উৎপাদন বন্টন চুক্তি

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ১৯:০৩, ৪ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Added Ennglish article link)

উৎপাদন বন্টন চুক্তি (পিএসসি)  পেট্রোলিয়াম অনুসন্ধান ও উন্নয়নের লক্ষ্যে বিদেশি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের একটি বিশেষ চুক্তি। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম আইন ১৯৭৪ অনুসারে বাংলাদেশের স্থল ও জলসীমাসহ অর্থনৈতিক সীমানার অন্তর্গত সকল খনিজ ও পেট্রোলিয়াম সম্পদের মালিকানা বাংলাদেশ সরকারের। সরকার ওই আইনবলে পেট্রোলিয়াম জাতীয় পণ্য অনুসন্ধান, উন্নয়ন, উত্তোলন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, পরিশোধন ও বিপণনের নিরঙ্কুশ অধিকার ভোগ করে। একই আইনে সরকার যে কোন পক্ষের সঙ্গে পেট্রোলিয়াম অপারেশনের জন্য চুক্তিবদ্ধ হওয়ার ক্ষেত্রেও নিরঙ্কুশ ক্ষমতাপ্রাপ্ত। সরকারের পক্ষে পেট্রোবাংলা পেট্রোলিয়াম অনুসন্ধান, উন্নয়ন, প্রক্রিয়াকরণ ও বিপণন কর্মকান্ড পরিচালনা এবং একই উদ্দেশ্যে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের দায়িত্ব পালন করছে।

১৯৭৩ সালে বিদ্যমান নীতিমালা ব্যাপকভাবে পর্যালোচনা শেষে জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করে দ্রুত দেশের তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনে অনুমোদিত সকল পক্ষ যাতে উৎসাহ নিয়ে অংশগ্রহণ করে সেজন্য একটি উপযুক্ত নীতিমালা প্রণয়নের কাজ শুরু হয়। আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলিকে তেল ও গ্যাস সেক্টরে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে জাতীয় সামর্থ্য উন্নয়নের জন্যও সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়। ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, মিশর, চীন ও ভারতে আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানিগুলির সঙ্গে উৎপাদন বণ্টন চুক্তির অধীনে স্ব স্ব জাতীয় স্বার্থ ও সামর্থ্য উন্নয়নের প্রয়াস লক্ষ্য করা গেছে। উক্ত দেশসমূহের অভিজ্ঞতা থেকে  এদেশে অনুরূপ উদ্যোগ গ্রহণের ধারণাটি উদ্ভূত হয়।

১৯৭৪ সালে বাংলাদেশের সীমানায় তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান এবং উত্তোলনের জন্য নির্ধারিত শর্তের অধীনে আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানিসমূহকে আহবান জানানো হয়। যে সকল প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের আহবানে সাড়া দিয়ে প্রস্তাব জমা দেয় তাদের প্রস্তাবসমূহ চারটি নির্ধারিত বিষয়ে উপযুক্ততার ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হয়। নির্ধারিত উপযুক্ততার বিষয়সমূহ ছিল কোম্পানির আর্থিক সামর্থ্য, কারিগরি দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও কাজের পরিকল্পনা। নির্বাচিত নির্দিষ্ট সংখ্যক কোম্পানিকে উৎপাদন বণ্টন চুক্তির মডেলের ভিত্তিতে চুক্তি সম্পাদনের জন্য আলোচনায় ডাকা হয়। চূড়ান্ত সাতটি কোম্পানিকে সমুদ্রবক্ষে অনুসন্ধান ও উন্নয়ন কাজ পরিচালনার জন্য মনোনীত করে চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়। যে সাতটি কোম্পানির সঙ্গে উৎপাদন বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় তারা হলো যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টিক রিচফিল্ড, ইউনিয়ন অয়েল অব ক্যালিফোর্নিয়া, (পরবর্তীকালে এই কোম্পানি ইউনোক্যাল নাম ধারণ করে) এবং অ্যাশফিল্ড, কানাডার সুপিরিয়র অয়েল কোম্পানি, ইউরোপের ডেমিনেক্স ও ইনা-ন্যাপথালিন এবং একটি জাপানি কোম্পানি। ইউনোক্যাল কুতুবদিয়ার নিকটবর্তী সমুদ্রবক্ষে একটি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করলেও আর্থিক বিবেচনায় সেটি অলাভজনক হওয়ায় তারা অনুসন্ধানের পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।

