চৌধুরী, বিচারপতি আবু সাঈদ

Mukbil (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ০৬:৪৮, ২৬ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)
বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী

চৌধুরী, বিচারপতি আবু সাঈদ (১৯২১-১৯৮৭)  বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি। ১৯২১ সালের ৩১ জানুয়ারি টাংগাইল জেলার নাগবাড়ির এক জমিদার পরিবারে তাঁর জন্ম। পিতা আবদুল হামিদ চৌধুরী পূর্বপাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের স্পিকার ছিলেন।

আবু সাঈদ চৌধুরী কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে স্নাতক (১৯৪০) এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ও আইন বিষয়ে ডিগ্রি লাভের পর ইংল্যান্ডের লিংকন্স ইন থেকে ব্যারিস্টারি পাস করেন। ১৯৪৭ সালে তিনি কলকাতা হাইকোর্টে আইন ব্যবসা শুরু করেন, এবং ভারত বিভাগের পর ঢাকায় এসে ১৯৪৮ সালে ঢাকা হাইকোর্টে আইন ব্যবসায়ে যোগ দেন। ১৯৬০ সালে আবু সাঈদ চৌধুরী পূর্বপাকিস্তানের অ্যাডভোকেট জেনারেল এবং ১৯৬১ সালে হাইকোর্টের বিচারপতি নিযুক্ত হন। তিনি পাকিস্তানের সাংবিধানিক কমিশনের সদস্য (১৯৬০-৬১) এবং বাংলা উন্নয়ন বোর্ডের (১৯৬৩-৬৮) চেয়ারম্যান ছিলেন।

বিচারপতি চৌধুরী ১৯৬৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিযুক্ত হন। ১৯৭১ সালে জেনেভায় অবস্থানকালে পূর্ব পাকিস্তানে পাকবাহিনীর গণহত্যার প্রতিবাদে তিনি উপাচার্য পদে ইস্তফা দেন। মুজিবনগরে অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকারের বিশেষ দূত হিসেবে জেনেভা থেকে তিনি লন্ডন যান এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ে সচেষ্ট হন। একাজে তিনি বিশেষ সাফল্য অর্জন করেন।

স্বাধীনতার পর বিচারপতি চৌধুরী ঢাকায় প্রত্যাবর্তন করেন এবং ১৯৭২ সালের ১২ জানুয়ারি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। তিনি ১৯৭৩ সালের ১০ এপ্রিল পুনরায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। ওই  বছর ডিসেম্বর মাসে তিনি রাষ্ট্রপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন এবং একজন মন্ত্রীর পদমর্যাদায় বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক বিশেষ দূত নিযুক্ত হন। ১৯৭৫ সালের ৮ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মন্ত্রিসভায় তিনি বন্দর ও নৌপরিবহন মন্ত্রী ছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু  শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হলে বিচারপতি চৌধুরী নতুন রাষ্ট্রপতি খোন্দকার মোশতাক আহমদের মন্ত্রিসভায় পররাষ্ট্র মন্ত্রী নিযুক্ত হন। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর পর্যন্ত তিনি এ পদে বহাল ছিলেন।

বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী ১৯৭৮ সালে জাতিসংঘে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি বৈষম্যের অবসান এবং তাদের নিরাপত্তা বিষয়ক উপকমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৫ সালে তিনি জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের সভাপতি নির্বাচিত হন। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে ‘দেশিকোত্তম’ উপাধিতে ভূষিত করে এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সম্মানসূচক ডক্টর অব ল’ ডিগ্রি প্রদান করে। তাঁর রচিত প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলি (১৯৯০) বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত একটি মূল্যবান গ্রন্থ। আবু সাঈদ চৌধুরী ১৯৮৭ সালের ২ আগস্ট লন্ডনে মৃত্যুবরণ করেন। [এনামুল হক]