হিজলা উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Robot: Automated text replacement (-'''''তথ্যসূত্র''''' +'''তথ্যসূত্র'''))
 
(হালনাগাদ)
 
(একজন ব্যবহারকারী দ্বারা সম্পাদিত ৩টি মধ্যবর্তী সংশোধন দেখানো হচ্ছে না)
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:Table]]
'''হিজলা উপজেলা''' ([[বরিশাল জেলা|বরিশাল জেলা]])  আয়তন: ৫১৫.৩৬ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°৫০´ থেকে ২৩°০৫´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°২৫´ থেকে ৯০°৪৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে গোঁসাইরহাট ও হাইমচর উপজেলা, দক্ষিণে মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা, পূর্বে রায়পুর উপজেলা, পশ্চিমে মুলাদী উপজেলা।
'''হিজলা উপজেলা''' ([[বরিশাল জেলা|বরিশাল জেলা]])  আয়তন: ৫১৫.৩৬ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°৫০´ থেকে ২৩°০৫´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°২৫´ থেকে ৯০°৪৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে গোঁসাইরহাট ও হাইমচর উপজেলা, দক্ষিণে মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা, পূর্বে রায়পুর উপজেলা, পশ্চিমে মুলাদী উপজেলা।


''জনসংখ্যা'' ১৭৪৫০৮; পুরুষ ৮৯৯১৮, মহিলা ৮৪৫৯০। মুসলিম ১৭০১৬৫, হিন্দু ৪৩৩৫ এবং অন্যান্য ৮।
''জনসংখ্যা'' ১৪৬০৭৭; পুরুষ ৭২৭৮৯, মহিলা ৭৩২৮৮। মুসলিম ১৪২৪১৯, হিন্দু ৩৬৫৪, বৌদ্ধ ০,  খ্রিস্টান ৩  এবং অন্যান্য ১।


''জলাশয়'' প্রধান নদী: মেঘনা, জয়ন্তি, নয়াভাঙ্গা, আজিমপুর।
''জলাশয়'' প্রধান নদী: মেঘনা, জয়ন্তি, নয়াভাঙ্গা, আজিমপুর।
১১ নং লাইন: ১০ নং লাইন:
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
! colspan="9" | উপজেলা
| colspan="9" | উপজেলা
|-
|-
! rowspan="2" | পৌরসভা  || rowspan="2" | ইউনিয়ন  || rowspan="2" | মৌজা  || rowspan="2" | গ্রাম  || rowspan="2" | জনসংখ্যা || colspan="2" | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি)  || colspan="2" | শিক্ষার হার (%)
| rowspan="2" | পৌরসভা  || rowspan="2" | ইউনিয়ন  || rowspan="2" | মৌজা  || rowspan="2" | গ্রাম  || rowspan="2" | জনসংখ্যা || colspan="2" | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || colspan="2" | শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| শহর  || গ্রাম  || শহর  || গ্রাম
| শহর  || গ্রাম  || শহর  || গ্রাম
|-
|-
| - || ৭  || ১৩৯  || ১১২  || ১৩৪০৬  || ১৬১১০২  || ৩৩৯  || ৪৪.৬  || ৩৭.
| - || || ৯২ || ৯৪ || ১৪১৮৪ || ১৩১৮৯৩ || ২৮৩ || ৫৬.|| ৩৯.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
| উপজেলা শহর
| colspan="9" | উপজেলা শহর
|-
|-
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| ৮.২৬  || ৩  || ১৩৪০৬  || ১৬২৩  || ৪৪.৬৪
| ৮.৩৬ || ৩  || ১৪১৮৪ || ১৬৯৭ || ৫৬.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
| ইউনিয়ন
| colspan="9" | ইউনিয়ন
|-
|-
! rowspan="2" | ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড  || rowspan="2" | আয়তন (একর)  || colspan="2" | লোকসংখ্যা  || rowspan="2" | শিক্ষার হার (%)
| rowspan="2" | ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড  || rowspan="2" | আয়তন (একর)  || colspan="2" | লোকসংখ্যা  || rowspan="2" | শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| পুরুষ  || মহিলা
| পুরুষ  || মহিলা
|-
| গুয়াবাড়িয়া ৫৪  || ৭৮৯৯  || ১৬০৮৫  || ১৬২৬৫  || ৪৭.৩৫
|-
|-
| কুচাইপট্টি ৮৫  || ৭১৩১  || ১০০০০ || ৯২৬৭  || ২০.১৯
| গুয়াবাড়িয়া ৫৪ || ১৬০৫৫ || ১৪৩১৯ || ১৫৬০১ || ৫০.
 