ইতোমধ্যে বাংলাদেশে তেলের চেয়ে গ্যাসের বেশি মজুত সম্ভাবনা রয়েছে এ বিষয়ে ধারণা স্পষ্ট হতে থাকে। ফলে বিদেশি তেল কোম্পানিগুলি দ্রুতই বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পাদিত উৎপাদন বণ্টন চুক্তির ব্যাপারে আগ্রহ হারাতে শুরু করে। ১৯৮১ সালে শেল অয়েল কোম্পানি দেশের স্থলভাগে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানের চুক্তি স্বাক্ষর করে। এ সময়ের মধ্যে পেট্রোবাংলা তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান এবং উত্তোলনের উল্লেখযোগ্য কারিগরি সামর্থ্য অর্জন করে। ১৯৮৯ সালে দেশে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন কোম্পানি (বাপেক্স) প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৯৮৬ সালে পেট্রোবাংলা সিলেট জেলার হরিপুরে বাংলাদেশ ভূখন্ডের প্রথম তেলক্ষেত্র আবিষ্কার করে। ১৯৮৭ সালের জুন মাসে ব্রিটিশ ভারজিন দ্বীপপুঞ্জে নিবন্ধিত মাত্র ৫০,০০০(পঞ্চাশ হাজার) মার্কিন ডলার অনুমোদিত মূলধনের কোম্পানি সিমিটার ও বেশ কয়েকটি খ্যাতিমান আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানি এই তেলক্ষেত্র উন্নয়নে বিভিন্ন প্রস্তাব নিয়ে এগিয়ে আসে। পেট্রোবাংলার কারিগরি বিশেষজ্ঞগণ সিমিটারের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের বিপক্ষে মত প্রকাশ করলেও ১৯৮৭ সালের ডিসেম্বরে সরকার ওই কোম্পানির সঙ্গেই হরিপুর তেলক্ষেত্র নিয়ে চুক্তি সম্পাদন করে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে সিমিটার কাজ শুরু করতে পারে নি। বরং কোম্পানিটি বারবার চুক্তির সময়সীমা বাড়ানোর অনুমতি প্রার্থনা করতে থাকে এবং সে সুযোগে বিশ্বজুড়ে নিজের জন্য তহবিল সংগ্রহে তৎপর হয়।

১৯৮০-র দশকের শেষভাগে গ্যাস সম্পদ উন্নয়নের বিষয়টিতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটে। বিশ্ববাংকের সহায়তায় পেট্রোলিয়াম অনুসন্ধান উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচীর অধীনে ১৯৮৭ সালে বিদ্যমান আইন ও নীতসমূহ পুনঃপর্যালোচনা করা হয় এবং গ্যাস অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে উজ্জ্বল সম্ভাবনার বিষয়টি স্পষ্ট হয়। ১৯৮৮ সালে গ্যাস অনুসন্ধান উৎসহিত করার লক্ষ্যে তেলের বাজার মূল্যের সঙ্গতি রক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয় এবং এ আলোকে উৎপাদন বণ্টন চুক্তির একটি নতুন মডেল প্রণয়ন করা হয়। ১৯৯৩ সালে সরকারের পরিবর্তিত নীতিমালার ভিত্তিতে পেট্রোলিয়াম অনুসন্ধানের জন্য উক্ত মডেল চুক্তি সংশোধিত হয়।  ১৯৯৭ সালে মডেল চুক্তিতে আরও কিছু পরিবর্তন আনা হয়।

