হোসেন, খালিদ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

("right|thumbnail|200px|Khalid Hossain '''হোসেন, খালিদ''' (১৯৪৫-২০১৯) বাংলা সংগীতের জগতে বিশেষ করে নজরুল সংগীতের উজ্জ্বল নক্ষত্র খালিদ হোসেন। তিনি একাধারে একজন সাধক শিল্পী এবং সংগীত শিক্ষক..." দিয়ে পাতা তৈরি)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Image:HossainKhalid.jpg|right|thumbnail|200px|Khalid Hossain]]
[[Image:HossainKhalid.jpg|right|thumbnail|200px|খালিদ হোসেন]]
'''হোসেন, খালিদ''' (১৯৪৫-২০১৯)  বাংলা সংগীতের জগতে বিশেষ করে নজরুল সংগীতের উজ্জ্বল নক্ষত্র খালিদ হোসেন। তিনি একাধারে একজন সাধক শিল্পী এবং সংগীত শিক্ষক হিসেবে সুপ্রসিদ্ধ ছিলেন। শিক্ষকতা সকল শিল্পীর পক্ষে সম্ভব হয় না, কেননা এ জন্য পরিশ্রম, নিষ্ঠা আর ধৈর্যের  আবশ্যক হয়। তিনি তাঁর মেধা ও অর্জনকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে নিষ্ঠার সঙ্গে বিলিয়ে দিয়ে গেছেন।
'''হোসেন, খালিদ''' (১৯৪৫-২০১৯)  বাংলা সংগীতের জগতে বিশেষ করে নজরুল সংগীতের উজ্জ্বল নক্ষত্র খালিদ হোসেন। তিনি একাধারে একজন সাধক শিল্পী এবং সংগীত শিক্ষক হিসেবে সুপ্রসিদ্ধ ছিলেন। শিক্ষকতা সকল শিল্পীর পক্ষে সম্ভব হয় না, কেননা এ জন্য পরিশ্রম, নিষ্ঠা আর ধৈর্যের  আবশ্যক হয়। তিনি তাঁর মেধা ও অর্জনকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে নিষ্ঠার সঙ্গে বিলিয়ে দিয়ে গেছেন।


শিল্পী খালিদ হোসেন-এর পিতা মুন্সী মুহাম্মদ শামসুজ্জোহা, মাতা রহিমা খাতুন। পিতা ব্যবসায়ী ছিলেন। খালিদ হোসেনের জন্ম ৪ঠা ডিসেম্বর ১৯৪৫ কলকাতা কলেজ স্ট্রিটে। ৬ বোন ও ৩ ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন ২য়। শৈশব কেটেছে পশ্চিমবঙ্গের কৃষ্ণনগরে তাঁর পৈত্রিক বাড়িতে। আধুনিক বাংলা গান, হামদ্, নাত ইত্যাদি দিয়ে তাঁর শিল্পীজীবন শুরু। পরবর্তীতে তিনি নজরুল সংগীতের চর্চা শুরু করেন।
শিল্পী খালিদ হোসেন-এর পিতা মুন্সী মুহাম্মদ শামসুজ্জোহা, মাতা রহিমা খাতুন। পিতা ব্যবসায়ী ছিলেন। খালিদ হোসেনের জন্ম ৪ঠা ডিসেম্বর ১৯৪৫ কলকাতা কলেজ স্ট্রিটে। ৬ বোন ও ৩ ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন ২য়। শৈশব কেটেছে পশ্চিমবঙ্গের কৃষ্ণনগরে তাঁর পৈত্রিক বাড়িতে। আধুনিক বাংলা গান, হামদ্, নাত ইত্যাদি দিয়ে তাঁর শিল্পীজীবন শুরু। পরবর্তীতে তিনি নজরুল সংগীতের চর্চা শুরু করেন।


