ঝিকরগাছা উপজেলা

Banglapedia admin (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ০৫:৪৪, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

ঝিকরগাছা উপজেলা (যশোর জেলা)  আয়তন: ৩০৭.৯৬ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°০০´ থেকে ২৩°১০´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°০০´ থেকে ৮৯°১০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে চৌগাছা উপজেলা, দক্ষিণে মনিরামপুর উপজেলা ও কলারোয়া, পূর্বে যশোর সদর ও মনিরামপুর উপজেলা, পশ্চিমে শার্শা উপজেলা।

জনসংখ্যা ২৯৮৯০৮; পুরুষ ১৪৭১২৭, মহিলা ১৫১৭৮১। মুসলিম ২৮১৭৬২, হিন্দু ১৪৪০৮, খ্রিস্টান ২৬৪৯ এবং অন্যান্য ৮৯।

জলাশয় প্রধান নদী: কপোতাক্ষ, বেতনা। খড়মদা বিল, সমুন্দর বিল, বুধখাঁন বিল, টেপরা বিল এবং উজ্জ্বলপুর বাওড় উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন ঝিকরগাছা থানা গঠিত হয় ১৯০৯ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে। পৌরসভা গঠিত হয় ১৯৮৮ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
১১ ১৫৮ ১৭৪ ৪১৪৩৯ ২৫৭৪৮৯ ৯৭১ ৫৯.৩২ (২০০১) ৫১.৪
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৯.৪২ (২০০১) ১৫ ৩২৭৭৪ ২৯৫৫ (২০০১) ৬৪.৪
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
১০.৮৫ (২০০১) ৮৬৬৫ ৭৪১ (২০০১) ৫৭.৮
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
গঙ্গানন্দপুর ২৯ ৭৫৪৭ ১২০৫৪ ১২২৫৪ ৪৭.১
গদখালি ৩৫ ৬০৯৪ ১৩৩২৬ ১৩৫৬৬ ৫৪.৪
ঝিকরগাছা ৪৭ ৬৫৩৫ ১৩৯৭৭ ১৩৬৪৬ ৫০.১
নাভারন ৫৯ ৬৩০৬ ১৪৩৬৩ ১৫১৩২ ৪৯.৫
নিবাসখোলা ৬৫ ৬৬৬২ ১১১৪৩ ১১৬১৭ ৫৪.২
পানিসারা ৭১ ৬০৫৭ ১০৭৩৮ ১১০৯০ ৫১.১
বাঁকড়া ২৫ ৬৭১৬ ১০৬২৩ ১১১৪২ ৫১.৮
মাগুরা ৫৩ ৭৬১২ ১২৮৯৭ ১৩৩৪৩ ৫৪.১
শংকরপুর ৮৩ ৬২১৬ ১১৬৩২ ১১৯৯৯ ৪৬.১
শিমুলিয়া ৮৯ ৭০৭৪ ৯৯৩২ ১০৪১৩ ৫৬.০
হাজিরবাগ ৪১ ৬৯৫১ ১০৩৯৭ ১০৮৫০ ৫৪.৬

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ মুকুটরায় রাজার প্রাসাদের ধ্বংসাবশেষ (দ্বাদশ শতাব্দী, লাউজানি), গাজী কালুর দরগাহ জামে মসজিদ (কায়েমকোলা, মাগুরা), চার্চ অব আওয়ার লেডী অব দ্য রোজারী (শিমুলিয়া)।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসে পাকবাহিনী কৃষ্ণপুরে অসংখ্য লোককে নির্মমভাবে হত্যা করে। ৫ সেপ্টেম্বর বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ গঙ্গানন্দপুর ইউনিয়নের গোয়ালহাটি গ্রামে পাকবাহিনীর সঙ্গে সংঘটিত এক যুদ্ধে শহীদ হন। ৬ ডিসেম্বর ঝিকরগাছা শত্রুমুক্ত হয়। উপজেলার গোয়ালহাটিতে ১টি বধ্যভূমি রয়েছে; ১টি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়েছে।

বিস্তারিত দেখুন ঝিকরগাছা উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৪।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৩০৫, মন্দির ১৭, গির্জা ৪। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: কায়েমকোলা মসজিদ, গদখালির কালীমন্দির।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫৩.০%; পুরুষ ৫৫.৩%, মহিলা ৫০.৯%।উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: শহীদ মশিয়ুর রহমান ডিগ্রি কলেজ (১৯৬৮), এম.এল হাইস্কুল (১৮৮৮), রঘুনাথনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯২২), বি.এম হাইস্কুল (১৯৩৬), গঙ্গানন্দপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৪০), ঝিকরগাছা পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় (১৯৫৩), গাজীর দরগা ফাজিল মাদ্রাসা (১৯৫৫)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী  সাপ্তাহিক: মজলুম, কপোতাক্ষ, স্বাধীন বাংলা, সোনারদেশ; পাক্ষিক: অমৃত প্রবাহিনী (অবলুপ্ত)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৩, ক্লাব ৫৮, সিনেমা হল ৩, খেলার মাঠ ২, নাট্যদল ৫, যাত্রাপার্টি ১।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৫.৯৭%, অকৃষি শ্রমিক ২.৯৭%, শিল্প ২.০৯%, ব্যবসা ১২.৮৪%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.৭২%, চাকরি ৪.০৩%, নির্মাণ ১.৩৫%, ধর্মীয় সেবা ০.১১%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ১.৫৩% এবং অন্যান্য ৫.১৫%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৯.৩৪%, ভূমিহীন ৪০.৬৬%। শহরে ৪৮.১৫% এবং গ্রামে ৬১.০১% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, সরিষা, ডাল, গম, আলু, তুলা, রজনীগন্ধা, সুপারি, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি বিভিন্ন প্রকারের ডাল।

প্রধান ফল-ফলাদি  আম, কাঁঠাল, জাম, পেঁপে, লিচু, নারিকেল, কলা।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ২০৭ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১৭ কিমি, কাঁচারাস্তা ৬৮৩ কিমি; রেলপথ ১৪ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরুর গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা কোল্ডস্টোরেজ ২, বিড়ি ফা্যক্টরি ১।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প  লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, তাঁতশিল্প, কাঠের কাজ, সেলাই কাজ।

হাটবাজার ও মেলা ঝিকরগাছা বাজার, ছুটিপুর বাজার, কায়েমকোলা বাজার, বাঁকড়া বাজার উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য খেজুর গুড়, নারিকেল, সুপারি, রজনীগন্ধা, আলু, শাকসবজি, তুলা, বিড়ি।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবকটি ইউনিয়ন পল্লি­বিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৬২.২% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৭.৩%, ট্যাপ ০.৮% এবং অন্যান্য ১.৯%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৫৮.৩% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩৭.০% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৪.৭% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১১, উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ৩।

এনজিও ব্র্যাক, আশা, কারিতাস।  [ফিরোজ আনসারী]

তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; ঝিকরগাছা উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।