জঙ্গলবাড়ি দুর্গ

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২০:৫৫, ৪ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Added Ennglish article link)
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

জঙ্গলবাড়ি দুর্গ  কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার অধীনে জঙ্গলবাড়ি গ্রামে অবস্থিত। দুর্গটি বর্তমানে ধ্বংসপ্রাপ্ত। প্রচলিত জনশ্রুতি অনুযায়ী এগারসিন্ধুর যুদ্ধে মানসিংহের কাছে পরাজিত হওয়ার পর লক্ষ্মণ সিং হাজরার কাছ থেকে ঈসা খান দুর্গটি দখল করেন। সম্ভবত লক্ষ্মণ হাজরা বা ঈসা খান কেউই দুর্গটির মূল নির্মাতা নন। দুর্গ এলাকার বাইরে বিশেষ করে দুর্গের দক্ষিণ, পশ্চিম, উত্তর-পশ্চিম অংশে অসংখ্য ইটের টুকরা ও মৃৎপাত্রের ভগ্নাংশ পাওয়া যায়। প্রাপ্ত নিদর্শনাবলি সম্ভবত প্রাক-মুসলিম আমলের এবং বিষয়টি ইঙ্গিত করে যে, মুসলমানদের আগমনের পূর্বে দুর্গটি নির্মিত হয়েছিল, এবং এটি একটি সমৃদ্ধশালী জনবসতির কেন্দ্র ছিল। তবে দুর্গের অভ্যন্তরে বেশ কিছু স্থাপনা ঈসা খানের। মুসা খান কর্তৃক মুগল আধিপত্য স্বীকার করে নেবার পর ঈসা খানের বংশধরগণ সোনারগাঁও থেকে জঙ্গলবাড়ি দুর্গে তাদের পরিবারবর্গকে স্থানান্তর করেন। কালক্রমে তারা এ অঞ্চলের জমিদারে পরিণত হন। মুসা খানের দৌহিত্র হায়বাত খান ‘হায়বাতনগর’ নামে একটি শহর প্রতিষ্ঠা করেন। এখান থেকেই তিনি সাতটি পরগণা শাসন করতেন। ঈসা খানের বংশধররা এখনও জঙ্গলবাড়ি গ্রামে বসবাস করেন।

দুর্গের চারিদিকে পরিখার অবস্থান প্রমাণ করে যে, এটি ছিল বৃত্তাকার আকৃতির। দক্ষিণ, পশ্চিম ও উত্তর দিকে গভীর পরিখা খনন করা হয় এবং পূর্বদিকে নরসুন্ধ নদীর সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা হয়। দুর্গ স্থলটিকে এখনও একটি দ্বীপ বলে মনে হয়। চারদিকের জলরাশি এতটাই গভীর যে শুষ্ক মৌসুমেও নৌকা ছাড়া পার হওয়া যায় না। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কিছু ইটের টুকরা, মৃৎপাত্রের ভগ্নাংশ এবং কয়েকটি নিচু ঢিবি ছাড়া দুর্গটির আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।  [শাহনাজ হুসনে জাহান]