খানসামা উপজেলা

Mukbil (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ১০:৩০, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

খানসামা উপজেলা (দিনাজপুর জেলা)  আয়তন: ১৭৯.৭২ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৫°৪৭´ থেকে ২৬°০১´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৪২´ থেকে ৮৮°৫১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে দেবীগঞ্জ ও নীলফামারী সদর উপজেলা, দক্ষিণে চিরিরবন্দর ও দিনাজপুর সদর উপজেলা, পূর্বে নীলফামারী সদর উপজেলা, পশ্চিমে কাহারোল ও বীরগঞ্জ উপজেলা।

জনসংখ্যা ১৫০৭৯২; পুরুষ ৭৭৫৩৯, মহিলা ৭৩২৫৩। মুসলিম ১০৭৩৮৮, হিন্দু ৪২৯১১, বৌদ্ধ ২৬২ এবং অন্যান্য ২৩১। এ উপজেলায় সাঁওতাল আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।

জলাশয় আত্রাই, করতোয়া ও ছোট যমুনা নদী উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন খানসামা থানা গঠিত হয় ১৮৯১ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ৫৭ ৫৭ ৮২৪৪ ১৪২৫৪৮ ৮৩৯ ৪৩.৬ ৩৮.৬
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৭.৭৫ ৮২৪৪ ১০৬৪ ৪৩.৬
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
আঙ্গরপাড়া ৩১ ৬৮৬৪ ১২৫৬৪ ১১৭০৪ ৩৭.০৫
আলোকঝাড়ী ১৫ ৮৩৫৪ ১৫১৬২ ১৪৪৮৫ ৩৮.৬৪
খামারপাড়া ৯৪ ৭৪৩৩ ১২৬১৫ ১১৫২৪ ৪২.১৮
গোয়ালডিহি ৭৯ ৭৫৫৯ ১২৪১০ ১১৯৩৯ ৩৭.২৭
ভাবকি ৪৭ ৭০৫২ ১২৫১৯ ১২০৬০ ৩৮.২৯
ভেড়ভেড়ি ৬৩ ৭২৪৮ ১২২৬৯ ১১৫৪১ ৩৯.৬৯

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ আওকর মসজিদ (১১৭৮ খ্রিস্টাব্দ), চেহেল গাজীর মাযার, নলবাড়ির মাযার।

মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি ১৯৭১ সালে খানসামা উপজেলায় পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ডিসেম্বর মাসে ইছামতি নদীর ঘাটমারা নামক স্থানে ব্রিজের পাদদেশে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে উভয় পক্ষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিসহ বহুসংখ্যক হতাহতের ঘটনা ঘটে। এ লড়াইয়ে সুবেদার আব্দুল মজিদ শহীদ হন। ১৪ ডিসেম্বর এ উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন স্মৃতিসৌধ ১।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ২৩.২%; পুরুষ ৩২.৪%, মহিলা ১৩.৬%। কলেজ ১১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৬৩, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১২৯, মাদ্রাসা ২৬। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: খানসামা ডিগ্রি কলেজ, খানসামা মহিলা কলেজ, কাচিনিয়া উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজ (১৯৬৭), জমিরউদ্দিন শাহ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজ (১৯৮৩), নিউ পাকেরহাট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫৯), আলোকঝাড়ী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬২), আঙ্গরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৩), আকবর আলী শাহ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৮৮), খানসামা দ্বিমুখী ফাজিল মাদ্রাসা।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী সাপ্তাহিক: ফলো-আপ।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ১, ক্লাব ২৩, সিনেমা হল ১, যাত্রাদল ১, মহিলা সংগঠন ৫।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৭৪.৪৮%, অকৃষি শ্রমিক ৪.৫৭%, ব্যবসা ৯.৪৩%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.০৫%, চাকরি ৩.৮৯%, নির্মাণ ০.৭৪%, ধর্মীয় সেবা ০.১৪%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.১৪% এবং অন্যান্য ৪.৫৬%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৪৮.৭৮%, ভূমিহীন ৫১.২২%। শহরে ৪০% এবং গ্রামে ৪৯.৩০% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, আখ, আলু, ভূট্টা।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি সরিষা, পাট, কাউন।

প্রধান ফল-ফলাদি তরমুজ, আম, কলা, কাঁঠাল, লিচু।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার এ উপজেলায় মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার এবং  হ্যাচারি রয়েছে।

শিল্প ও কলকারখানা তেল কল, রাইস মিল, আইস ফ্যাক্টরি, বিস্কুট ফ্যাক্টরি।

কুটিরশিল্প তাঁতশিল্প, মৃৎশিল্প, লৌহশিল্প, স্বর্ণশিল্প, কাঠের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ১৫। খানসামা হাট, কচিনা হাট ও রামকলা হাট উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য  তরমুজ এবং কলা।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচিরর আওতাধীন। তবে ১০.৪২% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৮৯.৮৭%, পুকুর ০.২৩%, ট্যাপ ০.২৩% এবং অন্যান্য ৯.৬৭%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৮.৪৯% (গ্রামে ৬.৮৩% এবং শহরে ৩৬.৫৭%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ২০.৩৭% (গ্রামে ২০.২২% এবং শহরে ২২.৮৭%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৭১.১৪% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য এবং পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৫, স্যাটেলাইট ক্লিনিক ১।

এনজিও ব্র্যাক, আশা, কারিতাস।  [মমতাজুর আলম]

তথ্যসূত্র  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; খানসামা উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।