তিনি সি.এম.এস সেন্ট জন্্স স্কুলে পড়াশুনা করেন। কিশোর বয়স তিনি কলকাতার কলেজ ষ্ট্রিটে কাটিয়েছেন। তিনি মিত্র ইনস্টিটিউশন থেকে আই.এ পাশ করেন। কিশোর বয়স থেকেই তাঁর মধ্যে শিল্প, সংস্কৃতি ও সুকুমার বৃত্তির উন্মেষ ঘটে। স্কুলে তিনি গান ও আবৃত্তি করতেন। তাঁর বাংলা শিক্ষক কবি কৃষ্ণদয়াল বসু ও ভুদেব ভট্টাচার্য অত্যন্ত যতœসহকারে তাঁকে আবৃত্তি শিক্ষা দিতেন। ফলে তিনি নিয়মিত স্কুলের অনুষ্ঠানে আবৃত্তি করতেন। শৈশব থেকে দেশী-বিদেশী স্ট্যাম্প সংগ্রহ করা তাঁর অন্যতম নেশা ছিল। তিনি ফুটবল খেলতে ভালবাসতেন। বন্ধুরা মিলে ‘নবযুগ স্পোটিং ক্লাব’ নামে একটি ফুটবল ক্লাবও প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
তিনি সি.এম.এস সেন্ট জন্স স্কুলে পড়াশুনা করেন। কিশোর বয়স তিনি কলকাতার কলেজ ষ্ট্রিটে কাটিয়েছেন। তিনি মিত্র ইনস্টিটিউশন থেকে আই.এ পাশ করেন। কিশোর বয়স থেকেই তাঁর মধ্যে শিল্প, সংস্কৃতি ও সুকুমার বৃত্তির উন্মেষ ঘটে। স্কুলে তিনি গান ও আবৃত্তি করতেন। তাঁর বাংলা শিক্ষক কবি কৃষ্ণদয়াল বসু ও ভুদেব ভট্টাচার্য অত্যন্ত যতœসহকারে তাঁকে আবৃত্তি শিক্ষা দিতেন। ফলে তিনি নিয়মিত স্কুলের অনুষ্ঠানে আবৃত্তি করতেন। শৈশব থেকে দেশী-বিদেশী স্ট্যাম্প সংগ্রহ করা তাঁর অন্যতম নেশা ছিল। তিনি ফুটবল খেলতে ভালবাসতেন। বন্ধুরা মিলে ‘নবযুগ স্পোটিং ক্লাব’ নামে একটি ফুটবল ক্লাবও প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।


কুষ্টিয়াকে তিনি তাঁর দ্বিতীয় জন্মস্থান বলতেন। পারিবারিকভাবে রক্ষণশীল মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করলেও পরিবারের সকলেই সংগীতপ্রেমী ছিলেন। তাঁদের বাড়িতে রেডিও, রেকর্ড প্লেয়ার (গ্রামোফোন) সবই ছিল। তবে, রক্ষণশীল মুসলিম পরিবারে সেকালে বাড়িতে হারমোনিয়াম-তবলা বাজিয়ে সংগীত চর্চার বিষয়টি ছিল অত্যন্ত কঠিন।
কুষ্টিয়াকে তিনি তাঁর দ্বিতীয় জন্মস্থান বলতেন। পারিবারিকভাবে রক্ষণশীল মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করলেও পরিবারের সকলেই সংগীতপ্রেমী ছিলেন। তাঁদের বাড়িতে রেডিও, রেকর্ড প্লেয়ার (গ্রামোফোন) সবই ছিল। তবে, রক্ষণশীল মুসলিম পরিবারে সেকালে বাড়িতে হারমোনিয়াম-তবলা বাজিয়ে সংগীত চর্চার বিষয়টি ছিল অত্যন্ত কঠিন।

১৪:৫৮, ২ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

খালিদ হোসেন

হোসেন, খালিদ (১৯৪৫-২০১৯) বাংলা সংগীতের জগতে বিশেষ করে নজরুল সংগীতের উজ্জ্বল নক্ষত্র খালিদ হোসেন। তিনি একাধারে একজন সাধক শিল্পী এবং সংগীত শিক্ষক হিসেবে সুপ্রসিদ্ধ ছিলেন। শিক্ষকতা সকল শিল্পীর পক্ষে সম্ভব হয় না, কেননা এ জন্য পরিশ্রম, নিষ্ঠা আর ধৈর্যের আবশ্যক হয়। তিনি তাঁর মেধা ও অর্জনকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে নিষ্ঠার সঙ্গে বিলিয়ে দিয়ে গেছেন।

