সিমলা চুক্তি

সিমলা চুক্তি  ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পর যুদ্ধে বাংলাদেশকে সমর্থন দানকারী দেশ  ভারত এবং প্রতিপক্ষ পাকিস্তানের মধ্যে সম্পাদিত একটি শান্তিচুক্তি। পাকিস্তান সেনাবাহিনী ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করে এবং যুদ্ধবন্দী হিসেবে ভারত তাদের নিরাপত্তা হেফাজতে নিয়ে যায়। বাংলাদেশ যুদ্ধাপরাধী হিসেবে এদের বিচার করতে চেয়েছিল। ভারতের হেফাজত থেকে যুদ্ধবন্দীদের মুক্তি এবং যুদ্ধবন্দি হিসেবে তাদের বিচার রহিতকরণ ছিল পাকিস্তান সরকারের জন্য একটি জাতীয় জরুরি বিষয়। অপরদিকে একটি শান্তিকামী জাতি হিসেবে ভারতের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ণ রাখতে পাকিস্তানের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা ছিল ভারতের জন্য খুবই জরুরি। এ প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টো এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী মিসেস ইন্দিরা গান্ধী সিমলায় এক শীর্ষ বৈঠকে মিলিত হয়ে (২৮ জুন হতে ২ জুলাই ১৯৭২) একটি শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করেন।

এই চুক্তিতে ভারত ও পাকিস্তান তাদের সকল বৈরিতার অবসান ঘটানো, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সকল ক্ষেত্রে বন্ধুত্ব ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা এবং ১৯৭১ সালের ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত জম্মু ও কাশ্মীরে বিরাজমান স্থিতাবস্থা পুনঃস্থাপনের অঙ্গীকার ব্যক্ত করে। এই চুক্তির অধীনে ভারত সকল যুদ্ধবন্দিকে বিনাবিচারে পাকিস্তানে ফেরত পাঠায়। ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে আরও একটি ‘সার্বিক সমঝোতা’ করে, যা চুক্তির দলিলে উল্লিখিত হয় নি। এই সমঝোতায় শর্ত ছিল যে, পাকিস্তান কর্তৃক বাংলাদেশকে কূটনৈতিক স্বীকৃতি প্রদান করা হবে এবং পাকিস্তানের নাগরিকদের তাদের নিজস্ব পছন্দ অনুযায়ী বাংলাদেশ বা পাকিস্তানে ফিরিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে সংলাপ শুরুর ব্যবস্থা করা হবে।  [আশা ইসলাম]