সেরোটাইপ

সেরোটাইপ (Serotype) হলো ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত একটি একক প্রজাতির অণুজীব যেমন ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া বা একই জাতীয় ইমিয়ুন কোষগুলোর মধ্যে একটি গ্রুপ বা প্রকার যাদের বহিঃস্থ পৃষ্ঠে বা সারফেসে অবস্থিত অ্যান্টিজেনগুলো একই ধরনের হয় এবং এগুলো ব্যবহার করে গ্রুপটিকে পৃথক করা যায়। এজন্য একই প্রজাতির অণুজীবের ভেতর থেকে ভিন্নভিন্ন সারফেস-অ্যান্টিজেন যুক্ত অণুজীবদের আলাদাকরণ পদ্ধতিকে সেরোটাইপিং বলা হয়। উদাহরণস্বরূপ, একই প্রজাতির সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়া মাইক্রোস্কোপের নিচে একই রকম দেখালেও তাদের দেহপৃষ্ঠের অ্যান্টিজেনের উপস্থিতির উপর ভিত্তি করে তাদেরকে বিভিন্ন ভাগে বা সেরোটাইপে বিভক্ত করা যেতে পারে। সালমোনেলার শরীরের আবরণী পৃষ্ঠে O-অ্যান্টিজেন উপস্থিত থাকলে O-সেরোটাইপ এবং এদের ফ্লাজেলায় H-অ্যান্টিজেন উপস্থিত থাকলে H-সেরোটাইপ বলা হয়। অ্যান্টিজেনগুলোর রাসয়নিক গঠনও ভিন্ন হয়, যেমন H-অ্যান্টিজেনে লিপোপলিস্যাকারাইড থাকে, অন্যদিকে H-অ্যান্টিজেনে ফ্লাজেলার প্রোটিন থাকে। কিছু সেরোটাইপ শুধুমাত্র এক ধরনের প্রাণী বা একক জায়গায় পাওয়া য্য়া। অন্যরা বিভিন্ন প্রাণী এবং বিশ্বের অন্যান্য যায়গায় পাওয়া যায়। কিছু সেরোটাইপ গুরুতর অসুস্থতার কারণ হতে পারে যখন তারা মানুষকে সংক্রমিত করে। কিছু সেরোটাইপ আবার হালকা অসুস্থতার সৃষ্টি করতে পারে। একটি অণুজীবের সেরোটাইপ নির্ধারণ করতে এর পৃষ্ঠে কোনো অ্যান্টিজেন পাওয়া যায় তা নির্ধারণ করতে হবে। ব্যাকটেরিয়াার অ্যান্টিজেনটি আক্রান্ত ব্যক্তির ইমিয়ুন সিস্টেমকে নির্দিষ্ট অ্যান্টিবডি তৈরি করতে প্ররোচিত করে যা এই সংক্রামক অণুজীবকে মেরে ফেলবে। একটি অণুজীব এবং এর অ্যান্টিজেনের একটি নমুনা এবং এটির অ্যান্টিবডি ধারণ করে এমন রক্তের সাথে মিশ্রিত করলে এটি ক্লাম্প তৈরি করবে। যে রক্তে নির্দিষ্ট অ্যান্টিবডি থাকে তা অ্যান্টিসিরাম নামে পরিচিত। যখন একটি অ্যান্টিজেন তার অ্যান্টিবডিগুলির সাথে মিশ্রিত হয় তখন ক্লাম্প তৈরির প্রক্রিয়াটিকে অ্যাগ্লুটিনেশন বলে। [মো. শাহাদাত হোসেন]