১৯৯৪ সালের মে মাসে ব্রিটিশ-ডাচ যৌথ উদ্যোগের কেয়ার্ন এনার্জি ও হলান্ড সি সার্চ-এর সঙ্গে বাংলাদেশের উৎপাদন বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। একই যৌথ উদ্যোগের কোম্পানি পরের বছর জুন মাসে ১৫ নং ব্লকের জন্যও উৎপাদন বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষর করে। এই দুটি ব্লক চট্টগ্রামের আংশিক স্থলভাগ এবং সন্নিহিত সমুদ্রবক্ষের এলাকা নিয়ে গঠিত। ১৯৯৭ সালের জানুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের হালিবার্টন এনার্জি, কেয়ার্ন ও হল্যান্ড সি সার্চে-এর যৌথ উদ্যোগ ১৬ নং ব্লকের অধীন সাঙ্গু গ্যাসক্ষেত্রের উন্নয়নে যুক্ত হয়। ১৯৯৯ সালে কেয়ার্ন এনার্জির পিএসসি অধিকার শেল অয়েল কোম্পানির কাছে হস্তান্তরিত হয়। ১৯৯৫ সালে অক্সিডেন্টাল সিলেট অঞ্চলের (সুরমা বেসিনে) ১২, ১৩ ও ১৪ নং ব্লকের জন্য পিএসসি স্বাক্ষর করে, কিন্তু ১৯৯৯-এ তা ইউনোকলের কাছে হস্তান্তরিত করে। ১৯৯৭ সালের জানুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের তুলনামূলকভাবে অখ্যাত দুটি কোম্পানি রেক্সউড এবং অকল্যান্ড কক্সবাজার, টেকনাফ অঞ্চলের ৮০% সমুদ্রগর্ভে বিস্তৃত ১৭ ও ১৮ নং ব্লকের জন্য পেট্রোবংলার সঙ্গে পিএসসি স্বাক্ষর করে। পরবর্তীকালে রেক্সউড অকল্যান্ডের সঙ্গে একীভূত হয়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের অপর একটি ক্ষুদ্র তেল কোম্পানি ইউনাইটেড মেরিডিয়ান কর্পোরেশন (ইউএমসি) ১৯৯৬ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল নিয়ে গঠিত ২২ নং ব্লকে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য পিএসসি স্বাক্ষর করে। পরবর্তীতে ইউএমসি  যুক্তরাষ্ট্রের আরেক কোম্পানি ওশেন এনার্জির কাছে তার অধিকার হস্তান্তর করে। বর্তমানে ১৭ ও ১৮ নং ব্লকের পুরো অংশ পরিত্যক্ত হয়েছে।

সম্পাদিত পিএসসি-সমূহের আওতায় অক্সিডেন্টাল-ইউনোকলের উদ্যেগে সুরমা বেসিনে বিবিয়ানা ও মৌলভীবাজার এবং কেয়ার্ন এনার্জির উদ্যোগে সাঙ্গু (সমুদ্রবক্ষে) গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়। এই দুটি গ্যাসক্ষেত্র থেকে জাতীয় গ্যাস পাইপলাইনে প্রতিদিন ২০০ মিলিয়ন ঘনফুটের বেশি গ্যাস সরবরাহ সম্ভব হয়েছে। দেশের প্রতিদিনের মোট গ্যাস উৎপাদনের এক পঞ্চমাংশ এখন উক্ত দুটি গ্যাসক্ষেত্র থেকে উৎপাদিত হচ্ছে। ১৯৯৭ সালের মধ্যে কেয়ার্ন ও অক্সিডেন্টাল পেট্রোবাংলার সঙ্গে গ্যাস ক্রয়-বিক্রয় চুক্তি স্বাক্ষর করে এর মাধ্যমে পেট্রোবাংলার পরিচালনাধীন জাতীয় গ্যাস সঞ্চালন ও বিতরণ  সিস্টেমে গ্যাস সরবরাহ সম্ভব হয়েছে। ১৯৯৬ ও ১৯৯৭ সময়কালে গ্যাস খাতে সরকার  ও প্রাইভেট সেক্টরের প্রতিষ্ঠানসমূহের ব্যাপক উৎসাহের কারণে বাংলাদেশের পেট্রোলিয়াম খাত শীর্ষস্থানীয় আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারিদের আকৃষ্ট করে।

