সাদুল্লাপুর উপজেলা

সাদুল্লাপুর উপজেলা (গাইবান্ধা জেলা)  আয়তন: ২৩০.১২ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৫°১৭´ থেকে ২৫°৩০´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°২০´ থেকে ৮৯°৩১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে সুন্দরগঞ্জ ও মিঠাপুকুর উপজেলা, দক্ষিণে পলাশবাড়ী ও গাইবান্ধা সদর উপজেলা, পূর্বে গাইবান্ধা সদর ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলা, পশ্চিমে পীরগঞ্জ (রংপুর) উপজেলা।

জনসংখ্যা ২৮৭৪২৬; পুরুষ ১৪০৪২৩, মহিলা ১৪৭০০৩। মুসলিম ২৬২৫৮১, হিন্দু ২৪৫৭৩, বৌদ্ধ ৩৪, খ্রিস্টান ১২ এবং অন্যান্য ২২৬।

জলাশয় ঘাঘট নদী এবং সাত বিল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন সাদুঠল্লাপুর থানা গঠিত হয় ১৯১৩ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৪ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ১১ ১৬৪ ১৬৯ ১২২৯১ ২৭৫১৩৫ ১২৪৯ ৪৬.৫ (২০০১) ৩৫.২ (২০০১)
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৬.৩৮ ১২২৯১ ১৯২৬ ৪৬.৪৭ (২০০১)
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%) (২০০১)
পুরুষ মহিলা
ইদিলপুর ৫১ ৫৯২৫ ১৪৬১৮ ১৪৭৮৬ ৩২.৩৫
কামারপাড়া ৭৭ ৪২৭৯ ১০৪৬৯ ১১০৫৯ ৩৪.৯২
খোর্দ কামারপুর ৬৯ ২৯০৩ ৮১৮১ ৮৭৬৩ ৪০.২৭
জামালপুর ৬০ ৫৭৮৫ ১৪৮০৭ ১৫৪৩২ ৩১.৫২
দামোদরপুর ২৫ ৬১৮৩ ১২৪৬৯ ১৩৪৬২ ৩৭.০৫
ধাপেরহাট ৩৪ ৬১১৭ ১৫৩৫৫ ১৫২৪২ ৩৬.৫৩
নলডাঙ্গা ৮৬ ৫১৩৪ ১৩০৯৬ ১৪০৮০ ৩২.৩৭
ফরিদপুর ৪৩ ৫৩১১ ১২৮৬৭ ১৩০৫০ ৩৬.৪৮
বনগ্রাম ১৩ ৪৬৪৫ ১৩৭৮৩ ১৪৭৪৪ ৪২.৪৪
ভাতগ্রাম ১৭ ৫২৫০ ১৩০২৪ ১৩৮০৮ ৩৭.৩০
রসুলপুর ৯৪ ৫৩৩২ ১১৭৫৪ ১২৫৭৭ ৩২.৭৫

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ জামালপুর ইউনিয়নের প্রাচীন শাহী মসজিদ, ভাতগ্রাম ইউনিয়নের পুন্ড্র সভ্যতার প্রাচীর, খাগোর দীঘি।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের ১৬ এপ্রিল রংপুরের পীরগঞ্জ-সাদুল্লাপুর সীমান্তে পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে এক যুদ্ধে ২১ জন পাকসেনা নিহত হয়। ১৭ই অক্টোবর মুক্তিযোদ্ধাদের দ্বারা পরিচালিত সাদুল্লাপুর থানা অপারেশন ছিল একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে ১টি স্মৃতিস্তম্ভ (সাদুল্লাপুর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয় চত্বর) স্থাপিত হয়েছে।

বিস্তারিত দেখুন সাদুল্লাপুর উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ১০।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৪৬০, মন্দির ৩২। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: জামালপুর মসজিদ।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৪.১%; পুরুষ ৪৭.০%, মহিলা ৪১.৩%। কলেজ ১২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৬৯, প্রাথমিক বিদ্যালয় ২২০, স্যাটেলাইট স্কুল ৩৭, মাদ্রাসা ১১০। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: নলডাঙ্গা মহাবিদ্যালয় (১৯৬৭), সাদুÍÏvপুর ডিগ্রি কলেজ (১৯৭২), খোর্দ কোমরপুর বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০১), সাদুÍÏvপুর বহুমুখী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৮), নলডাঙ্গা উমেশ চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৬), সাদুÍÏvপুর খোদেজা মেমোরিয়াল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৩), ফরিদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮৬০), মোলংবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮৮৪)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ২, নাট্যদল ১, সিনেমা হল ৬, ক্লাব ৫, খেলার মাঠ ৩০।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৮.৫৬%, অকৃষি শ্রমিক ৩.৩১%, শিল্প ০.৮০%, ব্যবসা ১১.০৩%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.৮০%, চাকরি ৪.৪৪%, নির্মাণ ০.৯৭%, ধর্মীয় সেবা ০.২১%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.১৯% এবং অন্যান্য ৬.৬৯%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৫.৪০%, ভূমিহীন ৪৪.৬০%। শহরে ৫০.০২% এবং গ্রামে ৫৫.৬১% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, ভূট্টা, হলুদ, পটল, আলু, কলা, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি  আউশ ধান, কাউন, মিষ্টিআলু, তিল, তিসি।

প্রধান ফল-ফলাদি কলা, আম, কাঁঠাল, পেঁপে, জাম।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৮, গবাদিপশু ৩০, হাঁস-মুরগি ৩৫, হ্যাচারি ২।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১১২ কিমি, কাঁচারাস্তা ৪৭০ কিমি, রেলপথ ১৮ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরুর গাড়ি, ঘোড়ার গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা বিস্কুট ফ্যাক্টরি, ধানকল, স’মিল, ওয়েল্ডিং কারখানা, হিমাগার।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, বুননশিল্প, কাঠের কাজ, বাঁশের কাজ, বেতের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ২৮, মেলা ৫। নলডাঙ্গা হাট, ধাপের হাট ও সাদুল্লাপুর হাট এবং কল্যানপুর বারুনি মেলা, পীরের হাট মেলা, সাদারহাট মেলা ও গ্রামতলার মেলা উ‡ÍÏখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য ধান, চাল, কলা, হলুদ, পটল, আলু।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২১.৮% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৭.৫%, ট্যাপ ০.২% এবং অন্যান্য ২.৩%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৩৮.৯% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩৮.৬% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। তবে ২২.৫% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই ।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র  উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র ৬, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ১০, কমিউনিটি ক্লিনিক ২৬, স্যাটেলাইট ক্লিনিক ৮৮।

এনজিও কেয়ার, আশা, ব্র্যাক, স্বনির্ভর বাংলাদেশ।  [জহুরুল কাইয়ুম]

তথ্যসূত্র  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; সাদুল্লাপুর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।