দোহার উপজেলা

Mukbil (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ০৪:৩৩, ২০ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

দোহার উপজেলা (ঢাকা জেলা) আয়তন: ১৬১.৪৯ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°৩১´ থেকে ২৩°৪১´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°০১´ থেকে ৯০°১৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে নবাবগঞ্জ উপজেলা, দক্ষিণে পদ্মা নদী ও সদরপুর উপজেলা, পূর্বে শ্রীনগর এবং নবাবগঞ্জ (ঢাকা) উপজেলা, পশ্চিমে হরিরামপুর ও চরভদ্রাসন উপজেলা এবং পদ্মা নদী ।

জনসংখ্যা ১৯১৪২৩; পুরুষ ৯৪০৪৬, মহিলা ৯৭৩৭৭। মুসলিম ১৮১৪৪১, হিন্দু ৯৪৮৫, বৌদ্ধ ৪৭৯ এবং অন্যান্য ১৮।

জলাশয় প্রধান নদী: পদ্মা।

প্রশাসন দোহার থানা গঠিত হয় ১৯২৬ সালে এবং থানা উপজেলায় রূপান্তরিত হয় ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
৯১ ১০৯ ৬১৭৯৩ ১২৯৬৩০ ১১৮৫ ৫২.২ ৪৭.৯
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
২০.৩১ ৪৪ ৬১৭৯৩ ৩০৪২ ৫০.৯২
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
কুসুমহাটি ২১ ৪৪০১ ৮৯৮৯ ৯৮৭৪ ৫৬.৫২
সূতারপাড়া ৮৪ ৩৯৫২ ৪১৭৩ ৪১৪৮ ৩৮.৭৬
নয়াবাড়ী ৬৩ ৩৪৮০ ৭২৪০ ৭৯৭১ ৪৭.৭৮
নারিশা ৫২ ৪৩৫৩ ১৫৩৭২ ১৬৬৩৮ ৫৩.৮৩
বিলাশপুর ২৫০০ ২৩৪৩ ২৩৪৬ ২৯.৬৪
মাহমুদপুর ৩১ ১১২১০ ৮৫৬৫ ৮৫৭৬ ৩২.৩৫
মুকসুদপুর ৪২ ৩২১২ ৯৯৪২ ১০৪৯৪ ৪৫.৯৩
রায়পাড়া ৭৩ ২৩৭২ ৬৪৯৭ ৬৪৬২ ৫৪.০৯

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

ঐতিহাসিক ঘটনাবলি এক সময় উপজেলার জয়পাড়ায় নীল চাষের প্রচলন ছিল। মহাত্মা গান্ধী পরিচালিত অসহযোগ আন্দোলন কালে (১৯২০-১৯২২) গান্ধীর আদর্শে এখানে গড়ে ওঠে ‘অভয় আশ্রম’। ১৯৪০ সালে এ উপজেলার মালিকান্দা গ্রামে গান্ধী সেবাসঙ্ঘের সর্বভারতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সম্মেলন উপলক্ষে গান্ধীর আগমন ঘটে এবং তিনি এখানে দুদিন অবস্থান করেন।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৪১২, মন্দির ৬০, প্যাগোডা ১, মাযার ৪। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: উপজেলা জামে মসজিদ, জয়পাড়া জামে মসজিদ, মুকসুদপুর জামে মসজিদ, জগদ্বন্ধু সুন্দরের আশ্রম, শিব মন্দির (রায়পাড়া), জয়পাড়া হরিসভা।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,,  গড় হার ৪৯.৩%; পুরুষ ৫০.৫%, মহিলা ৪৮.২%। কলেজ ৪, ভকেশনাল ট্রেনিং ইনষ্টিটিউট ১, সরকারি শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনষ্টিটিউট ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৫, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৫৫, কমউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৬, মাদ্রাসা ৩৪। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: জয়পাড়া কলেজ (১৯৭২), পূর্বচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯২৫), জয়পাড়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০২)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ১, ক্লাব ৩৪, অডিটরিয়াম ১, সিনেমা হল ২, সাহিত্য সংগঠন ২, খেলার মাঠ ৫০।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ২৩.৯৪%, অকৃষি শ্রমিক ২.৬৬%, শিল্প ০.৮৯%, ব্যবসা ১৪.৮১%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৪.১৬%, চাকরি ১৪.০১%, নির্মাণ ২.০৬%, ধর্মীয় সেবা ০.১৮%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ১৯.৯৬% এবং অন্যান্য ১৭.৩৩%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৩৮.৩৯%, ভূমিহীন ৬১.৬১%। শহরে ৩২.৩৯% এবং গ্রামে ৪১.২০% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, ডাল, পাট, আলু, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি নীল, তিল, তিসি, কাউন, কুসুম ফুল, কালিজিরা, আখ, রসুন, মেথি, ছোলা।

প্রধান ফল-ফলাদি  কাঁঠাল, আম, কলা, পেঁপে, জাম, জামরুল, পেয়ারা, বেল, কুল, তেঁতুল।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৪, গবাদিপশু ১৫০, হাঁস-মুরগি ১২২।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১৯২ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৪৮ কিমি, কাঁচারাস্তা ২০০ কিমি; নৌপথ ১৭.২৭ নটিক্যাল মাইল, কালভার্ট ২০৫।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরু ও ঘোড়ার গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা কটনমিল, স’মিল, ওয়েল্ডিং কারখানা।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, বিড়িশিল্প, তাঁতশিল্প, মৃৎশিল্প, বুনন শিল্প, বেতের কাজ, বাঁশের কাজ, কাঠের কাজ প্রভৃতি।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৩১, মেলা ১৩। জয়পাড়া হাট, কার্তিকপুর হাট, কাচারিঘাট হাট, পালামগঞ্জ হাট, দোহার হাট, মেধুলা হাট ও নারিশা হাট এবং নূরুল্লাপুর বড় ফকিরবাড়ি মেলা, কাটাখালি মৌলবিবাড়ি মেলা, নাগর চৌধুরীবাড়ি মেলা, রায়পাড়া রাস মেলা ও লটাখোলা-জয়পাড়া সর্বজনীন দুর্গোৎসব মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য তাঁতবস্ত্র, গম, শাকসবজি ইত্যাদি।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৪৫.৯০% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৩.৬২%, পুকুর ০.৬৪%, ট্যাপ ০.৫৩% এবং অন্যান্য ৫.২২%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৪৫.২৬% (গ্রামে ৩৯.৫৪% ও শহরে ৫৭.৫৩%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৪৯.২১% (গ্রামে ৫৪.৪৯% ও শহরে ৩৭.৯১) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৫.৫২% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৮, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ২, পশুচিকিৎসা কেন্দ্র ১, কমিউনিটি ক্লিনিক ৮, ক্লিনিক ৫, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ৪।

এনজিও প্রশিকা, আশা, স্বাস্থ্যসেবা, টিএমএমএস। [মো. মোকসেদ আলী]

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; দোহার উপজেলার মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন ২০১০।