এ পটভূমিতে পেট্রোলিয়াম অনুসন্ধানে উৎসাহ প্রদানের লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে লন্ডন ও হিউস্টনে বৈঠক অনুষ্ঠানের একই বছরের এপ্রিল মাসে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহবানের ঘোষণা দেওয়া হয়। ১৯৯৭ সালের ১৫ জুলাই তারিখের মধ্যে অবশিষ্ট ১৫টি ব্লকের জন্য ১৯৯৭ সালের পরিমার্জিত মডেল পিএসসি অনুযায়ী আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানিগুলিকে দরপত্র পেশ করার আহবান জানানো হয়। দরপত্র পেশ করার আহবানে সাড়া দেওয়া কোম্পানির সংখ্যা ২৩ হলেও এ সকল কোম্পানির অনেকগুলিই তেমন নামকরা ছিল না। কোনো কোনটি সম্ভবত প্রথমবারের মতো অনুসন্ধানকারী  কোম্পানি হিসেবে নিজেকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। তাল্লো অয়েল কোম্পানি, হনডো অয়েল এন্ড গ্যাস, সাউথ এশিয়া অয়েল এন্ড গ্যাস, নিকো রিসোর্সেস, ট্রাইটন ও প্যানাজিয়া, মায়েরস্ক অয়েল কোম্পানির মতো প্রতিষ্ঠানগুলি নতুন প্রতিষ্ঠান হিসেবেই চিহ্নিত। তবে এই দরপত্রে সাড়া দেওয়া টেক্সাকো, শেল, মবিল, সেভরন ইউনোক্যাল ও এনরন বিশ্বের পেট্রোলিয়াম অনুসন্ধান তৎপরতায় পরিচিত নাম। এ সময়ে ১, ২ এবং ২৩ নম্বর ব্লকের জন্য কোনো দরপত্র জমা পড়ে নি। অবশিষ্ট ১২ টি ব্লকের মধ্যে ৯ নম্বর ব্লকের জন্য আগ্রহী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল সর্বাধিক। আগ্রহ বিবেচনায় এর পরই ছিল ১০, ১১, ৬, ৫ ও ৭ (সমুদ্রবক্ষে)  নম্বর ব্লকের অবস্থান। এছাড়াও সমুদ্রবক্ষের ১৯, ২০ ও ২১ নম্বর ব্লকগুলির প্রতিটির জন্য দুটি দরপত্র জমা পড়ে। এ প্রক্রিয়ায় জাতীয় অনুসন্ধান কোম্পানি বাপেক্স-এর জন্য কোনো ব্লক সংরক্ষিত ছিল না। ৩০ এপ্রিল ২০০১ সালের অবধি দ্বিতীয় রাউন্ড তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান ব্লক নিয়ে আলোচনায় দুটি পিএসসির (ইউনিক্যাল এর সঙ্গে ৭ নং ও শেভরন-টেক্সাকো-তাল্লোর সঙ্গে ৯ নম্বর ব্লক) জন্য চুড়ান্ত স্বাক্ষরিত  ও কয়েকটি পিএসসি ( ৫ ও ১০ নম্বর ব্লকের জন্য শেল ও ইউনোক্যাল, ৮ নম্বর ব্লকের জন্য প্যানাজিয়া, ১৯ ও ২০ নম্বর ব্লকের জন্য মায়েরস্ক অয়েলের সঙ্গে) অনুস্বাক্ষরিত হয়। ৯ নম্বর ব্লকের জন্য স্বাক্ষরিত পিএসসিতে এ সময়েই প্রথম জাতীয় প্রতিষ্ঠান বাপেক্সর জন্য ১০ শতাংশ ‘ক্যারিড ওভার’ ইন্টারেস্ট সংরক্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। দ্বিতীয় রাউন্ড বিডিং এর আওতায় সম্পাদিত পিএসসি অনুযায়ী ৯ নম্বর ব্লক অপারেটর নিযুক্ত হয় তাল্লো বাংলাদেশ লিমিটেড। এই পিএসসির ৩০% শেয়ার তাল্লো, ৬০% নিকো রিসোর্সেস ও ১০% কারিড ইন্টারেষ্ট বাপেক্স-এর। এই ব্লকের অধীন ভাঙ্গুরা গ্যাসক্ষেত্র থেকে বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদিত হচ্ছে। এছাড়া অক্সিডেন্টাল এর সাথে প্রথম রাউন্ড বিডিং এর পর স্বাক্ষরিত ১২, ১৩ ও ১৪ নং ব্লক সমূহ ইউনোক্যাল ও পরবর্তীকালে পুরোপুরি শেভরন নামের আন্তর্জাতিক তেল ও গ্যাস কোম্পানির কাছে হস্তান্তর হয়। এই ব্লকগুলিতে আবিষ্কৃত গুরুত্বপূর্ণ জালালাবাদ, মৌলভীবাজার ও বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র। কেবল বিবিয়ানা থেকে প্রতিদিন প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদিত হচ্ছে। তাছাড়া জালালাবাদ থেকে ২৩০ ও মৌলভীবাজার গ্যাসক্ষেত্র থেকে আনুমানিক ৭৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদিত হচ্ছে। ইতোপূর্বে আবিষ্কৃত ১৬ নং ব্লকের সাঙ্গু গ্যাসক্ষেত্র থেকে প্রায় ৩৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস প্রতিদিন উত্তোলিত হচ্ছে। বাংলাদেশে কর্মরত আন্তর্জাতিক তেল ও গ্যাস কোম্পানিসমূহ (শেভরন, কেয়ার্ন এনার্জি, তাল্লো, ও নিকো রিসোর্সেস) সম্মিলিতভাবে প্রতিদিন প্রায় ৯৪৩ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন করছে যা মোট উৎপাদিত গ্যাসের অর্ধেকের বেশি।

