সর্পদংশন: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Image:SnakeBite1.jpg|thumb|400px|দংশনের স্থানে গভীর ক্ষত ও পচন]]
[[Image:SnakeBite1.jpg|thumb|200px|দংশনের স্থানে গভীর ক্ষত ও পচন]]
[[Image:SnakeBite.jpg|thumb|400px|গোখরার কামড়ে রোগীর চোখের পাতা ভারী হয়ে বুঁজে আসা]]
[[Image:SnakeBite.jpg|thumb|200px|গোখরার কামড়ে রোগীর চোখের পাতা ভারী হয়ে বুঁজে আসা]]
'''সর্পদংশন''' (Snake Bite)  সাপে কাটা একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য সমস্যা। বাংলাদেশে গ্রামাঞ্চলে গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে এবং বন্যার সময় বিভিন্ন প্রকারের সাপের উপদ্রব দেখা দেয়। কখনও কখনও সাপের কামড়ে লোক মারা যায়। এক জরিপে দেখা গেছে বাংলদেশে প্রতি বছর প্রায় ৮,০০০ সর্পদংশনের ঘটনা ঘটে এবং আক্রান্তদের প্রায় ২০% মৃত্যুবরণ করে। জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করলে গোখরা, কেউটে ও চন্দ্রবোড়া এই তিন ধরনের বিষধর সাপ গুরুত্বপূর্ণ। গ্রামে সাপের কামড়ে আক্রান্তদের অধিকাংশই কর্মরত তরুণ।
'''সর্পদংশন''' (Snake Bite)  সাপে কাটা একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য সমস্যা। বাংলাদেশে গ্রামাঞ্চলে গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে এবং বন্যার সময় বিভিন্ন প্রকারের সাপের উপদ্রব দেখা দেয়। কখনও কখনও সাপের কামড়ে লোক মারা যায়। এক জরিপে দেখা গেছে বাংলদেশে প্রতি বছর প্রায় ৮,০০০ সর্পদংশনের ঘটনা ঘটে এবং আক্রান্তদের প্রায় ২০% মৃত্যুবরণ করে। জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করলে গোখরা, কেউটে ও চন্দ্রবোড়া এই তিন ধরনের বিষধর সাপ গুরুত্বপূর্ণ। গ্রামে সাপের কামড়ে আক্রান্তদের অধিকাংশই কর্মরত তরুণ।



০৭:৩০, ১৯ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

দংশনের স্থানে গভীর ক্ষত ও পচন
গোখরার কামড়ে রোগীর চোখের পাতা ভারী হয়ে বুঁজে আসা

সর্পদংশন (Snake Bite)  সাপে কাটা একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য সমস্যা। বাংলাদেশে গ্রামাঞ্চলে গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে এবং বন্যার সময় বিভিন্ন প্রকারের সাপের উপদ্রব দেখা দেয়। কখনও কখনও সাপের কামড়ে লোক মারা যায়। এক জরিপে দেখা গেছে বাংলদেশে প্রতি বছর প্রায় ৮,০০০ সর্পদংশনের ঘটনা ঘটে এবং আক্রান্তদের প্রায় ২০% মৃত্যুবরণ করে। জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করলে গোখরা, কেউটে ও চন্দ্রবোড়া এই তিন ধরনের বিষধর সাপ গুরুত্বপূর্ণ। গ্রামে সাপের কামড়ে আক্রান্তদের অধিকাংশই কর্মরত তরুণ।

সাপের কামড়ে মৃত্যু, পঙ্গুত্ব এবং অন্যান্য গুরুতর শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। বাংলাদেশে গ্রামে সাধারণত মে-অক্টোবর মাসে সাপে কাটার ঘটনা ঘটে। জুন মাসে এ হার সবচেয়ে বেশি। সাপ সাধারণত হাতে বা পায়ে কামড় দিয়ে থাকে, তবে শরীরের অন্যান্য জায়গায় সাপে কাটার ঘটনা বিরল নয়। প্রজাতি ভেদে বিষধর সাপের কামড় শরীরের ভিন্ন ভিন্ন শারীরবৃত্ত ক্রিয়াকে আক্রান্ত করে। আবার একই প্রজাতির সাপের কামড়ে ভৌগোলিক অঞ্চল অনুযায়ী ভিন্ন ফলও দেখা গেছে।

গোখরা ও কেউটের বিষ শরীরের স্নায়ু ব্যবস্থার ক্ষতি করে, শরীর অবশ করে দেয়। গোখরার কামড়ে পেশিতে পচনের নজির বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে পাওয়া গেছে। চন্দ্রবোড়ার বিষ রক্তের ক্ষতি করে। রক্তকে জমাট বাঁধতে বাধা দেয়। অনেক ক্ষেত্রে বৃক্ক নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া কোন কোন ক্ষেত্রে স্নায়ু ব্যবস্থার ক্ষতি হয়, পিটুইটারি গ্রন্থির কার্যকারিতা বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং রোগী অজ্ঞান হয়ে পড়ে।

সাপ কেবল আত্মরক্ষার জন্য কিংবা উত্যক্ত করলে মানুষকে দংশন করে, তাই সাপকে এড়িয়ে চলাই প্রতিরোধের একমাত্র উপায়। ঘাস বা ঝোপঝাড়ের ভিতর দিয়ে চলাফেরার সময় সাবধানে চলতে হবে। মাছ ধরার চাঁই কিংবা জালের মধ্যে সাপ আছে কিনা তা দেখে নিতে হবে। রাতে হাটার সময় আলো ও লাঠি সাথে রাখতে হবে। গরমের দিনে বাইরে ঘুমানোর ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। অধিকাংশ সাপে কাটা রোগী হাসপাতালে আসার আগে প্রাথমিক চিকিৎসা পেয়ে থাকে স্থানীয় ডাক্তার অথবা গ্রাম এলাকার ওঝার কাছ থেকে। তারা ধারালো ছুরি দিয়ে রোগীর দংশিত অংশ কেটে রক্ত চুষে নেয় এবং থুথুর মাধ্যমে বের করে দেয়, কামড়ের ওপরের অংশ কাপড় দিয়ে বাঁধে। এছাড়াও আক্রান্ত স্থানে গাছের রস, পাথর অথবা বীচি ব্যবহার করে। এ পদ্ধতির পাশাপাশি তারা মন্ত্রপাঠ ও বিচিত্র অঙ্গভঙ্গি করে। এসব সাধারণত রোগীর কোন উপকারে আসে না, বরং অনেক ক্ষেত্রে মৃত্যুর কারণ হয়।

সাপের বিষ (snake venom)  এক ধরনের জটিল জৈব যৌগ, যা নিঃসৃত হয় সাপের মুখের এক বিশেষ গ্রন্থি থেকে। সাধারণত বিষাক্ত সাপের মুখের সামনের দিকে দুই পাশে দুটি বড় বিষদাঁত থাকে, যা বিষগ্রন্থির সঙ্গে যুক্ত। বিষদাঁতের সাহায্যেই সাপ তার বিষগ্রন্থি নিঃসৃত রস মানুষের দেহে প্রবিষ্ট করে এবং বিষক্রিয়া ঘটায়। সাপের বিষ মূলত জৈব রাসায়নিকভাবে প্রোটিন, পলিপেপটাইড এবং অপ্রোটিন (জৈব ও অজৈব) উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত। বিষের প্রায় ৯০% প্রোটিন ও পলিপেপটাইড এবং এসব যৌগই বিষক্রিয়ার জন্য দায়ী।  [মোঃ আবুল ফয়েজ]

আরও দেখুন গোখরা, বেদে; সাপুড়ে