শিল্পী খালিদ হোসেন-এর পিতা মুন্সী মুহাম্মদ শামসুজ্জোহা, মাতা রহিমা খাতুন। পিতা ব্যবসায়ী ছিলেন। খালিদ হোসেনের জন্ম ৪ঠা ডিসেম্বর ১৯৪৫ কলকাতা কলেজ স্ট্রিটে। ৬ বোন ও ৩ ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন ২য়। শৈশব কেটেছে পশ্চিমবঙ্গের কৃষ্ণনগরে তাঁর পৈত্রিক বাড়িতে। আধুনিক বাংলা গান, হামদ্, নাত ইত্যাদি দিয়ে তাঁর শিল্পীজীবন শুরু। পরবর্তীতে তিনি নজরুল সংগীতের চর্চা শুরু করেন।

তিনি সি.এম.এস সেন্ট জন্স স্কুলে পড়াশুনা করেন। কিশোর বয়স তিনি কলকাতার কলেজ ষ্ট্রিটে কাটিয়েছেন। তিনি মিত্র ইনস্টিটিউশন থেকে আই.এ পাশ করেন। কিশোর বয়স থেকেই তাঁর মধ্যে শিল্প, সংস্কৃতি ও সুকুমার বৃত্তির উন্মেষ ঘটে। স্কুলে তিনি গান ও আবৃত্তি করতেন। তাঁর বাংলা শিক্ষক কবি কৃষ্ণদয়াল বসু ও ভুদেব ভট্টাচার্য অত্যন্ত যতœসহকারে তাঁকে আবৃত্তি শিক্ষা দিতেন। ফলে তিনি নিয়মিত স্কুলের অনুষ্ঠানে আবৃত্তি করতেন। শৈশব থেকে দেশী-বিদেশী স্ট্যাম্প সংগ্রহ করা তাঁর অন্যতম নেশা ছিল। তিনি ফুটবল খেলতে ভালবাসতেন। বন্ধুরা মিলে ‘নবযুগ স্পোটিং ক্লাব’ নামে একটি ফুটবল ক্লাবও প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

কুষ্টিয়াকে তিনি তাঁর দ্বিতীয় জন্মস্থান বলতেন। পারিবারিকভাবে রক্ষণশীল মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করলেও পরিবারের সকলেই সংগীতপ্রেমী ছিলেন। তাঁদের বাড়িতে রেডিও, রেকর্ড প্লেয়ার (গ্রামোফোন) সবই ছিল। তবে, রক্ষণশীল মুসলিম পরিবারে সেকালে বাড়িতে হারমোনিয়াম-তবলা বাজিয়ে সংগীত চর্চার বিষয়টি ছিল অত্যন্ত কঠিন।