|-
|-
| ধুলখোলা ২৭ || ৭৪৮৩  || ১২১৮৪ || ১০৭৩১  || ৪৬.৭২
| ধুলখোলা ২৭ || ৯৮৮০ || ৬৯২৮ || ৬৪৭১ || ৪৩.
 
|-
|-
| বড় জালিয়া ১৩ || ৯১২৮  || ১৭২৩০ || ১৬৫৭০  || ৪০.০৩
| বড় জালিয়া ১৩ || ১৪০৭৯ || ১৫৭১১ || ১৫৯৩২ || ৫৬.
 
|-
|-
| মেমানিয়া ৯৪ || ৯২৭২  || ১১৬২২ || ১০৮৭০  || ৩৩.৬০
| মেমানিয়া ৯৪ || ১৭২৯০ || ১২৩৮৭ || ১২৩৪৮ || ৩১.
 
|-
|-
| হরিনাথপুর ৬৭ || ১৪৮৩১  || ১৩৭২৫ || ১৩২৮০  || ৪৪.১৪
| হরিনাথপুর ৬৭ || ১৪৮২০ || ১২০৬২ || ১২৫৬৪ || ৪৫.
 
|-
|-
| হিজলাগৌরবদী ৮১ || ২৯৮৬২  || ৯০৭২ || ৭৬০৭  || ২০.১৯
| হিজলাগৌরবদী ৮১ || ১৭৭৮৪ || ১১৩৮২ || ১০৩৭২ || ২২.
|}
|}
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।


[[Image:HizlaUpazila.jpg|thumb|right|400px]]
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' প্রস্তর নির্মিত বাসুদেব মূর্তি (গোবিন্দপুর)।
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' প্রস্তর নির্মিত বাসুদেব মূর্তি (গোবিন্দপুর)।


''মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি'' ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে এই উপজেলার হিজলা-মুলাদী অঞ্চলে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে বেইছ কমান্ডার কুতুবউদ্দিন ও কাজী আনোয়ার বীর প্রতীকের নেতৃত্বে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা সংঘবদ্ধ হয়। পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন সংঘর্ষে হাবিলদার শাহ আলম, নায়েক আজিজুর রহমান, হাবিলদার নূর মোহাম্মদ ও সিপাহী আবদুল ওয়াজেদ শহীদ হন। তাছাড়া পাল পাড়ার শিক্ষক হোসেন আলী ও দাদপুরের সুলতান জমাদ্দারসহ ৮ জন নিহত হন।
''মুক্তিযুদ্ধ'' ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে এই উপজেলার হিজলা-মুলাদী অঞ্চলে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে বেস কমান্ডার কুতুবউদ্দিন ও কাজী আনোয়ার বীর প্রতীকের নেতৃত্বে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা সংঘবদ্ধ হয়। পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন সংঘর্ষে হাবিলদার শাহ আলম, নায়েক আজিজুর রহমান, হাবিলদার নূর মোহাম্মদ ও সিপাহী আবদুল ওয়াজেদ শহীদ হন। তাছাড়া পাল পাড়ার শিক্ষক হোসেন আলী ও দাদপুরের সুলতান জমাদ্দারসহ ৮ জন নিহত হন। উপজেলায় ১টি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়েছে।
 
[[Image:HizlaUpazila.jpg|thumb|right|হিজলা উপজেলা]]


''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন'' স্মৃতিস্তম্ভ ১।
''বিস্তারিত দেখুন'' হিজলা উপজেলা, ''বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ'', বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ১০।


ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান  মসজিদ ৩২৬, মন্দির ১২। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: শ্রী রামপুর ও শাহনাজপুর গ্রামের মুসলমান জমিদার বাড়ীর মসজিদ, গঙ্গাপুর গ্রামে সুলতান খার মসজিদ ও দরগা।
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান''  মসজিদ ৩২৬, মন্দির ১২। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: শ্রী রামপুর ও শাহনাজপুর গ্রামের মুসলমান জমিদার বাড়ীর মসজিদ, গঙ্গাপুর গ্রামে সুলতান খার মসজিদ ও দরগা।


''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৩৮.%; পুরুষ ৩৯.%, মহিলা ৩৭.৪%। কলেজ ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৮, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৮৮, মাদ্রাসা ৪১। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: হিজলা কলেজ, কাউরিয়া বন্দর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সংহতি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মহিষখোলা সিনিয়র মাদ্রাসা।
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৪০.%; পুরুষ ৩৯.%, মহিলা ৪২.৪%। কলেজ ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৮, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৮৮, মাদ্রাসা ৪১। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: হিজলা কলেজ, কাউরিয়া বন্দর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সংহতি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মহিষখোলা সিনিয়র মাদ্রাসা।


