ঢাকা মুসলিম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি

Mukbil (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ০৮:২৯, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

ঢাকা মুসলিম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিএমসিসিআই)  বর্তমানের ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম পূর্বসূরি। এর অন্য পূর্বসূরি ইউনাইটেড চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ইউসিসিআই)। ১৯৫৯ সালে এই দুই চেম্বার একীভূত হয়ে গঠিত হয়  ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি বা ডিসিসিআই। ডিএমসিসিআই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ব্রিটিশ শাসনের শেষ দশকে, আর ইউসিসিআই পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ার পর পরই। ঊনবিংশ শতকে ভারতবর্ষের গুরুত্বপূর্ণ বন্দরনগরীগুলিতে চেম্বার প্রতিষ্ঠারই ধারাবাহিকতায় গড়ে উঠেছিল এ দুটি চেম্বার এবং ঢাকায় এই দুটি চেম্বারের জন্ম ওই সময়ে এ অঞ্চলের বাণিজ্য-পরিস্থিতি ও আর্থ-সামাজিক অবস্থারই প্রতিফলন।

ত্রিশের দশকের গোড়ার দিকে তখনকার পূর্ব বাংলায় ভারতবর্ষের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অনেক অবাঙালি ও অমুসলিম বণিকদের আগমন ঘটেছিল। এরই প্রতিক্রিয়া হিসেবে স্থানীয় বণিক ও কারিগররা নিজেদের বাণিজ্যিক স্বার্থ ও পরিচিতি রক্ষার্থে ১৯৩৬ সালে ডিএমসিসিআই প্রতিষ্ঠা করেন। এতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ড. এম.এ খান, আলহাজ্ব ফজলুর রহমান ও আরিফুর রহমান প্রমুখ খ্যাতনামা ব্যবসায়ীরা। শুরুতে এ চেম্বারের কার্যালয় ছিল ইসলামপুরে এবং এর সদস্য ছিলেন মাত্র ২৫ জন স্থানীয় মুসলিম ব্যবসায়ী।

পাকিস্তান আমলে অবাঙালি ব্যবসায়ী তৎকালীন সরকারের কাছ থেকে পণ্য বেচা-কেনার লাইসেন্স সুবিধাসহ বাণিজ্যসংশ্লিষ্ট প্রায় সব বিষয়েই নানাভাবে সুবিধা পেতেন। স্থানীয় মুসলিম ব্যবসায়ীদের মধ্যে এর তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছিল এবং বিভিন্ন ধরনের পণ্যের জন্য পৃথক কোটা বরাদ্দের দাবিতে তারা ডিএমসিসিআইয়ের মাধ্যমে আলোচনায় যথেষ্ট সাফল্য লাভ করেছিলেন। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের জন্য স্বীকৃতি আদায় এবং বিভিন্ন বাণিজ্যিক কর্মকান্ডে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে এ চেম্বার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।

১৯৪৭ সালের ভারত-ভাগ ও পূর্ব পাকিস্তান প্রতিষ্ঠান পর এ অঞ্চলের বাণিজ্যিক পরিস্থিতি বদলে যায়। স্থানীয় অমুসলিম বণিকদের অনেকে ভারতে চলে যান এবং ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অনেক মুসলিম ব্যবসায়ী চলে আসেন পূর্ব পাকিস্তানে। নবাগত এ ব্যবসায়ীরাই ইউনাইটেড চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি নামের নতুন একটি বণিক সংগঠন গড়ে তোলেন। ফলে ঢাকাকে কেন্দ্র করেই দুটি আলাদা বণিক সংগঠন সক্রিয় হয়ে ওঠে। এই পরিস্থিতিতে অমুসলিম সম্প্রদায়ের ব্যবসায়ীদের সদস্য করে নেওয়ার উদ্দেশে ডিএমসিসিআইয়ের নাম থেকে মুসলিম শব্দটি বাদ দেওয়া হয়। অবশেষে ১৯৫৯ সালে এ দুই চেম্বার একীভূত হয়ে একটি ঐক্যবদ্ধ বণিক সংগঠন প্রতিষ্ঠিত হয়, আর এর নাম রাখা হয় ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি।  [আশরাফউদ্দিন চৌধুরী]