জগদ্বন্ধু

Mukbil (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ০৫:৪৫, ৩০ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)
জগদ্বন্ধু

জগদ্বন্ধু (১৮৭১-১৯২১)  বৈষ্ণব সাধক ও লেখক।  ফরিদপুর জেলার গোবিন্দপুর গ্রামে তাঁর জন্ম। তাঁর পিতা দীননাথ চক্রবর্তী (ন্যায়রত্ন) ছিলেন একজন  সংস্কৃত পন্ডিত। গ্রামের পাঠশালায় প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে জগদ্বন্ধু ফরিদপুর,  পাবনা ও রাঁচিতে বিভিন্ন স্কুলে অধ্যয়ন করেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত এন্ট্রান্স পরীক্ষা দেওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব হয়নি।

জগদ্বন্ধু আবাল্য দৈবভাবাপন্ন ছিলেন। ভগবদ্বিষয়ক আলোচনা,  কীর্তন, গান ইত্যাদি শুনে প্রায়শই তিনি ভাবাবেগে আপ্লুত হতেন। ব্রহ্মচর্য পালন, নিয়মিত সন্ধ্যাপূজা এবং সাধুসজ্জনে ভক্তি ছিল তাঁর নিত্যকর্মের অন্তর্গত। এসব কারণে জগদ্বন্ধুর প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা জাগে এবং তাঁর ভক্তসংখ্যা বৃদ্ধি পায়। তিনি কীর্তনদল গঠন করে তার মাধ্যমে ভক্তিভাব প্রচার করতে থাকেন। অনেক তীর্থ পরিভ্রমণ করে তিনি বৃন্দাবনে গভীর সাধনায় মগ্ন হন এবং রাধারাণীর কৃপায় সিদ্ধি লাভ করেন।

বৃন্দাবন থেকে ফিরে জগদ্বন্ধু ফরিদপুর শহরের উপকণ্ঠে ‘শ্রীঅঙ্গন’ নামে আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন। সমাজের সর্বসাধারণের কল্যাণবিধান ছিল তাঁর সাধনার লক্ষ্য। ঈশ্বরের নামকীর্তনদ্বারা এরূপ কল্যাণসাধন সম্ভব বলে তিনি বিশ্বাস করতেন। সামাজিক বর্ণবৈষম্য এবং উঁচু-নিচু ভেদ দূর করার জন্য তিনি আমৃত্যু কাজ করেছেন। তাঁর উদার মত ও সহূদয় আচরণে ফরিদপুরের সাঁওতালেরা হয়েছে মোহান্ত এবং কলকাতার রামবাগানের ডোম সম্প্রদায় হয়েছে হরিভক্ত।

কীর্তনবিষয়ে জগদ্বন্ধুর মোট আটখানা গ্রন্থ আছে। সেগুলি হচ্ছে শ্রীমতীসংকীর্তন, শ্রীমানসংকীর্তন, বিবিধসঙ্গীত, শ্রীসংকীর্তন পদাবদলী, শ্রীশ্রীহরিকথা, চন্দ্রপাত, ত্রিকাল এবং উদ্ধারণ। প্রথম তিনটি গ্রন্থ একত্রে সংকীর্তন পদামৃত নামে মুদ্রিত হয়েছে। এতে ১৭৭টি পদ আছে। ১৯২১ সালে শ্রীঅঙ্গন আশ্রমে সমাধিস্থ অবস্থায় তিনি দেহ ত্যাগ করেন।  [পরেশচন্দ্র মন্ডল]