খাগড়াছড়ি জেলা

Banglapedia admin (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ১৯:৪৬, ২৮ মে ২০২৩ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (হালনাগাদ)
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

খাগড়াছড়ি জেলা (চট্টগ্রাম বিভাগ)  আয়তন: ২৫০৫.৭৩ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°৩৮´ থেকে ২৩°৪৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°৪৪´ থেকে ৯২°১১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য, দক্ষিণে রাঙ্গামাটি ও চট্টগ্রাম জেলা, পূর্বে রাঙ্গামাটি জেলা, পশ্চিমে চট্টগ্রাম জেলা ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য। এ জেলার গলামুন, ছোট পানছড়ি, কারমি মুড়া, লুটিবান, কুরাদিয়া, ভাঙ্গামুরা ও জপিসিল পাহাড় উল্লেখযোগ্য।

জনসংখ্যা ৫৬৯৭১৫; পুরুষ ২৯১৩৯০, মহিলা ২৭৮৩২৫। মুসলিম ২৬১৪৭৭, হিন্দু ৯৩৩৪৩, বৌদ্ধ ২০৯৯৩২, খ্রিস্টান ৩৯৬১ এবং অন্যান্য ১০০২। এ জেলায় চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।

জলাশয় প্রধান নদী: মাইনি ও চেঙ্গী।

প্রশাসন ‘রেইড অফ ফ্রন্টিয়ার ট্রাইবস অ্যাক্ট ২২, ১৮৬০ মোতাবেক পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা গঠিত হয় ১৮৬০ সালে। ১৯০০ সালে চিটাগাং হিলট্রাক্টস্ রেগুলেশন আইন মোতাবেক পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলাকে তিনটি মহকুমায় বিভক্ত করা হয়। খাগড়াছড়ি তার মধ্যে একটি। ১৯৮৩ সালে খাগড়াছড়ি মহাকুমাকে জেলায় উন্নীত করা হয়। ১৯৮৯ সালে সরকার খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন (ধারা ২০) মোতাবেক খাগড়াছড়ি স্থানীয় সরকার পরিষদ গঠন করেন যা ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির মাধ্যমে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদে রূপান্তরিত হয়।

জেলা
আয়তন (বর্গ কিমি) উপজেলা পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম
২৫০৫.৭৩ ৩৫ ১০৮ ১৫৪৫ ২১৫৮০৮ ৩৫৩৯০৭ ২২৭ ৪৬.১
জেলার অন্যান্য তথ্য
উপজেলা নাম আয়তন (বর্গ কিমি) পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
খাগড়াছড়ি সদর ২৯৭.৯১ ১৩ ২৪৬ ১১১৮৩৩ ৩৭৫ ৫৭.১
দীঘিনালা ৬৯৪.১১ - ২২ ২৪৫ ১০৩৩৯২ ১৪৯ ৪৬.২
পানছড়ি ৩৩৪.১০ - ২২০ ৬২১৯৮ ১৮৬ ৪২.৩
মহালছড়ি ১৮৬.৪৮ - ১৫৪ ৪২৪২৭ ২২৮ ৪১.৮
মাটিরাঙ্গা ৪০৪.৭৬ ২৩ ২৯৬ ১১১৫৩৮ ২৭৬ ৪২.৪
মানিকছড়ি ১৬৮.৩৪ - ১২ ১৬০ ৬১৫৮৯ ৩৬৬ ৪০.৭
রামগড় ১৯৯.৮৯ ৯০ ৫০৭৪৪ ২৫৪ ৪১.৩
লক্ষ্মীছড়ি ২২০.১৪ - ১৬ ১৩৪ ২৫৯৯৪ ১১৮ ৩৫.২

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের আগস্ট মাসে রামগড় উপজেলার মহামুনি পাড়ায় পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ১৭ জন পাকসেনা নিহত হয়। জেলায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে ১টি গণকবর রয়েছে, ১টি স্মৃতিফলক ও ২টি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়েছে।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৬.১%; পুরুষ ৫১.৯%, মহিলা ৪০.১%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ (১৯৭৪), মাটিরাঙ্গা ডিগ্রি কলেজ (১৯৯২), রামগড় সরকারি ডিগ্রি কলেজ (১৯৮০), পানছড়ি কলেজ (১৯৯০), পানছড়ি হাইস্কুল ও কলেজ (১৯৮১), দীঘিনালা সরকারি কলেজ, খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫৭), তবলছড়ি টি কে উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫২), রামগড় সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫২), রানী নিহার দেবী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৭৬), দীঘিনালা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, খাগড়াছড়ি উত্তর খবংপডিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯০৫)।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৫৯.৯২%, অকৃষি শ্রমিক ৯.৩৩%, শিল্প ০.৪৪%, ব্যবসা ১০.৬৭%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.১১%, নির্মাণ ০.৯২%, ধর্মীয় সেবা ০.২৪%, চাকরি ৭.৯৪%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৩৭% এবং অন্যান্য ৯.০৬%।

পত্র-পত্রিকা  দৈনিক: অরণ্য বার্তা; সাপ্তাহিক: পার্বতী, চাবুক, পার্বত্য বাণী, বিন্যাস।

লোকসংস্কৃতি চাকমাদের বিঝু উৎসব, মারমাদের সাংগ্রাই উৎসব এবং ত্রিপুরাদের বৈসাবী উৎসব উল্লেখযোগ্য।

দর্শনীয় স্থান রামগড় লেক ও ঝুলন্ত ব্রিজ, রাইফেলস স্মৃতি স্তম্ভ (রামগড়), আলুটিলা (খাগড়াছড়ি সদর ও মাটিরাঙ্গা)। [বরেন্দ্রলাল ত্রিপুরা]

আরও দেখুন সংশ্লিষ্ট উপজেলা।

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১,বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; খাগড়াছড়ি জেলার সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; খাগড়াছড়ি জেলার উপজেলাসমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।