দক্ষিণ সুরমা উপজেলা

দক্ষিণ সুরমা উপজেলা (সিলেট জেলা)  আয়তন: ১৯৪.২৬ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৪৩´ থেকে ২৪°৫৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°৪৭´ থেকে ৯১°৫৮´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে সিলেট সদর উপজেলা, দক্ষিণে বালাগঞ্জ ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা, পূর্বে গোলাপগঞ্জ উপজেলা, পশ্চিমে  বিশ্বনাথ ও বালাগঞ্জ উপজেলা।

জনসংখ্যা ১৮৮৬৭৫; পুরুষ ৯৭১১৩, মহিলা ৯১৫৬২। মুসলিম ১৮১০০০, হিন্দু ৭৬৫৩ এবং অন্যান্য ২২।

জলাশয় সুরমা নদী ও বাদাউড়া বিল উল্লেলখযোগ্য।

প্রশাসন দক্ষিণ সুরমা থানা গঠিত হয় ১৯৮৩ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ২০০৫ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ১০২ ৩২৬ - ১৮৮৬৭৩ ৯৭১ - ৫৮.৭০
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরূষ মহিলা
কুচাই ৪৫ ৪০২১ ৭৩১১ ৬৫৮৮ ৬০.৩৩
জালালপুর ৩৭ ৭৯০৩ ১৩৭৩৫ ১৩৩৬৮ ৫২.৩১
তেঁতলি ৮৫ ৩৫৪৪ ১০২৫৩ ৯৮৯৪ ৫৯.৯৪
দাউদপুর ৩০ ৬৭১৭ ১১৭৬২ ১০৬৪৯ ৫৬.০২
বরইকান্দি ৩৬ ২৪৪০ ৭৮৯৪ ৭১০৩ ৬৪.০২
মোগলা বাজার ৬০ ৯৩৭০ ১২৮৩৫ ১২১৭০ ৫৬.১০
মোল্লারগাঁও ৬৫ ২৭৭৪ ১০৪৯৪ ৯৮৯২ ৬২.৮১
লালাবাজার ৫০ ৪৯৬৭ ৯৯৮২ ৯৭১৪ ৫৬.৯৯
সিলাম ৭৫ ৬২৫৪ ১২৮৪৬ ১২১৮৩ ৫৯.৭২

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ জালালপুর জমিদার বাড়ী।

মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি ১৯৭১ সালের ২৯ মার্চ  পাকিস্তানী হানাদারদের বিরুদ্ধে দক্ষিণ সুরমার জনগণের একটি প্রতিরোধ চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর পাকিস্তানী সৈন্যরা বাড়ি বাড়ি ঢুকে নিরীহ  লোকদের ধরে নিয়ে হত্যা করে।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন স্মৃতিসৌধ ২।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ  ৪০২, মন্দির ১৬, গির্জা  ৩, মাযার ১।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান  গড় হার ৫৮.৭০%; পুরুষ ৬১.৮৫%, মহিলা ৫৬.৮৫%। কলেজ ৩, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২২, নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩,  সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৮০, রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৮, কমিউনিটি বিদ্যালয়  ১০, কিন্ডার গার্টেন  ৪৬, মাদ্রাসা ৫০।  উল্লেলখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: নূরজাহান মহিলা কলেজ।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী  আমাদের সিলেট (সাপ্তাহিক)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ক্লাব ২৫, কমিউনিটি সেন্টার ৫, সাংস্কৃতিক সংগঠন ২, মহিলা সংগঠন ২, খেলার মাঠ ৩।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৩২.৬৪%, অকৃষি শ্রমিক ৫.৪২%, শিল্প ১.২০%, ব্যবসা ১৬.৪৪%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.৯১%, চাকরি ৬.৬৪%, নির্মাণ ৫.২২%, ধর্মীয় সেবা ০.৩৯%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ১০.২৮% এবং অন্যান্য ১৭.৮৬%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৪২.৪৯%, ভূমিহীন ৫৭.৫১%।

দর্শনীয় স্থান জিঞ্জির আরকুম শাহের মাযার।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, সুগন্ধি চাল।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তিল, তিসি।

প্রধান ফল-ফলাদি  আম, আনারস, লেবু, কতবেল, পেয়ারা।

মৎস্য ও হাঁস-মুরগির খামার  মৎস্য ৩০, হাঁস-মুরগি ৫, হ্যাচারি ১০।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১৫৫ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৪১ কিমি, কাঁচারাস্তা ২৯৪ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, ঘোড়া ও গরুর গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা আটা কল, রুটি ও বিস্কুট কারখানা।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ২৩। মোগলা বাজার, জালালপুর বাজার, লালাবাজার উল্লেলখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য মাছ।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৪৯.০৯% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৭০.৯৯%, ট্যাপ ২.৩৮%, পুকুর ২০.৯% এবং অন্যান্য ৫.৭৩%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক পাওয়া গেছে।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা ৫৫.৪৩% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩৬.১৩%  পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৮.৪২% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৩।

এনজিও ব্র্যাক, কেয়ার, আশা, টিএমএসএস, ইউসেপ উল্লেলখযোগ্য।  [সিরাজুল ইসলাম]

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; দক্ষিণ সুরমা উপজেলা মাঠ পর্যায়ের  প্রতিবেদন ২০১০।