''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী'' হিজলা উপজেলা বার্তা।
''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী'' হিজলা উপজেলা বার্তা।
৮৫ নং লাইন: ৬৯ নং লাইন:
''প্রধান কৃষি ফসল'' ধান, পাট, আখ, হলুদ, মাছ, আলু, শাকসবজি।
''প্রধান কৃষি ফসল'' ধান, পাট, আখ, হলুদ, মাছ, আলু, শাকসবজি।


বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি  সূর্যমুখী, মুগ, কাউন, চীনা, হোগলা পাতা।
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি''  সূর্যমুখী, মুগ, কাউন, চীনা, হোগলা পাতা।


''প্রধান ফল-ফলাদিব'' আম, কাঁঠাল, কলা, কুল, লিচু, জাম, তাল, খেজুর, নারিকেল, পেঁপে, সুপারি, আমড়া।
''প্রধান ফল-ফলাদি'' আম, কাঁঠাল, কলা, কুল, লিচু, জাম, তাল, খেজুর, নারিকেল, পেঁপে, সুপারি, আমড়া।


''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য ৪, গবাদিপশু ২০, হাঁস-মুরগি ৪০।
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য ৪, গবাদিপশু ২০, হাঁস-মুরগি ৪০।


''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৩০ কিমি, কাঁচারাস্তা ১২০ কিমি; নৌপথ ১০৮ নটিক্যাল মাইল।
''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ২৫ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৪৮ কিমি, কাঁচারাস্তা ২৭০ কিমি; নৌপথ ১৮০ কিমি।


''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি, গরুর গাড়ি।
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি, গরুর গাড়ি।
১০১ নং লাইন: ৮৫ নং লাইন:
''হাটবাজার ও মেলা'' হাটবাজার ৩৫। ধুন সিকদার হাট, একতা বাজার, কাইসমা বাজার, চরকিল­ার হাট উল্লেখযোগ্য।
''হাটবাজার ও মেলা'' হাটবাজার ৩৫। ধুন সিকদার হাট, একতা বাজার, কাইসমা বাজার, চরকিল­ার হাট উল্লেখযোগ্য।


''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''   দুগ্ধজাত দ্রব্য, আমড়া, শীতল পাটি, চিংড়ি, সুপারি, ধান, চাল।
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য'' দুগ্ধজাত দ্রব্য, আমড়া, শীতল পাটি, চিংড়ি, সুপারি, ধান, চাল।


''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন বিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ১৭.২৩% (শহরে ৪৫.৬৯% ও গ্রামে ১৪.৯০%) পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন বিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৪১.% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে ।


''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৮৩.২২%, পুকুর ৫.৫০%, ট্যাপ ০.৪৩% এবং অন্যান্য ১০.৮৫%।
''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৮৭.%, ট্যাপ ০.% এবং অন্যান্য ১১.%।


''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৪১.৩৪% (গ্রামে ৩৮.৮২% এবং শহরে ৭২.১২%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৫১.৫১% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। .১৫% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৮০.% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ১৮.% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। .% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।  


''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে­ক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৩, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ১।
''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে­ক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৩, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ১।
১১৫ নং লাইন: ৯৯ নং লাইন:
''এনজিও'' দিশা, আলোর দিশা।  [কে.এম সাইফুল ইসলাম]
''এনজিও'' দিশা, আলোর দিশা।  [কে.এম সাইফুল ইসলাম]


'''তথ্যসূত্র'''   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; হিজলা উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।
'''তথ্যসূত্র''' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; হিজলা উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।


[[en:Hizla Upazila]]
[[en:Hizla Upazila]]

২০:৩৮, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

হিজলা উপজেলা (বরিশাল জেলা)  আয়তন: ৫১৫.৩৬ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°৫০´ থেকে ২৩°০৫´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°২৫´ থেকে ৯০°৪৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে গোঁসাইরহাট ও হাইমচর উপজেলা, দক্ষিণে মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা, পূর্বে রায়পুর উপজেলা, পশ্চিমে মুলাদী উপজেলা।

জনসংখ্যা ১৪৬০৭৭; পুরুষ ৭২৭৮৯, মহিলা ৭৩২৮৮। মুসলিম ১৪২৪১৯, হিন্দু ৩৬৫৪, বৌদ্ধ ০, খ্রিস্টান ৩ এবং অন্যান্য ১।

