাঁতের কম যত্ন নেওয়া। যথাযথভাবে বিশেষ করে রাতে ঘুমানোর আগে দাঁত ব্রাশ করলে এবং দাঁতের ফাঁক থেকে নিয়মিত ময়লা পরিষ্কার করা হলে এ রোগ প্রতিরোধ করা যায়। দাঁতের সারিতে এলোমেলোভাবে দাঁত সজ্জিত থাকলে ময়লা জমা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে এবং এ ধরনের দাঁত পরিষ্কার রাখাও কঠিন কাজ।

বাংলাদেশের দরিদ্র আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিশাল জনসংখ্যার বেশিরভাগকে দাঁতের ব্রাশ ও দাঁত মাজা পেস্ট ব্যবহার থেকে বঞ্চিত করে। এসবের পরিবর্তে তারা আঙুলের ডগায় ছাই নিয়ে দাঁত ঘষে, ফলে তা দাঁতের এনামেল এবং মাড়ি উভয়েরই ক্ষতিসাধন করে। গাছের ছোট ডালের এক প্রান্ত দাঁত দিয়ে চেঁছে বুরুশের মতো করেও অনেকে দাঁত পরিষ্কার করে। বিশেষ করে নিমের ছোট ডাল এক্ষেত্রে জনপ্রিয়। ধার্মিক লোকেরা দাঁতের উত্তম স্বাস্থ্যের লক্ষ্যে এই কৌশল দীর্ঘকাল থেকে চালিয়ে আসছেন। নিমের ভেষজ গুরুত্ব সম্পর্কে যেসব বৈজ্ঞানিক তথ্য এখন জানা যাচ্ছে তাতে গ্রামাঞ্চলের জনসাধারণের ঐতিহ্যিক বিজ্ঞতার প্রতি মানুষের আস্থা আরও বেড়েছে। [জিয়া উদ্দিন আহমেদ]