তেল ও গ্যাস ব্লক নিয়ে চুক্তি স্বাক্ষরে আগ্রহী প্রতিষ্ঠানগুলি তাদের পেশকৃত প্রস্তাবে অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি নিম্নবর্ণিত ৬টি বিষয়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করার জন্য আদিষ্ট হয়। ক. ব্যয় উশুল হার, খ. তেল ও গ্যাসের মুনাফা বণ্টন হার, গ. কর্মসূচি, ঘ. প্রস্তাবিত কর্মসূচীর বিপরীতে দক্ষতার নিশ্চয়তাপত্র, ঙ. আবিষ্কার বোনাস, ও চ. উৎপাদন বোনাস বণ্টন। জমাকৃত দরপত্রসমূহ মূল্যায়নে সরকারকে সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক চার্টাড একাউন্ট্যান্ট ফার্ম আর্থার অ্যান্ডারসনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। এ সময়ে বিপুলসংখ্যক তেল কোম্পানি পেট্রোলিয়াম অনুসন্ধানের জন্য প্রস্তাবসহ বাংলাদেশে এসেছিল। কিন্তু বিশ্ববাজারে তেলের মূল্যে পড়ে যাওয়ায় এবং সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণে অনিশ্চয়তার কারণে বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের  উৎসাহে ভাটা পড়ে। এ প্রক্রিয়াকে আরও জটিল করে তোলে ভারতে পাইপলাইন যোগে গ্যাস রপ্তানির বিষয়টির সঙ্গে সম্পর্কিত বিতর্ক। ১৯৯৫ সালে বিশ্বব্যাংক গ্যাস রপ্তানির অপরিহার্যতার বিষয়টি তুলে ধরে, এ প্রসঙ্গে যুক্তি ছিল যে, পিএসসির অধীনে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ব্যাপকহারে শুধু নিজ দেশে গ্যাস বিক্রয়ের উদ্যোগ নিলে বাংলাদেশ মূল্য পরিশোধের দায়জনিত আর্থিক ভারসাম্যের সংকটে পড়বে। প্রায় একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানিগুলি শুরুতে গ্যাস রপ্তানির প্রসঙ্গটি তাদের আলোচ্যসুচির অন্তর্গত না রাখলেও বাংলাদেশ গ্যাস সরবরাহের তৈরি বাজার না থাকার কারণে বিনিয়োগ অনাকর্ষণীয় বলে উল্লেখ করা শুরু করে। তবে গ্যাস রপ্তানির মতো পর্যাপ্ত মজুত নেই। বরং দেশে গ্যাসের বাজার সম্প্রসারণের যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকায় বিদেশে গ্যাস রপ্তানি করে বিদ্যমান মজুত দ্রুত নিঃশেষ করা প্রজ্ঞাপ্রসূত কাজ হবে না বলে মত প্রকাশিত হয়। ২০১০ সালে এসে দেখা যায়, দেশে সম্প্রসারিত বাজার ও চাহিদার প্রেক্ষিতে গ্যাস উৎপাদন উল্লেখযোগ্যহারে বৃদ্ধি পেলেও তা চাহিদা সম্পূর্ণ পরিপূরণ করতে পারছে না।

গ্যাস উত্তোলন ২০০১ সালে বিদ্যমান উৎপাদন বণ্টন চুক্তির মডেলে প্রধান শর্ত হচ্ছে:

চুক্তির এলাকা  ব্লকগুলির আয়তন ১,৬৫০ থেকে ১৩,৫০০ বর্গ কিলোমিটার। ভূতাত্ত্বিক বিবেচনায় যৌক্তিক বিবেচিত হলে দুটি ব্লক অভিন্ন পিএসসি-র অধীন হতে পারে। সমুদ্রবক্ষের ব্লক হলে দুয়ের অধিক ব্লকও একটি পিএসসি-র অন্তভুক্ত হতে পারে। প্রতিটি ব্লকের জন্য পৃথক কর্মসূচী প্রয়োজন।

