হরিরামপুর উপজেলা

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ০৬:৩২, ৬ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Robot: Automated text replacement (-'''''তথ্যসূত্র''''' +'''তথ্যসূত্র'''))

হরিরামপুর উপজেলা (মানিকগঞ্জ জেলা)  আয়তন: ২৪৫.৪২ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°৩৮´ থেকে ২৩°৪৮´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৫০´ থেকে ৯০°০৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে শিবালয়, ঘিওর ও মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা, দক্ষিণে চরভদ্রাসন ও ফরিদপুর সদর উপজেলা, পূর্বে মানিকগঞ্জ সদর, নবাবগঞ্জ (ঢাকা) ও দোহার উপজেলা, পশ্চিমে শিবালয়, গোয়ালন্দঘাট এবং ফরিদপুর সদর উপজেলা।

জনসংখ্যা ১৭১২৭৪; পুরুষ ১৮৪৯৯৪, মহিলা ৮৬২৮০। মুসলিম ১৫০০৪১, হিন্দু ২১২০২, বৌদ্ধ ১০ এবং  অন্যান্য ২১।

জলাশয় পদ্মা নদী ও ইছামতি নদী এবং ভাতশালা বিল ও ঘারিলপুর বিল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন হরিরামপুর থানা গঠিত হয় ১৮৪৫ সালে। থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ১৩ ১৯৬ ২৩৮ ৩২৪১ ১৬৮০৩৩ ৬৯৮ ৫১.৪৮ ৪১.২৭



উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
১১.১০ ৩২৪১ ২৯২ ৫১.৪৮
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
আজিমনগর ০৭ ৪২৪৪ ৬৭৪৯ ৬০২২ ৩৪.৮২
কাঞ্চনপুর ৭৩ ৭৭২৫ ৩৩৩০ ৩১৯০ ৩.৪৫
গালা ৫১ ৪৮৯৮ ১১০৪৩ ১০৯৭৫ ৫১.৪৮
গোপীনাথপুর ৫৮ ৪৪০৬ ৭১৯০ ৬৯০৫ ৩৭.১৯
চালা  ৩৬ ৪৯৫২ ৯৪৯৪ ১০০২১ ৪৩.৩২
ধুলসুরা  ৪৩ ৪১৬৯ ৩৭৬৯ ৪১৭২ ৪৫.৫৩
বয়ড়া  ২৯ ৪০৩৭ ৫৮৪৬ ৬৫৪০ ৫৩.৬৩
বলড়া  ২১ ২৭০৭ ৮০১৩ ৯৩৯৬ ৪৬.৮৫
বল্লা ১৪ ৩৪৯৭ ১১৫৭৭ ১১০৫৭ ৪০.৪৭
রামকৃষ্ণপুর ৮৭ ৩৮৯৭ ৫৩৫৪ ৬০১১ ৩৮.৫৪
লেছড়াগঞ্জ ৮০ ৮৩১০ ৬৯৩৩ ৬২৫৭ ১৫.৪১
সুতালড়ি  ৯৪ ২৮৬৬ ৩৭০৫ ৩৫৩৬ ৪৪.৯৬
হারুকান্দি ৬৫ ৩৯২৮ ১৯৯১ ২১৯৮ ৪৬.৩৪

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ লোকমানিয়া দরগাহ (ঝিটকা), মুসা খাঁ’র দুর্গ (যাত্রাপুর)।

মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি ১৯৭১ সালে এ উপজেলার সুতালড়ি ও হরিণায় পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াই হয়। ১৩ ডিসেম্বর হরিরামপুর শত্রুমুক্ত হয়।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান   মসজিদ ১৬১, মন্দির ৭৩, মাযার ৩, দরগাহ ৩, তীর্থস্থান ২।

হরিরামপুর উপজেলা


শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪১.৪৬%; পুরুষ ৪৫.১১%, মহিলা ৩৭.৯৩%। কলেজ ৩, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৩, মাদ্রাসা ১। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: বিচারপতি নুরুল ইসলাম কলেজ (১৯৮৭), এমএ রউফ ডিগ্রি কলেজ (১৯৯৪), ঝিটকা খাজা রহমত আলী ডিগ্রি কলেজ (১৯৯৪), পাটগ্রাম অনাথবন্ধু সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৫), ইব্রাহিমপুর ঈশ্বরচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৩), ঝিটকা আনন্দ মোহন উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৬)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ২, নাট্যদল ২, সিনেমা হল ২, ক্লাব ৩৭, মহিলা সংগঠন ২।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৫৪.৫৪%, অকৃষি শ্রমিক ২.৬৮%, শিল্প ১.২৩%, ব্যবসা ১৩.৭৩%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.৪৩%, চাকরি ১৩.১৮%, নির্মাণ ১.৮%, ধর্মীয় সেবা ০.২৭%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ২.৫৬% এবং অন্যান্য ৭.৫৮%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৪৯.১৩%, ভূমিহীন ৫০.৮৭%। শহরে ৪২.৪৭% এবং গ্রামে ৪৯.২৬% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, গম, সরিষা, পিঁয়াজ, রসুন, চীনাবাদাম।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি  নীল, তিসি।

প্রধান ফল-ফলাদিব আম, কাঁঠাল, পেঁপে।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৫২, গবাদিপশু ২০, হাঁস-মুরগি ৬০।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৩২ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৮ কিমি, কাঁচারাস্তা ১৭৭ কিমি; নৌপথ ৩৭.৮ নটিক্যাল মাইল।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরুর গাড়ি, ঘোড়ার গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা আটাকল, ময়দাকল, বরফকল, করাতকল, বিড়ি কারখানা।

কুটিরশিল্প তাঁতশিল্প, বাঁশের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ১৫, মেলা ১০। ঝিটকা হাট, রামকৃষ্ণপুর হাট, বোয়ালীয় হাট ও নয়ার হাট উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য   পিঁয়াজ, গুড়।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৬.২৮% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৩.৩১%, ট্যাপ ০.৪%, পুকুর ০.৭% এবং অন্যান্য ৫.৫৯%। এ উপজেলার ২৮% অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৩০.৬৪% (গ্রামে ৩০.২৬% ও শহরে ৫০.৪৩%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৬৪.৬২% (গ্রামে ৬৪.৯৩% ও শহরে ৪৮.৪৪%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। তবে ৪.৭৪% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র ৫, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৪, এনজিও পরিচালিত স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৮৯৭, ১৯৪৩ ও ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষে এ উপজেলায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এছাড়া ১৮৮৫ ও ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে এ উপজেলার ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়।

এনজিও ব্র্যাক, আশা, প্রশিকা।  [মনোরঞ্জন মন্ডল]

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, হরিরামপুর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।