সেন, এ.টি

সেন, এ.টি (১৯০১-১৯৭১)  শিক্ষাবিদ ও মৃত্তিকা বিজ্ঞানী। তাঁর পুরো নাম আশুতোষ সেন। অবিভক্ত বাংলার (বর্তমান বাংলাদেশের) বগুড়া জেলাশহরে ১৯০১ সালের ৩০ নভেম্বর আশুতোষ সেন জন্মগ্রহণ করেন। তবে তাঁর পৈতৃক নিবাস মানিকগঞ্জ জেলার মত্তগ্রাম নামক স্থানে। এখানে উলে­খ করা যেতে পারে যে, নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন তাঁর পুত্র। এ.টি সেনের পিতা দেওয়ান বাহাদুর সারদা প্রসাদ সেন ছিলেন বগুড়ার একজন জেলা জজ এবং পরবর্তী সময়ে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ নিযুক্ত হন। আশুতোষ সেনের শিক্ষা সম্পন্ন হয় ঢাকাতেই। এর পর তিনি ইংল্যান্ড যান এবং Rothamsted Experimental Station-এ মৃত্তিকা বিজ্ঞানে গবেষণাকর্ম পরিচালনা করে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচ.ডি ডিগ্রি লাভ করেন।

লন্ডন থেকে ডিগ্রি নিয়ে ড. সেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞান ইউনিটে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন এবং অন্যান্যদের সঙ্গে অক্লান্ত পরিশ্রম করে এ ইউনিটটিকে একটি পূর্ণাঙ্গ বিভাগে রূপান্তরিত করেন। ১৯৩৭ সালে সরকার তাঁকে তিন বছরের জন্য প্রেষণে বার্মায় (বর্তমান মায়ানমার) প্রেরণ করেন এবং সেখানে তিনি একটি কৃষি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৪০ সালে ঢাকায় ফিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে পুনরায় যোগদান করেন। ড. বি.সি দেবসহ আরও অনেক বিখ্যাত মৃত্তিকাবিজ্ঞানী তাঁর সুযোগ্য তত্ত্বাবধানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচ.ডি এবং ডি.এসসি ডিগ্রি লাভ করেন।

উপমহাদেশের বিভক্তির পর ড. সেন ভারতে চলে যান এবং দিলি­তে ভূমি উন্নয়ন কমিশনার হিসেবে যোগদান করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি  পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। এ ছাড়াও তিনি দিলি­তে ভারত সরকারের ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

অবসর গ্রহণের পর অধ্যাপক সেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি কলেজ ও অন্যান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নিজেকে জড়িত রাখেন। নিবেদিতপ্রাণ এ শিক্ষক ও গবেষক ১৯৭১ সালের ২৯ মার্চ প্রয়াত হন।  [ডি.কে দাস এবং এস.কে মুখোপাধ্যায়]