নন্দীগ্রাম উপজেলা

Mukbil (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ০৯:৪৩, ২৯ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

নন্দীগ্রাম উপজেলা (বগুড়া জেলা)  আয়তন: ২৬৫.৪৭ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৩৫´ থেকে ২৪°৪৮´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°০৮´ থেকে ৮৯°২১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে শাহজাহানপুর ও কাহালু উপজেলা, দক্ষিণে সিংড়া উপজেলা, পূর্বে শেরপুর (বগুড়া) উপজেলা, পশ্চিমে আদমদীঘি, রানীনগর ও সিংড়া উপজেলা।

জনসংখ্যা ১৬৮১৫৫; পুরুষ ৮৫৬৯০, মহিলা ৮২৪৬৫। মুসলিম ১৪৬৩৯৮, হিন্দু ২১৬৮৩, বৌদ্ধ ৮ এবং অন্যান্য ৬৬। এ উপজেলায় সাঁওতাল, ওরাওঁ প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।

জলাশয় প্রধান নদী: নাগর, ভদ্রাবতী।

প্রশাসন নন্দীগ্রাম থানা গঠিত হয় ১৯৩২ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ২৩৫ ২৪৫ ৫৪২৩ ১৬২৭৩২ ৬৩৩ ৫৪.৩ ৪৫.৭
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
২.৩৬ ৫৪২৩ ২২৯৮ ৬১.২
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
থালতা মাজগ্রাম ৮৪ ১২২৬৪ ১৬৪২২ ১৫৫০৭ ৪৫.৭৩
নন্দীগ্রাম ৭৩ ১২১৯৭ ১৮২০৩ ১৭৩৯০ ৪৪.৯২
বুড়ইল ৩১ ১৩৯০২ ১৭৭৫৩ ১৭১৮০ ৪০.০৭
ভাটগ্রাম ১০ ১২৬৫০ ১৭৩৭১ ১৬৯৫৪ ৩৯.৮৬
ভাটরা ২১ ১৪৫৯১ ১৫৯৪১ ১৫৪৩৪ ৪০.২৮

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি ১৯৭১ সালের ২৮ এপ্রিল এ উপজেলার বামন গ্রামে পাকবাহিনী একটি গণহত্যা সংঘটিত করে। উক্ত গণহত্যায় ১৫৭ জন নিরীহ লোক মারা যায়। তাছাড়া মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকবাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর এক লড়াইয়ে ১ জন শহীদ হন। ৮ ডিসেম্বর নন্দীগ্রাম উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়।

মুক্তিযুদ্ধের  স্মৃতিচিহ্ন  গণকবর ১ (বামন গ্রাম)।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৩৭১, মন্দির ২৬। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: ওমরপুর হাট জামে মসজিদ, আলিয়াপুকুর জামে মসজিদ, রনবাঘা জামে মসজিদ, চান মোকামতলা জামে মসজিদ।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান  গড় হার ৪২.২%; পুরুষ ৪৮.৪%, মহিলা ৩৫.৭%। কলেজ ১০, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৪, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৯৩, মাদ্রাসা ১৯। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: কুন্দারহাট হাইস্কুল (১৯৪৫), দামগড়া সিদ্দিকীয়া ফাজিল মাদ্রাসা (১৯২৮)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ক্লাব ৩১, প্রেসক্লাব ১, সিনেমা হল ২, সাংস্কৃতিক সংগঠন ২।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস  কৃষি ৮১.৯৪%, অকৃষি শ্রমিক ১.৬৫%, শিল্প ০.২২%, ব্যবসা ৭.৫৪%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.৫০%, চাকরি ২.৮২%, নির্মাণ ০.৩১%, ধর্মীয় সেবা ০.১৪%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.১৫% এবং অন্যান্য ৩.৭৩%।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, সরিষা, আলু, মরিচ, ডাল, শাকসবজি।

প্রধান ফল-ফলাদি  আম, কাঁঠাল, কলা, কুল।

মৎস্য গবাদিপশু ও হাঁস মুরগির খামার   মৎস্য ২, গবাদিপশু ও হাঁসমুরগি ১০।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৩৫ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৪৪.৯৯ কিমি, কাঁচারাস্তা ৩৮.৬৪ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, ঘোড়া ও গরুর গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা খাদ্যশিল্প ৭০, ফেব্রিকেট মেটালশিল্প ২৩।

কুটিরশিল্প মৃৎশিল্প, দারুশিল্প, বাঁশের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ২৫, মেলা ৩। নন্দীগ্রাম হাট, রনবাঘা হাট, ওমরপুর হাট, কুন্দার হাট এবং বৈশাখী মেলা (কল্যাণপুরে) উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য ধান, দধি।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৩.২৩% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৪.০৭%, ট্যাপ ০.৪৬%, পুকুর ০.১৬% এবং অন্যান্য ৫.৩১%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ২৬.৬৮% (গ্রামে ২৫.২৯% ও শহরে ৭২.০১%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৪৪.১১% (গ্রামে ৪৪.৯৫% ও শহরে ১৬.৭৭%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ২৭.২১% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ২, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র ৪, হাসপাতাল ১।

এনজিও আশা, ব্র্যাক, কেয়ার, ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ।  [মো. খায়রুল আলম পুলক]

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; নন্দীগ্রাম উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।