ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজ

Mukbil (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ০৫:৪৭, ৮ জুন ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজ  রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৭৩-এর অধীনে ১৯৭৪ সালে ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজ প্রতিষ্ঠিত হয়। এর প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু হয় ২৫শে জানুয়ারি ১৯৭৪। এটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম গবেষণা প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি আইবিএস নামে পরিচিত।

বাংলাদেশের সমাজ, সংস্কৃতি, সভ্যতা, রাজনীতি, অর্থনীতি বিষয়ে গবেষণা এবং গবেষণার ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আইবিএস প্রতিষ্ঠিত হয়। আইবিএস-এর উদ্দেশ্য হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের এম.ফিল এবং পিএইচ.ডি ডিগ্রি প্রদানকল্পে বাংলাদেশ সম্পর্কে উচ্চতর গবেষণার ব্যবস্থা করা গবেষণার কাজে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ এবং বাংলাদেশের অন্যান্য গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা; এবং সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, কনফারেন্স, ওয়ার্কশপ ও প্রকাশনার মাধ্যমে বাংলাদেশ বিষয়ক গবেষণা দেশ ও বিদেশে জনপ্রিয় করে তোলা। ১৯৭৪-৭৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে আইবিএস-এর শিক্ষাক্রম শুরু হয়। ১৯৭৫-২০১০ সালে আইবিএস থেকে ২১৯ জন গবেষক পিএইচ.ডি ডিগ্রি এবং ৭৯ জন গবেষক এম.ফিল ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে  ৪১ জন গবেষক পিএইচ.ডি এবং ৮২ জন গবেষক এম.ফিল গবেষণারত আছেন।

আইবিএস-এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সরকারি ও বেসরকারি কলেজের শিক্ষক, প্রশাসন, পুলিশ, বিচার ও কৃষি ক্যাডারের কর্মকর্তা, ব্যাংকার, ডাক্তার, এনজিও কর্মী এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য স্নাতকোত্তর ডিগ্রিপ্রাপ্তরা গবেষণা করতে আসেন। আইবিএস-এর শিক্ষাবর্ষ জুলাই থেকে জুন। ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে এখানে ভর্তি হতে হয়। আসন সংখ্যা এম.ফিল ও পিএইচ.ডি মিলে ৩০টি। এম.ফিল ও পিএইচ.ডি প্রোগ্রামে ভর্তির জন্য আবেদনের ন্যূনতম যোগ্যতা হিসেবে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষা দুটির একটিতে ৫০% ও অন্যটিতে ৫৫% নম্বর থাকতে হবে। এম.ফিল ডিগ্রিধারী, ইউরোপ, আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের এম.এ ডিগ্রিধারী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ের কলেজে ৫ বছরের শিক্ষকতাসহ কোনো স্বীকৃত জার্নালে ৩টি  গবেষণামূলক প্রকাশনা বা কোনো গবেষণা প্রতিষ্ঠানে ৫ বছর চাকরির অভিজ্ঞতাসহ ৩টি গবেষণামূলক প্রকাশনা থাকলে সরাসরি পিএইচ.ডি কোর্সে ভর্তির আবেদন করা যায়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ বছর চাকুরির অভিজ্ঞতাসম্পন্ন শিক্ষকগণ সেকেন্ডমেন্ট-এর মাধ্যমে সরাসরি পিএইচ.ডি কোর্সে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান। এম.ফিল কোর্সের মেয়াদ ন্যূনতম ২ বছর থেকে সর্বোচ্চ ৫ বছর এবং পিএইচ.ডি কোর্সের মেয়াদ ন্যূনতম ৩ বছর থেকে সর্বোচ্চ ৬ বছর। তবে পুনরায় ভর্তির মাধ্যমে এম.ফিল ও পিএইচ.ডি কোর্সের জন্য মেয়াদকাল যথাক্রমে ১ বৎসর ও ২ বৎসর বৃদ্ধি করা হয়। উভয় কোর্সের জন্য বৃত্তি প্রদান করা হয়।

আইবিএস কর্তৃক আয়োজিত বিভিন্ন সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, ওর্য়াকশপে দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষক এবং বিভিন্ন সরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে বিশেষজ্ঞগণ যোগদান করেন। আইবিএস-এ বিভিন্ন বিষয়ে বক্তৃতামালার আয়োজন করা হয়। এতে ভিজিটিং প্রফেসর আমন্ত্রণ জানানোর বিধান আছে। ইতিহাসবিদ প্রফেসর আবদুল করিম এক বছর (১৯৯০) এখানে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে কাজ করেন। ১৯৭৬ সাল থেকে আইবিএস একটি বাৎসরিক ইংরেজি গবেষণা পত্রিকা প্রকাশ করে আসছে। ১৯৯৪ সাল থেকে একটি বাংলা গবেষণা পত্রিকাও প্রকাশিত হচ্ছে। এছাড়া আইবিএস নিয়মিত গবেষণা গ্রন্থ প্রকাশ করে চলেছে।

আইবিএস  রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের পূর্বাংশে অবস্থিত। আইবিএস চত্বরে আছে ১৫,০০০ বর্গফুট আয়তনের তিনতলা প্রশাসনিক ভবন, ২১,০০০ বর্গফুট আয়তনের চারতলা হোস্টেল ভবন এবং সপরিবারে বাস করার জন্য ১২,০০০ বর্গফুট আয়তনের চারতলা হোস্টেল ভবন। প্রশাসনিক ভবনে  গ্রন্থাগার, একটি সেমিনার ও একটি শ্রেণিকক্ষ আছে।

[মোঃ মাহবুবর রহমান]