হাশেম, এম.এ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
'''হাশেম, এম.এ''' (১৯৪৩-২০২০)  বাংলাদেশের একজন সুপরিচিত ব্যবসায়ী। তিনি ১৯৪৩ সালের ৩০ আগস্ট নোয়াখালীতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তামাক ব্যবসার মাধ্যমে ১৯৬২ সালে তার ব্যবসায়ী জীবন আরম্ভ করেন। পরবর্তীকালে উৎপাদন ও পরিষেবা বিষয়ক যেমন খাদ্য ও পানীয়, রিয়েল এস্টেট, টেক্সটাইল, শিপিং, প্লাস্টিক, কাগজ, পাট, সুতা, তুলা, এরোমেরিন লজিস্টিক, অ্যাগ্রো, গার্মেন্টস, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, গড়ে তোলেন।
'''হাশেম, এম.এ''' (১৯৪৩-২০২০)  বাংলাদেশের একজন সুপরিচিত ব্যবসায়ী। তিনি ১৯৪৩ সালের ৩০ আগস্ট নোয়াখালীতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তামাক ব্যবসার মাধ্যমে ১৯৬২ সালে তার ব্যবসায়ী জীবন আরম্ভ করেন। পরবর্তীকালে উৎপাদন ও পরিষেবা বিষয়ক যেমন খাদ্য ও পানীয়, রিয়েল এস্টেট, টেক্সটাইল, শিপিং, প্লাস্টিক, কাগজ, পাট, সুতা, তুলা, এরোমেরিন লজিস্টিক, অ্যাগ্রো, গার্মেন্টস, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, গড়ে তোলেন।


[[Image:Hashem,MA.jpg|right|thumbnail|200px|এম.এ হাশেম]]
তিনি পারটেক্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি চট্টগ্রামে ১৯৭০-র দশকে শুরুর দিকে মেসার্স হাশেম করপোরেশন প্রতিষ্ঠা করেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরবর্তী সময়ে তিনি নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য যেমন সিমেন্ট, ইস্পাত, লোহা, চিনি, লবন আমদানির ব্যবসা করেন। অতঃপর দেশেই তিনি বিভিন্ন কল-কারখানা নির্মাণ করেন। গড়ে তোলেন পারটেক্স গ্রুপ। এ গ্রুপের পণ্যগুলোর মধ্যে ড্যানিশ কনডেন্সড মিল্ক, মাম পানি, কোমল পানীয় ব্র্যান্ড আরসি জনপ্রিয়তা পেয়েছে।  
তিনি পারটেক্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি চট্টগ্রামে ১৯৭০-র দশকে শুরুর দিকে মেসার্স হাশেম করপোরেশন প্রতিষ্ঠা করেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরবর্তী সময়ে তিনি নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য যেমন সিমেন্ট, ইস্পাত, লোহা, চিনি, লবন আমদানির ব্যবসা করেন। অতঃপর দেশেই তিনি বিভিন্ন কল-কারখানা নির্মাণ করেন। গড়ে তোলেন পারটেক্স গ্রুপ। এ গ্রুপের পণ্যগুলোর মধ্যে ড্যানিশ কনডেন্সড মিল্ক, মাম পানি, কোমল পানীয় ব্র্যান্ড আরসি জনপ্রিয়তা পেয়েছে।  


এম এ হাশেম দেশের সিটি ব্যাংক লিমিটেড এবং ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড নামে দুটি ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। তিনি ব্যাংক দুটির চেয়ারম্যান পদেও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জনতা ইনসুরেন্সেরও একজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। এম.এ হাশেম একজন সফল ও পরিতৃপ্ত মানুষ ছিলেন। দেশের ব্যবসার প্রসার ও শিল্পায়নে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন। অনেক লোকের চাকরির সুযোগ সৃষ্টি করেছেন। একের পর এক শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছেন। দেশের অর্থনৈতিক বুনিয়াদ শক্তিশালী করার জন্য অনেক অবদান রেখেছেন। শিক্ষা ক্ষেত্রেও উদার মনের পরিচয় দিয়েছেন। তিনি নোয়াখালীতে এম.এ হাশেম কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের মধ্যে তিনি একজন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনি ট্র্যাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানও ছিলেন। নর্থ সাউথ দেশের একটি স্বনামধন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়।  
এম.এ হাশেম দেশের সিটি ব্যাংক লিমিটেড এবং ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড নামে দুটি ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। তিনি ব্যাংক দুটির চেয়ারম্যান পদেও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জনতা ইনসুরেন্সেরও একজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। এম.এ হাশেম একজন সফল ও পরিতৃপ্ত মানুষ ছিলেন। দেশের ব্যবসার প্রসার ও শিল্পায়নে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন। অনেক লোকের চাকরির সুযোগ সৃষ্টি করেছেন। একের পর এক শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছেন। দেশের অর্থনৈতিক বুনিয়াদ শক্তিশালী করার জন্য অনেক অবদান রেখেছেন। শিক্ষা ক্ষেত্রেও উদার মনের পরিচয় দিয়েছেন। তিনি নোয়াখালীতে এম.এ হাশেম কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের মধ্যে তিনি একজন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনি ট্র্যাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানও ছিলেন। নর্থ সাউথ দেশের একটি স্বনামধন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়।  


তিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২০০১ সালে নোয়াখালী থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন। এম.এ হাশেম বাংলাদেশের শিল্প-বাণিজ্য ক্ষেত্রে অবদানের পাশাপাশি একজন সংসদ সদস্য থেকে দেশের জন্য নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। ব্যবসা ও শিল্প প্রতিষ্ঠান নির্মাণে, শিক্ষাপ্রসারে, সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে, সমাজসেবা ও রাজনীতিতে সব ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করেছেন।  
তিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২০০১ সালে নোয়াখালী থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন। এম.এ হাশেম বাংলাদেশের শিল্প-বাণিজ্য ক্ষেত্রে অবদানের পাশাপাশি একজন সংসদ সদস্য থেকে দেশের জন্য নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। ব্যবসা ও শিল্প প্রতিষ্ঠান নির্মাণে, শিক্ষাপ্রসারে, সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে, সমাজসেবা ও রাজনীতিতে সব ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করেছেন।  

০৬:৪০, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

হাশেম, এম.এ (১৯৪৩-২০২০) বাংলাদেশের একজন সুপরিচিত ব্যবসায়ী। তিনি ১৯৪৩ সালের ৩০ আগস্ট নোয়াখালীতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তামাক ব্যবসার মাধ্যমে ১৯৬২ সালে তার ব্যবসায়ী জীবন আরম্ভ করেন। পরবর্তীকালে উৎপাদন ও পরিষেবা বিষয়ক যেমন খাদ্য ও পানীয়, রিয়েল এস্টেট, টেক্সটাইল, শিপিং, প্লাস্টিক, কাগজ, পাট, সুতা, তুলা, এরোমেরিন লজিস্টিক, অ্যাগ্রো, গার্মেন্টস, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, গড়ে তোলেন।

এম.এ হাশেম

তিনি পারটেক্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি চট্টগ্রামে ১৯৭০-র দশকে শুরুর দিকে মেসার্স হাশেম করপোরেশন প্রতিষ্ঠা করেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরবর্তী সময়ে তিনি নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য যেমন সিমেন্ট, ইস্পাত, লোহা, চিনি, লবন আমদানির ব্যবসা করেন। অতঃপর দেশেই তিনি বিভিন্ন কল-কারখানা নির্মাণ করেন। গড়ে তোলেন পারটেক্স গ্রুপ। এ গ্রুপের পণ্যগুলোর মধ্যে ড্যানিশ কনডেন্সড মিল্ক, মাম পানি, কোমল পানীয় ব্র্যান্ড আরসি জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

এম.এ হাশেম দেশের সিটি ব্যাংক লিমিটেড এবং ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড নামে দুটি ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। তিনি ব্যাংক দুটির চেয়ারম্যান পদেও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জনতা ইনসুরেন্সেরও একজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। এম.এ হাশেম একজন সফল ও পরিতৃপ্ত মানুষ ছিলেন। দেশের ব্যবসার প্রসার ও শিল্পায়নে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন। অনেক লোকের চাকরির সুযোগ সৃষ্টি করেছেন। একের পর এক শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছেন। দেশের অর্থনৈতিক বুনিয়াদ শক্তিশালী করার জন্য অনেক অবদান রেখেছেন। শিক্ষা ক্ষেত্রেও উদার মনের পরিচয় দিয়েছেন। তিনি নোয়াখালীতে এম.এ হাশেম কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের মধ্যে তিনি একজন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনি ট্র্যাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানও ছিলেন। নর্থ সাউথ দেশের একটি স্বনামধন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়।

তিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২০০১ সালে নোয়াখালী থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন। এম.এ হাশেম বাংলাদেশের শিল্প-বাণিজ্য ক্ষেত্রে অবদানের পাশাপাশি একজন সংসদ সদস্য থেকে দেশের জন্য নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। ব্যবসা ও শিল্প প্রতিষ্ঠান নির্মাণে, শিক্ষাপ্রসারে, সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে, সমাজসেবা ও রাজনীতিতে সব ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করেছেন।

এম.এ হাশেম করোনা ভাইরাসে সংক্রামিত হওয়ার পর তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাকে ব্রক লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ২৪ ডিসেম্বর ২০২০ ইন্তেকাল করেন। তিনি স্ত্রী সুলতানা হাশেম এবং পাঁচ ছেলে আজিজ আল কায়সার, আজিজ আল মাহমুদ, আজিজ আল মাসুদ, রুবেল আজিজ, শওকত আজিজসহ অনেক শুভানুধ্যায়ী ও আত্মীয়-স্বজন রেখে গেছেন। [রফিকুল ইসলাম রফিক]

তথ্যসূত্র দৈনিক প্রথম আলো, ২৫ ডিসেম্বর ২০২১