তাঁর সংগীত গুরু ছিলেন ওস্তাদ ওসমান গনি। তিনি প্রত্যহ ভোরবেলা সাইকেলে করে তাঁর কাছে গিয়ে রেয়াজ করতেন। এভাবে বহু সময় পার হয়। অতঃপর বেতারে অনুষ্ঠান শুরু করার পর বাড়িতে সংগীতের যন্ত্রপাতি আনা শুরু হয়। এরপর তিনি মেদিনীপুর থেকে আগত আবু বকর খানের কাছে সংগীতে তালিম নেন। আবু বকর ছিলেন আধুনিক গানের এক কিংবদন্তীতূল্য শিল্পী। তার সৃষ্ট গানের মধ্যে ‘সেই চম্পা নদীর তীরে, ‘কথা দিলাম আজ রাতে’ উল্লেখযোগ্য। শিল্পী খালিদ হোসেনের কণ্ঠে গাওয়া ‘সেই চম্পা নদীর তীরে’ গানটি একটি আধুনিক গানের মাইল ফলক, যা আজো সকলের কানে ধ্বনিত হয়। তাঁর সুরারোপিত গানগুলো বেশির ভাগই ছিল কবি আজিজুর রহমান ও আবু হেনা মোস্তফা কামালের লেখা। গুণী শিল্পী আবু বকর খানের মাত্র ২৭ বছরে জীবনাবসান ঘটে। এরপর খালিদ ঢাকায় পি.সি গোমেজের কাছে উচ্চাঙ্গসংগীতে তালিম নেন। ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দের পর্ব-পর্যন্ত তিনি কুষ্টিয়া থেকে যাতায়াত করে ঢাকায় অনুষ্ঠান করতেন। ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দের শেষার্ধে তিনি ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। জীবন-জীবিকার জন্যে তিনি ঢাকা এসেই এয়ারপোর্ট রোডের আওলাদ হোসেন মার্কেটে ‘ফার্মাকো’ নামে একটি ঔষধের দোকান চালু করেন। কিন্তু সময়ের অভাবে এর যথাযথ তত্ত্ববধায়ন না হওয়ায় তা বন্ধ করে দেয়া হয়। ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে বেতার ভবন ছিল নাজিমউদ্দীন রোডে। সেখানে একই দিনে তিনি আধুনিক গান, নজরুলগীতি ও রবীন্দ্রসংগীত গাইতেন। প্রথম দিকে তিনি একাধারে রবীন্দ্রসংগীতও করতেন এবং তা বহুদিন পর্যন্ত ধরে রেখেছিলেন। পরের দিকে নজরুলসংগীতের প্রতি বেশি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন এবং নজরুলের কালজয়ী সব গানই বিশেষ মাধুর্য নিয়ে তাঁর কণ্ঠে পরিবেশিত হয়।

ভারতের কালজয়ী সব শিল্পী যেমন ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, শ্যামল মিত্র, সতীনাথ মুখোপাধ্যায়, মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়, জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষ, আলপনা বন্দোপাধ্যায়, প্রতিমা বঙ্গোপাধ্যায়, উৎপলা সেন, কৃষ্ণচন্দ্র দে এঁদের সবার সান্নিধ্য তিনি বিভিন্নভাবে পেয়েছিলেন।

পরবর্তীতে, স্বাধীন বাংলাদেশের কিংবদন্তীশিল্পী ওস্তাদ মাস্তান গামা, ওস্তাদ গুল মোহাম্মদ খান, ওস্তাদ আয়াত আলী খান, পণ্ডিত বারীন মজুমদার, আখতার সাদমানী, আবুল আহাদ, খাদেম হোসেন, সোহরাব হোসেন, আবেদ হোসেন খান, সুধীন দাস, সমর দাস প্রমুখের সান্নিধ্য পেয়েছিলেন।

শিল্পী আব্বাস উদ্দীন আহমেদের সঙ্গে তাঁর বাবার সখ্যতা ছিল। সে সুবাদে তাঁর সঙ্গেও সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। শিল্পী আব্বাসউদ্দীন তাঁর গান শুনে বলেছিলেন ‘তুমি একদিন নামকরা শিল্পী হবে’-এ উক্তি তাঁর সংগীতজীবনে ছিল এক বিশাল প্রেরণা।

তিনি বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের একজন নিয়মিত সংগীতশিল্পী ও পরিচালক ছিলেন। সরকারি সংগীত কলেজে তিনি দীর্ঘ ত্রিশ বছর শিক্ষকতা করেন এবং বহু ছাত্র-ছাত্রী তৈরি করেন, যারা বর্তমানে বিশিষ্ট শিল্পী হিসেবে দেশে সুপ্রতিষ্ঠিত। যেমন ইয়াকুব আলী খান, লীনা তাপসী খান প্রমুখ। সংগীত কলেজে ১৯৭৪ সাল থেকে যুক্ত হয়ে সর্বশেষে তিনি ২০০১ খ্রিস্টাব্দে উপাধ্যক্ষ ও বিভাগীয় প্রধান হিসেবে অবসর নেন। দীর্ঘকাল প্রশিক্ষক হিসেবে হিন্দোল, নজরুল একাডেমী, নজরুল ইন্সটিটিউট-র সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাছাড়া, শিল্পকলা একাডেমীতে সংগীত শিক্ষক প্রশিক্ষণ কোর্স এবং নজরুল ইন্সটিটিউটে শিল্পী প্রশিক্ষক কোর্সের প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ নজরুলসংগীত শিল্পী সংস্থার সভাপতি ছিলেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ টেক্সট বুক বোর্ড কর্তৃক অর্পিত সংগীত বিষয়ক দায়িত্ব তিনি সানন্দে পালন করেছেন।