জলাশয় প্রধান নদী: মেঘনা, জয়ন্তি, নয়াভাঙ্গা, আজিমপুর।

প্রশাসন হিজলা থানা গঠিত হয় ১৯১১ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ৯২ ৯৪ ১৪১৮৪ ১৩১৮৯৩ ২৮৩ ৫৬.৪ ৩৯.১
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৮.৩৬ ১৪১৮৪ ১৬৯৭ ৫৬.৪
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
গুয়াবাড়িয়া ৫৪ ১৬০৫৫ ১৪৩১৯ ১৫৬০১ ৫০.৯
ধুলখোলা ২৭ ৯৮৮০ ৬৯২৮ ৬৪৭১ ৪৩.৫
বড় জালিয়া ১৩ ১৪০৭৯ ১৫৭১১ ১৫৯৩২ ৫৬.৪
মেমানিয়া ৯৪ ১৭২৯০ ১২৩৮৭ ১২৩৪৮ ৩১.২
হরিনাথপুর ৬৭ ১৪৮২০ ১২০৬২ ১২৫৬৪ ৪৫.১
হিজলাগৌরবদী ৮১ ১৭৭৮৪ ১১৩৮২ ১০৩৭২ ২২.৭

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ প্রস্তর নির্মিত বাসুদেব মূর্তি (গোবিন্দপুর)।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে এই উপজেলার হিজলা-মুলাদী অঞ্চলে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে বেস কমান্ডার কুতুবউদ্দিন ও কাজী আনোয়ার বীর প্রতীকের নেতৃত্বে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা সংঘবদ্ধ হয়। পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন সংঘর্ষে হাবিলদার শাহ আলম, নায়েক আজিজুর রহমান, হাবিলদার নূর মোহাম্মদ ও সিপাহী আবদুল ওয়াজেদ শহীদ হন। তাছাড়া পাল পাড়ার শিক্ষক হোসেন আলী ও দাদপুরের সুলতান জমাদ্দারসহ ৮ জন নিহত হন। উপজেলায় ১টি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়েছে।

বিস্তারিত দেখুন হিজলা উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ১০।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান  মসজিদ ৩২৬, মন্দির ১২। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: শ্রী রামপুর ও শাহনাজপুর গ্রামের মুসলমান জমিদার বাড়ীর মসজিদ, গঙ্গাপুর গ্রামে সুলতান খার মসজিদ ও দরগা।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪০.৮%; পুরুষ ৩৯.২ %, মহিলা ৪২.৪%। কলেজ ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৮, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৮৮, মাদ্রাসা ৪১। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: হিজলা কলেজ, কাউরিয়া বন্দর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সংহতি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মহিষখোলা সিনিয়র মাদ্রাসা।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী হিজলা উপজেলা বার্তা।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৩, ক্লাব ১৪, মহিলা সংগঠন ২, সিনেমা হল ১, খেলার মাঠ ১০।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৭৩.৪৩%, অকৃষি শ্রমিক ২.৬১%, শিল্প ০.৫৬%, ব্যবসা ১০.৭%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.০২%, চাকরি ৫.৭২%, নির্মাণ ১.২০%, ধর্মীয় সেবা ০.৩১%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৮% এবং অন্যান্য ৩.৬৫%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬৬.০৫%, ভূমিহীন ৩৩.৯৫%। শহরে ৬৬.০৬% এবং গ্রামে ৬৬.০৫% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, আখ, হলুদ, মাছ, আলু, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি  সূর্যমুখী, মুগ, কাউন, চীনা, হোগলা পাতা।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, কলা, কুল, লিচু, জাম, তাল, খেজুর, নারিকেল, পেঁপে, সুপারি, আমড়া।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৪, গবাদিপশু ২০, হাঁস-মুরগি ৪০।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ২৫ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৪৮ কিমি, কাঁচারাস্তা ২৭০ কিমি; নৌপথ ১৮০ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরুর গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা ধানকল, বিড়ি ফ্যাক্টরি, ওয়েল্ডিং কারখানা।

কুটিরশিল্প লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, মাছ ধরার জাল তৈরির কাজ, নকশী কাঁথা, পটারী শিল্প, বাঁশ ও বেতের কাজ, পাটের হস্তশিল্প, পাটি ও মাদুর শিল্প, আখের গুড় প্রক্রিয়াকরণ কারখানা, শীতল পাটি।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৩৫। ধুন সিকদার হাট, একতা বাজার, কাইসমা বাজার, চরকিল­ার হাট উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য দুগ্ধজাত দ্রব্য, আমড়া, শীতল পাটি, চিংড়ি, সুপারি, ধান, চাল।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন বিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৪১.৪% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে ।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৮৭.৮%, ট্যাপ ০.৩% এবং অন্যান্য ১১.৯%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৮০.১% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ১৮.৬% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১.৩% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে­ক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৩, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ১।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৯৬০ সালের ঘূর্ণিঝড় এবং ১৯৭০ সালের জলোচ্ছ্বাসে উপজেলার ঘরবাড়ি, গবাদিপশু ও ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ১৯৬২ সালের দুর্ভিক্ষে বহু লোকের প্রাণহানি ঘটে।

এনজিও দিশা, আলোর দিশা।  [কে.এম সাইফুল ইসলাম]

তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; হিজলা উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।