অনুসন্ধান সময়কাল  সাত বছর (মুলত তিন বছর, তবে দুই বছর করে দুই দফা অতিরিক্ত সময়কাল বরাদ্ধ দেওয়া হতে পারে)।

উৎপাদন  তেলক্ষেত্রের বেলায় প্রতিটি এলাকার জন্য চুক্তি স্বাক্ষরের তারিখ থেকে ২৫ বছর এবং গ্যাস ক্ষেত্রের বেলায় উভয় পক্ষের সম্মতি সাপেক্ষে প্রতিটি গ্যাসফিল্ডের জন্য এ মেয়াদ কাল আরও পাঁচ বছর বাড়ানো যেতে পারে।

পরিত্যাগ  চুক্তিবদ্ধ এলাকার ২৫% চুক্তিকালের তৃতীয় বছরান্তে এবং আরও ২৫% পঞ্চম বছরান্তে পরিত্যাগ করতে হবে। উৎপাদন এলাকা বর্হিভূত অবশিষ্ট সকল চুক্তি বদ্ধ অঞ্চল চুক্তির মেয়াদের সপ্তম বছরান্তে পরিত্যাগের বাধ্যবাধকতা বহাল রাখা হয়েছে। প্রাথমিক অনুসন্ধান সময়ের তিন বছরের মধ্যে চুক্তির ঠিকাদার একটি অনুসন্ধান কুপখনন সম্পূর্ণ করলে তাকে প্রথম পরিত্যাগের বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি দেওয়া যেতে পারে।

মুনাফা স্থানান্তর  পিএসসি চুক্তির শর্তানুযায়ী সকল মুনাফা ঠিকাদার নিজ দেশে স্থানান্তর করতে পারবে।

উৎপাদন বন্টন  পেট্রোবাংলা ও ঠিকাদার চুক্তিবদ্ধ এলাকায় উৎপাদিত পেট্রোলিয়াম উভয়ের সম্মতি-সাপেক্ষে প্রতিদিনের গড় উৎপাদনের ভিত্তিতে পর্যায়ক্রমে ব্যয় উশুলের আগে বণ্টন করবে।

ব্যয় উশুল তেল-এর জন্য ৪০% এবং গ্যাস এর জন্য ৫০% ব্যয় উশুলের বিষয়টি দরপত্রে উল্লিখিত হতে পারে।

গ্যাসের মূল্য নির্ধারণ তেলক্ষেত্র থেকে সহযোগী উৎপাদন হিসেবে গ্যাস আহরিত হলে তার মূল্য নিরূপিত হবে উৎপাদন ব্যয় ও তার সঙ্গে উভয়পক্ষের সম্মতি-সাপেক্ষে গৃহীত ব্যয়সমুহের ভিত্তিতে। গ্যাসক্ষেত্রের উৎপাদিত গ্যাসের মূল্য নিরূপনের বেলায় আন্তর্জাতিক বাজারে উচ্চমাত্রায় সালফারযুক্ত জ্বালানি তেলের মূল্যেও ৭৫% এবং উভয় পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য মূল্যছাড়ের মিলিত অঙ্ক বিবেচিত হবে। সমুদ্রেবক্ষে অনুসন্ধান কার্যক্রম উৎসাহিত করার জন্য উৎপাদিত গ্যাস এবং তেলক্ষেত্রের সহযোগী উৎপাদন হিসেবে প্রাপ্ত গ্যাস উভয়েরই মূল্য নিরূপণের ক্ষেত্রে স্থলভাগের জন্য নির্ধারিত গ্যাসের মূল্যেও ২৫% বেশি আরোপিত হবে।

শুল্ক ও কর  পেট্রোলিয়াম অনুসন্ধান, উন্নয়ন ও উৎপাদনের জন্য আমদানীকৃত সকল যন্ত্রপাতি ও সরবরাহ সামগ্রী আমদানীর ক্ষেত্রে পূর্ণ শুল্ক ছাড় দেওয়া হবে। এছাড়া পিএসসি-চুক্তিতে নির্ধারিত অন্য সকল কর ও কোম্পানির ওপর আরোপযোগ্য কর্পোরেট ট্যাক্স থেকেও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান অব্যাহতি পাবে।

