ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা

Banglapedia admin (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ১৭:০৮, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা (ময়মনসিংহ জেলা)  আয়তন: ২৮০.৪৩ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৩৩´ থেকে ২৪°৪৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°২৮´ থেকে ৯০°৪৬´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে গৌরীপুর উপজেলা, দক্ষিণে নান্দাইল উপজেলা, পূর্বে কেন্দুয়া উপজেলা, পশ্চিমে ময়মনসিংহ সদর ও ত্রিশাল উপজেলা।

জনসংখ্যা ৩৭৬৩৪৮; পুরুষ ১৮৭২১৭, মহিলা ১৮৯১৩১। মুসলিম ৩৬৪২২৯, হিন্দু ১২০৪৩, খ্রিস্টান ১০ এবং অন্যান্য ৬৬।

জলাশয় পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ, মঘা ও সোয়াই নদী এবং কাইলা, সিন্নি, ডালিয়া এবং দলিয়ার বিল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন ঈশ্বরগঞ্জ থানা গঠিত হয় ১৯৩৬ সালে। এটি উপজেলায় রূপান্তরিত হয় ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
১১ ২৮৪ ২৯৪ ৩৪২৩১ ৩৪২১১৭ ১৩৪২ ৫১.০ (২০০১) ৩৯.৫
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার(%)
১২.৪৮ (২০০১) ১৩ ২৮৬৩১ ২০০২ (২০০১) ৫৮.০
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
- ৫৬০০ - ৪৪.০
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
আঠারবাড়ী ১১ ৫৩৭৭ ১৮২৩১ ১৮৫০৮ ৪৮.৩
ঈশ্বরগঞ্জ ৪০ ৩৬৬২ ১০৭২৯ ১০৪৯৪ ৪২.৮
উচাখিলা ৯৪ ৬৬৫৮ ১৫২৩৯ ১৫৪৭১ ৪১.৩
জাটিয়া ৪৫ ৫৮৪৭ ১৫৫৮৯ ১৫৯২৬ ৩৭.১
তারুন্দিয়া ৯০ ৬৫৭৭ ১৫১০৩ ১৫৫০৭ ৪১.১
বড়হিত ১৩ ৫৮৬৭ ১৪৫০৯ ১৪৮৪১ ৩৩.৬
মগতলা ৬৩ ৫৯৭৫ ১৮১২৯ ১৭৬০০ ৩৯.৯
মাইজবাগ ৫৪ ৭৩৪০ ১৯২১৮ ১৯৭০৭ ৩৮.২
রাজীবপুর ৬৭ ৮২২৭ ১৮৩৩৩ ১৮৪২৫ ৩৭.৪
সরিষা ৭৬ ৫৩২০ ১৩৮০৭ ১৪৪৯৮ ৩৭.৫
সোহাগী ৮৫ ৫৩৯০ ১৩৭৩৭ ১৪১১৬ ৩৭.১

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ ভুলসোমা জামে মসজিদ (১৬০০), নলুয়াপাড়া জামে মসজিদ (১৬২৫)।

ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের ১৬ অক্টোবর ঈশ্বরগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর এক লড়াই হয়। উক্ত লড়াইয়ে পাকসেনাদের গুলিতে ৬জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন । ৯ ডিসেম্বর উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়।

বিস্তারিত দেখুন ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ১।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৩৪৩, মন্দির ১৮; বুশসোমা মসজিদ (১৬০০) ও নলুয়াপাড়া মসজিদ (১৬২৫) উল্লেখযোগ্য।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়হার ৪১.০%; পুরুষ ৪২.৫ %, মহিলা ৩৯.৫%। ডিগ্রি কলেজ ২, কলেজ ৩, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৬, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৪৫, মাদ্রাসা ১০৬। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: ঈশ্বরগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ (১৯৬৮), আলীনগর কারিগরি ও বাণিজ্যিক কলেজ (১৯৯৯), ঈশ্বরগঞ্জ বালিকা বিদ্যালয় ও মহিলা কলেজ (১৯১৯), আঠারবাড়ি মহিমচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১০), বিশ্বেশরী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৬), চরনিখলা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৩), বড়হিত উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০৯), জাটিয়া উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১০), সোহাগী ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫৫), মাইজবাগ পাছপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৩), সাখুয়া আদর্শ বিদ্যানিকেতন (১৯৯০), উচাখিলা উচ্চ বিদ্যালয়, মধুপুর উচ্চ বিদ্যালয়।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী অংকুর, উত্তরণ, প্রস্ত্ততি, কলনাদ, বর্ণমালা, ঈশ্বরগঞ্জ বার্তা, কাঁচামাটিয়া, বিকিরণ।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ১, ক্লাব ২১, সিনেমা হল ২, খেলার মাঠ ১৫।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৭০.৫২%, অকৃষি শ্রমিক ৩.৩৮%, ব্যবসা ১০.২২%, চাকরি ৩.৮৪%, নির্মাণ ০.৮৭%, ধর্মীয় সেবা ০.৩২%, শিল্প ০.৪১%, রেন্ট আন্ড রেমিটেন্স ০.১৮%, পরিবহন ও যোগাযোগ ২.৯০% অন্যান্য ৭.৩৬%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬৪.৪২%, ভূমিহীন ৩৫.৫৮%। শহরে ৫৩.৮৭% এবং গ্রামে ৬৫.৪২% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষিফসল ধান, পাট, গম, আলু, করলা, পটল, মরিচ, সরিষা, পান, ইক্ষু।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি বিরই ধান, খেসারি, কলাই।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, জাম, লিচু, কাঁঠাল, কলা, নারিকেল, তাল, জামরুল।

কুটিরশিল্প তাঁতশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, ওয়েল্ডিং কারখানা, বাঁশ ও কাঠের কাজ উল্লেখযোগ্য।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার  মৎস্য ৪১, গবাদিপশু ১৯, হাঁস-মুরগি ৪৩।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১৮১ কিমি, কাঁচারাস্তা ৩০৩ কিমি। রেললাইন ১৭ কিমি; রেলস্টেশন ৩।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন ঘোড়া ও গরুর গাড়ি, পালকি, ভুরা (ভেলা)।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৩০; ঈশ্বরগঞ্জ, উচাখিলা, লক্ষ্মীগঞ্জ, সোহাগী, মধুপুর, আঠারবাড়ী, কাটিয়া, কুমারুলী, মাইজবাগ, সুটিয়া ও ঘালবাসা হাটবাজার এবং ঝুলন মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য   ধান, পাট, গম, আলু, কলা।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার ৩০.৩% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে ।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৫.০%, ট্যাপ ০.৫% এবং অন্যান্য ৪.৫%। উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা উপজেলার ৩৬.৬% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৪৮.১% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১৫.৩% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৬, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৯, কমিউনিটি চিকিৎসাকেন্দ্র ৫২, দাতব্য চিকিৎসা কেন্দ্র ৩।

এনজিও ব্র্যাক, আশা, কারিতাস। [মো. আজিজুর রহমান ভূঁইয়া]

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো;  ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।