দুপচাঁচিয়া উপজেলা

Mukbil (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ০৪:৩৮, ১৪ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

দুপচাঁচিয়া উপজেলা (বগুড়া জেলা)  আয়তন: ১৬২.৪৫ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৪৮´ থেকে ২৪°৫৮´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°০৫´ থেকে ৮৯°১৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ক্ষেতলাল উপজেলা, দক্ষিণে আদমদীঘি ও কাহালু উপজেলা, পূর্বে শিবগঞ্জ ও কাহালু উপজেলা, পশ্চিমে আদমদীঘি ও আক্কেলপুর উপজেলা।

জনসংখ্যা ১৬০৮৯৪; পুরুষ ৮১৬০৪, মহিলা ৭৯২৯০। মুসলিম ১৪৭৪০৫, হিন্দু ১৩৩৮৭ এবং অন্যান্য ১০২।

জলাশয় প্রধান নদী: ইছামতি, নাগর।

প্রশাসন থানা গঠিত হয় ১৮৮০ সালে এবং থানা উপজেলায় রূপান্তরিত হয় ১৯৮৩ সালে। দুপচাঁচিয়া পৌরসভা গঠিত হয় ২০০০ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
১১৫ ২১২ ২১৭৬১ ১৩৯১৩৩ ৯৯০ ৫২.৬ ৪৪.৩
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
১০.২১ ৩৭ ১৭৬০৯ ১৭২৫ ৫১.১
পৌরসভার বাইরে উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
১.২৮ ৪১৫২ ৩২৪৪ ৫৮.৭
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন(একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
গুনাহার ৫৪ ৭২১০ ১৩০৪৩ ১২৭৯৯ ৪৪.৯০
গোবিন্দপুর ৪০ ৭২০৫ ১৪৪০৬ ১৪২৪৩ ৪৭.৮৭
চামরুল ১৩ ৭৯৪৮ ১৩২৯৭ ১৩০৯০ ৪০.০৫
জিয়ানগর ৮১ ৫৪৬২ ৯৯৭৪ ৯৫৯৪ ৪২.৫৯
তালোড়া ৬৭ ৫৬৬৪ ১৩১০৫ ১২৫৮৬ ৪৯.১০
দুপচাঁচিয়া ২৭ ৬৬৫০ ৮৬৬৩ ৮৪৮৫ ৪২.১৮

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ গয়াবন্ধ মাযার, পীর জিয়াউদ্দীনের মাযার, গোবিন্দপুর মন্দির (গোবিন্দপুর)।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল পাকবাহিনী প্রথম এ উপজেলায় প্রবেশ করে। ১১ এপ্রিল তারা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে ১ জন এবং জমিদার ক্ষিতিশ চন্দ্র চৌধুরীর বাড়িতে ৯ জনকে হত্যা করে। আগস্ট মাসের প্রথমদিকে মুক্তিযোদ্ধারা এ উপজেলার বড় চাপড়া রেলওয়ে ব্রিজ এবং আগস্ট মাসের শেষদিকে জিয়ানগরের আক্কেলপুর রায়কালী রাস্তার ওপরে কাহালু ব্রিজ ধ্বংস করে। এছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের সামনে মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে ২ জন ইপিআর সদস্য নিহত হয়।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন গণকবর ১ (তালোড়া দুপচাঁচিয়া সড়কের পাশে পদ্মপুকুর নামক স্থানে)।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৩৪৬, মন্দির ৫২, মাযার ৪।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান  গড় হার ৪৫.৪%; পুরুষ ৫১.৬%, মহিলা ৩৯.১%। কলেজ ৫, কারিগরি কলেজ ৩, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২০, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১১, মাদ্রাসা ২২। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: তালোড়া আলতাফ আলী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৮), দুপচাঁচিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৩), দুপচাঁচিয়া পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৪)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী  কলমের ছোঁয়া।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ক্লাব ৫৯, লাইব্রেরি ১, শিল্পকলা একাডেমী ১, ক্লাব ১, সিনেমা হল ৪, মিলনায়তন ১, কমিউিনিটি সেন্টার ৪।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৬.৪৪%, অকৃষি শ্রমিক ২.৭৭%, শিল্প ০.৭৪%, ব্যবসা ১৩.৮৪%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.৯৭%, চাকরি ৪.৪৩%, নির্মাণ ০.৬৫%, ধর্মীয় সেবা ০.১২%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৬৫% এবং অন্যান্য ৬.৩৯%।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, আলু, সরিষা, গম।

বিলুপ্ত ও বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি  তিল, তিসি, অড়হর।

প্রধান ফল-ফলাদি  আম, কাঁঠাল, কলা, তাল।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার এ উপজেলায় মৎস্য, গবাদিপশু ও  হাঁস-মুরগির খামার রয়েছে।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৭৫ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১৫ কিমি, কাঁচারাস্তা ১৪০ কিমি; রেলপথ ১০ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, ঘোড়া ও গরুর গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা রাইসমিল, তেলমিল, স’মিল, খেলনা শিল্প, এলুমিনিয়াম ফ্যাক্টরি, সার কারখানা, বিস্কুট ফ্যাক্টরি, আইসক্রিম ফ্যাক্টরি।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, তাঁতশিল্প, মৃৎশিল্প, দারুশিল্প, বুননশিল্প।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ১৫, মেলা ১৩। ধাপের হাট, জিয়ানগর হাট, তালোড়া হাট, সাহারপুকুর হাট এবং ধাপের মেলা, গয়াবান্দা মেলা, নবান্ন মেলা ও বিজয় মেলা।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য ধান, চাল, বিস্কুট, মাছ, দুধ।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৩২.০২% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৬%, ট্যাপ ০.৪৯%, পুকুর ০.০৮% এবং অন্যান্য ৩.৪৪%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ২৮.৫৯% (গ্রামে ২৪.৮০% ও শহরে ৫৪.৯০%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ২৪.৬৪% (গ্রামে ২৫.৩৫% ও শহরে ১৯.৭০%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৪৬.৭৮% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, পল্লী স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, স্বাস্থ্য উপকেন্দ্র ৩, পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৫, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র ১,  ক্লিনিক ৪, ডায়াগ্নস্টিক সেন্টার ১।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ২০০৪ সালের এপ্রিলে ঘূর্ণিঝড়ে এ উপজেলার ধাপসুলতানগঞ্জ, খোলাশ, মোস্তফাপুর ও নিমাইকোলা গ্রামের প্রায় ২ শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয় এবং ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়।

এনজিও আশা, ব্র্যাক, ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ, এসডিও, সেবা।  [মো খায়রুল আলম পুলক]

তথ্যসূত্র  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; দুপচাঁচিয়া উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।