বিনিময়যোগ্য ব্যয়  অপারেশন ব্যয়, অনুসন্ধান ও অপর মূলধনি ব্যয়সমুহ।

সরকারের প্রাপ্য  চুক্তিতে সম্মত আবিষ্কার ও উৎপাদন বোনাস। উল্লেখ্য, সরকারকে দেয় বোনাস ব্যয়-উশুলের আওতাভুক্ত বিষয় নয়।

চুক্তির বার্ষিক সার্ভিস ফি  আলোচনা সাপেক্ষ, তবে ব্লক প্রতি ন্যূনতম ৫০,০০০ মার্কিন ডলার। এই ব্যয় অবশ্য ব্যয়-উশুলের আওতাভুক্ত।

বার্ষিক প্রশিক্ষণ ফি  ব্যয়-উশুল আওতাবহির্ভূত ১০০,০০০ মার্কিন ডলার।

গ্যাস রপ্তানি  ঠিকাদার তার ব্যয় উশুল ও লভ্যাংশ হিসেবে পাওয়া গ্যাসের অংশ তরলীকৃত আকারে রপ্তানি করতে পারবে, তবে এক্ষেত্রে দেশের সরকারের সম্মতির শর্তে রপ্তানির বিষয়টি বিবেচিত হবে। পদ্মা ও যমুনা নদীর পশ্চিমাংশে আবিষ্কৃত ও মূল্যায়িত গ্যাসক্ষেত্রের সর্বোচ্চ ১ ট্রিলিয়ন ঘনফুট পরিমাণ রিজার্ভ-সমৃদ্ধ গ্যাস ক্ষেত্র পরিত্যাগ করলে পেট্রোবাংলা ঠিকাদারকে ক্ষতিপূরণ দেবে।

অভ্যন্তরীণ ব্যবহার  ঠিকাদার তার লাভের অংশ থেকে তেলক্ষেত্রে উৎপাদনের ২৫% পর্যন্ত বাজার মূল্যের ১৫% ছাড়ে এবং অবশিষ্ট, যদি অভ্যন্তরীণ বাজারে প্রয়োজন হয়, সম্পূর্ণ বিনিময়যোগ্য মুদ্রায় পূর্ণ বাজারমূল্যে সরবরাহ করবে।

বাংলাদেশের বাণিজ্যিক জ্বালানিখাত ও অর্থনীতি অতিমাত্রায় প্রাকৃতিক গ্যাস নির্ভর। অপরদিকে দীর্ঘ সময় ধরে প্রাকৃতিক গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনে নগণ্য বিনিয়োগ হয়েছে। ফলে দেশে নিয়মিত প্রাকৃতিক গ্যাসের সরবরাহ ঘাটতি দেখা দিয়েছে। বর্তমান হারে গ্যাস উৎপাদন অব্যাহত রাখলে ২০১১ সন নাগাদ প্রমানিত ও নির্ণীত মজুদ দিয়ে গ্যাসের চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ অব্যহত রাখা অসম্ভব হবে। সম্ভাব্য গ্যাসের মজুদ ও উত্তোলন নিশ্চিত করা গেলে আগামী ২০১৫ সন পর্যন্ত আবিষ্কৃত গ্যাস নিয়ে চাহিদা পূরণ সম্ভব হবে। এবং অনুমিত মজুদকে বাস্তবে উত্তোলন সম্ভব করা গেলে ২০১৯ সন পর্যন্ত চাহিদা অনুযায়ী গ্যাসের সরবরাহ সম্ভব হবে বলে আশা করা হয়।

একই সময়ে ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণের প্রয়োজনে প্রাকৃতিক তেল ও গ্যাসের অনুসন্ধান কার্যক্রম বাড়ানো অপরিহার্য।