শিল্পী খালিদ হোসেন সংগীত বিষয়ক নানা পুস্তক, সাময়িকী ও পত্র-পত্রিকায় সংগীতের তথ্য ও তত্ত্ব বিষয়ক প্রবন্ধ রচনা করেছেন। তিনি নজরুল ইন্সটিটিউটে আদি সুরভিত্তিক নজরুল স্বরলিপি প্রমাণীকরণ পরিষদের সদস্য ও ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ছিলেন। নজরুল ইন্সটিটিউট, হিজ মাষ্টার্স ভয়েস, কলম্বিয়া থেকে তাঁর রেকর্ড, সিডি ক্যাসেট প্রকাশিত হয়েছে। নজরুল সংগীত ছাড়াও আধুনিক গান, ভক্তিমূলক গান, হারানো দিনের গান, বিশেষ করে ইসলামী গানে তিনি এক ভিন্ন মাত্রা তৈরি করেছিলেন, যা আজো বহমান।

নজরুল সংগীতে আদি শুদ্ধ ও সঠিক সুর রক্ষণাবেক্ষণে তিনি ছিলেন অত্যন্ত সতর্ক এবং নীতিমালায় বিশ্বাসীদের একজন। তাঁর সংগীত সাধনার স্বীকৃতি হিসেবে তিনি একাধিক পদক ও সম্মাননা লাভ করেন। এর মধ্যে একুশে পদক, নজরুল ইন্সটিটিউট পদক, জাতীয় কবি নজরুল সমাজ স্বর্ণপদক, আনন্দধারা স্বর্ণপদক, নজরুল একাডেমী পদক, বিশ্বসংগীত দিবস পদক, কবি তালিম হোসেন ট্রাস্ট, বেগম জেবুন্নেছা ও কাজী মাহবুব উল্লাহ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী, কবিতীর্থ চুরুলিয়া নজরুল একাডেমী, জাতীয় প্রেসক্লাব পদক উল্লেখযোগ্য। ইউডা, চ্যানেল আই ও আই.এফ.আই.সি ব্যাংক থেকে আজীবন সম্মাননা, বাংলাদেশ টেলিভিশন সম্মাননা, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও নর্দান ইউনিভার্সিটি থেকে সম্মাননা লাভ করেন।

সংগীত পরিবেশনার জন্যে তিনি কলকাতা, বর্ধমান চুরুলিয়া, যুক্তরাজ্য, করাচী, হায়দারাবাদ, লাহোর, মুলতান, ইসলামাবাদ, রাওয়ালপিণ্ডি ইত্যাদি বিভিন্ন স্থানে যান। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও তাঁকে ভালবাসতেন। বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠপুত্র শেখ কামালের সঙ্গে তার সখ্যতা ছিল।

তাঁর স্ত্রীর নাম সাহানা হোসেন। তিনি এই গুণী শিল্পীর জীবনে পৃষ্ঠপোষকতায় অনন্য ভূমিকা রাখেন। তাঁদের একটি পুত্র, সন্তান নাম আসিফ হোসেন। জীবন পরিচালনায় তিনি ছিলেন অত্যন্ত সাদামাটা মনের। তাঁর মতো সদাহাস্য, বিনয়ী ও ভদ্রসৌম্য শিক্ষক ও শিল্পী সংগীত জগতে খুবই বিরল।

খালিদ হোসেন ২০১৯ সালের ২২শে মে মৃত্যুবরণ করেন। [লীনা তাপসী খান]