পলি

Mukbil (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ০৬:১২, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

পলি (Sediment)  কঠিন, বিচূর্ণীত পদার্থ যা শিলার বিচূর্ণীভবনের (Weathering) ফলে উৎপন্ন হয়। বিচূর্ণীত অবক্ষেপ নদী অথবা বায়ু দ্বারা পরিবাহিত ও সঞ্চিত হয়ে থাকে, অথবা অন্যান্য প্রাকৃতিক বাহক, যেমন জৈব ক্ষরণ অথবা জৈব দ্রবন হতে উৎপন্ন রাসায়নিক বারিপাত দ্বারা পুঞ্জীভূত হয় এবং সাধারণ তাপমাত্রায় ভূ-পৃষ্ঠের কোন লোয়েস ভূমি অথবা পললভূমিতে স্তরে স্তরে সজ্জিত হয়। আদর্শ পলিসমূহ হচ্ছেঃ (সূক্ষ্ম হতে মোটার দিকে বিবেচনা করলে) কর্দম (Clay), কাদা (Mud), পলিকণা (Silt), বালুকা (Sand), কঙ্কর (Gravel), নুড়ি (Pebble), কোবল (Cobble) এবং বোল্ডার (Boulder)। পরিবেশ ব্যবস্থাপনার দৃষ্টিকোণ হতে নদীজ পলির চলাচল নদীখাত (Channel) ব্যবস্থাপনা, নদী এবং সেচখাল পরিচর্যা, জলাধার এবং পোতাশ্রয়ে পলিভরাট, অবক্ষেপ সঞ্চয়ন এবং প্লাবনভূমি বৃদ্ধি প্রভৃতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নদীকর্তৃক পলিবোঝা হিসেবে পরিবাহিত বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের বস্ত্তর আকৃতি ০.৫ মাইক্রো মি এর চেয়েও কম ব্যাসার্ধের সূক্ষ্ম কর্দম কণা এবং আঠালো কণা (Colloidal particles) হতে প্রবল বন্যার সময় বাহিত বৃহদাকৃতির প্রস্তরখন্ড বা বোল্ডার পর্যন্ত হয়ে থাকে। উজান প্রবাহ হতে ভাটি প্রবাহে নদীর পলিজ ভার নদী কর্তৃক নদী তলদেশের ভার (Bed load) এবং ঝুলন্ত ভার হিসেবে বাহিত হতে পারে। নদী তলদেশের ভার প্রধানত জৈব পদার্থ দ্বারা গঠিত হয়ে থাকে। নদীর ঝুলন্ত ভারে সাধারণত ০.০২ মিমি এর চেয়েও ক্ষুদ্র ব্যাসার্ধের কণা বিদ্যমান থাকে এবং কণার আকৃতির বৈশিষ্ট্যসমূহ ব্যাপকভাবে উৎস পদার্থের প্রকৃতি দ্বারা নির্ণীত হয়ে থাকে।

পদ্মা-মেঘনা-যমুনা নদীব্যবস্থা দ্বারা প্রতিবছর প্রায় ৪ কোটি টন পলি বঙ্গোপসাগরে পরিবাহিত হয়ে থাকে। বাংলাদেশের প্রধান প্রধান নদীর বৈশিষ্ট্যসূচক পলির আকৃতি বিভিন্ন রকমের। যেমন, ব্রহ্মপুত্রের তলদেশ ভারের অধিকাংশই বালুকণা হতে পলিকণা এবং এতে কর্দম কণার উপস্থিতি সাধারণত মোট পলির পাঁচ শতাংশেরও কম হয়ে থাকে। নদী তীরের পদার্থসমূহ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিভিন্ন মাত্রার সূক্ষ্ম বালিকণা এবং পলিকণা দ্বারা গঠিত। তবে, কখনও কখনও সামান্য মাত্রার কর্দম কণার উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। অপরদিকে, গঙ্গার পলিজ ভারে পলিকণা আকৃতির পলি সাধারণ এবং তলদেশ ভারে প্রধানত বালুকাময়। [মোহা. শামসুল আলম]