ইতিপূর্বে ১৯৮৯ সনে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য বাংলাদেশকে মোট ২৩টি ব্লকে বিভক্ত করা হয়েছিল। যার ৫টি ব্লক ছিল অগভীর সমুদ্রসীমায় ও ১৭টি স্থলভাগে। দেশের স্থলভাগের তুলনামূলক কার্যক্রম সম্প্রসারণ ও উল্লেযোগ্য পরিমাণ গ্যাসের মজুদ আবিষ্কৃত হলেও সমুদ্রবক্ষে গ্যাস অনুসন্ধানের সাফল্য সীমিত। এই পটভূমিতে ২০০৬ সালে সমুদ্র এলাকায় তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান তৎপরতা নতুন আঙ্গিকে শুরুর উদ্যোগ নেয়া হয়। সে ধারাবাহিকতায় একটি নতুন খসড়া মডেল উৎপাদন বণ্টন চুক্তি বা পিএসসি প্রণয়ন করা হয়। এই খসড়া মডেলে উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছেঃ দেশের সমুদ্র অঞ্চলকে মোট ২৮ টি ব্লকে বিভক্ত করা হয়েছে যার আয়তন ২৬১১ থেকে ৭৪০৩ বর্গ কিলোমিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ; ইতোপূর্বে প্রণীত পিএসসিতে বাধ্যতামূলক কর্মপরিকল্পনা (Mandatory Work Program) ছিল না। কিন্তু নতুন খসড়ায় তা সংযোজন করা হয়েছে; বিদ্যমান পিএসসিতে বাজার মূল্য অনুযায়ী বাংক গ্যারান্টি ও ইন্সুরেন্স সংক্রান্ত সুস্পষ্ট নীতিমালা ছিল না। নতুন খসড়া পিএসসিতে তা সংযোজিত হয়েছে। ব্যয় উশুল বা Cost recovery সংক্রান্ত ধারায় নতুন পিএসসিতে সর্বোচ্চ ৫৫% নির্ধারণ করা হয়েছে। পূর্ববর্তী পিএসসিতে Cost recovery বিডযোগ্য বিষয় ছিল।

অনুরূপভাবে লভ্যাংশ বণ্টন সংক্রান্ত ধারায় বিডযোগ্য ও সমঝোতাযোগ্য লভ্যাংশ বণ্টন ব্যবস্থা পরিবর্তন করে গ্যাসের উৎপাদন হারের বিপরীতে প্রতিক্ষেত্রে লভ্যাংশ বণ্টনের সর্বনিম্ন হার নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। গভীর ও অগভীর সমুদ্রাঞ্চলের জন্য নতুন এই লভ্যাংশ বণ্টন হার যথাক্রমে সর্বনিম্ন ৫০% ও ৫৫%।

এছাড়া নতুন খসড়া পিএসসিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনগুলোর মধ্যে রয়েছে কণ্ট্রাকটরের দায়িত্বে কর্পোরেট ট্যাক্স পরিশোধের বিধান, বাংলাদেশ আরবিট্রশন এ্যাক্ট ২০০১ অনুযায়ী বিরোট নিস্পত্তির ক্ষেত্রে ঢাকায় আরবিট্রেশনের বিধান ও ৫০% বা তার অধিক শেয়ার হস্তান্তরের ক্ষেত্রে পেট্রোবাংলার পূর্বানুমতি নেবার বাধ্যবাধকতা আরোপিত হয়েছে।

নতুন মডেল পিএসসি ২০০৮  এর অধীনে বাংলাদেশের সমুদ্র সীমার ২৮ টি ব্লকে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনে আগ্রহী প্রতিষ্ঠানসমূহকে আমন্ত্রণ জানিয়ে পেট্রোবাংলা ২০০৮ সনের ফেব্রুয়ারি মাসে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। প্রকাশিত বিজ্ঞাপনে সাড়া দেয় ৭টি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানঃ সিএনওওসি চায়না, লংউড্স লিমিটেড, তাল্লো বাংলাদেশ, কমট্রাক সার্ভিসেস, কোরিয়া ন্যাশনাল ওয়েল কোম্পানি, ক্নোকো ফিলিপস ও সানটোস ইন্টারন্যাশনাল।

চিহ্নিত ২৮টি সমুদ্রবক্ষের ব্লকের মধ্যে ১২টি (৪, ৬, ৭, ৮, ১৯ ও ২২-২৮ নং ব্লক) ব্লকের জন্য কোনো দরপত্র জমা পড়েনি। পেট্রোবাংলা ২০০৮ সনের সমুদ্রবক্ষের ব্লকসমূহে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানে আগ্রহী প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রস্তাব বাছাই ও পর্যালোচনা শেষে নির্বাচিত প্রতিষ্ঠান সমূহের সাথে পিএসসি স্বাক্ষরের জন্য সরকারের অনুমোদনের জন্য উত্থাপন করেছে। অনুমোদিত হলে সমুদ্রবক্ষে তেল গ্যাস অনুসন্ধানে নতুন উদ্যোগ শুরু হবে।  [মুশফিকুর রহমান]