সরাইল উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''সরাইল উপজেলা''' ([[ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলা|ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলা]])  আয়তন: ২২৭.২২ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°০০´ থেকে ২৪°১১´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৫৯´ থেকে ৯১°১৫´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে নাসিরনগর উপজেলা, দক্ষিণে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া সদর উপজেলা, পূর্বে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া সদর ও নাসিরনগর উপজেলা, পশ্চিমে ভৈরব ও বাজিতপুর উপজেলা।
'''সরাইল উপজেলা''' ([[ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলা|ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলা]])  আয়তন: ২১৫.২৭ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°০০´ থেকে ২৪°১১´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৫৯´ থেকে ৯১°১৫´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে নাসিরনগর উপজেলা, দক্ষিণে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া সদর উপজেলা, পূর্বে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া সদর ও নাসিরনগর উপজেলা, পশ্চিমে ভৈরব ও বাজিতপুর উপজেলা।


''জনসংখ্যা'' ২৭১১০১; পুরুষ ১৩৬২৪০, মহিলা ১৩৪৮৬১। মুসলিম ২৪৭০৩১, হিন্দু ২৩৯৮৮, বৌদ্ধ ১৬ এবং অন্যান্য ৬৬।
''জনসংখ্যা'' ৩১৫২০৮; পুরুষ ১৫২৩৮৯, মহিলা ১৬২৮১৯। মুসলিম ২৯১৮১৬, হিন্দু ২৩৩৩২, বৌদ্ধ ১, খ্রিস্টান ২০ এবং অন্যান্য ৩৯।


''জলাশয়'' মেঘনা, তিতাস, বগদিয়া ও ভৈরব নদী এবং আকাশী বিল ও শাপলা বিল উল্লেখযোগ্য।
''জলাশয়'' মেঘনা, তিতাস, বগদিয়া ও ভৈরব নদী এবং আকাশী বিল ও শাপলা বিল উল্লেখযোগ্য।
১৬ নং লাইন: ১৬ নং লাইন:
| শহর  || গ্রাম  || শহর  || গ্রাম
| শহর  || গ্রাম  || শহর  || গ্রাম
|-
|-
| - || ৯ || ৭৬  || ১৪০  || ৪৩৪৫৫  || ২২৭৬৪৬  || ১১৯৩  || ৪১.৭০  || ৩১.২৪
| - || ৯ || ৬৭ || ১৪১ || ৪৬৯২৭ || ২৬৮২৮১ || ১৪৬৪ || ৫০.|| ৩৯.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
২৪ নং লাইন: ২৪ নং লাইন:
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| ১৪.০৩  || ৩ || ৪৩৪৫৫  || ৩০৯৭  || ৪১.৭০
| ১৪.১৩ || ৩ || ৪৬৯২৭ || ৩৩২১ || ৫০.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
৩৪ নং লাইন: ৩৪ নং লাইন:
| পুরুষ  || মহিলা
| পুরুষ  || মহিলা
|-  
|-  
| অরুয়াইল ০৯  || ৫৫৫৬ || ১৫৩৩৩ || ১৪১০৯  || ২৫.৭৫
| অরুয়াইল ১৩ || ৫৫৫৬ || ১৭৮৩৪ || ১৮২৬৭ || ৪৮.
|-
|-
| উত্তর পানিশ্বর ৯৪ || ৩৮১০ || ১৪৪৩২ || ১৪৭৯২  || ৩৫.২৪
| উত্তর পানিশ্বর ৯৪ || ৩৮১০ || ১৭০৮৭ || ১৯০৯৪ || ৩৬.
|-
|-
| কালীকচ্ছ ২৮ || ৬৮৪৩ || ১১৬৩০ || ১১৬৭৯  || ৩৯.৭৭
| কালীকচ্ছ ২৮ || ৬৮৪৩ || ১৪৬১০ || ১৫৯৯২ || ৪৩.
|-
|-
| চুন্টা ১৯ || ৬২২১ || ১৪৩৩০ || ১৪৩৩২  || ২৩.০৮
| চুন্টা ১৯ || ৬২২১ || ১৪৬৩১ || ১৭০০৮ || ৩৪.
|-
|-
| নোয়াগাঁও ৩৮ || ৬৭৬৭ || ১৪৯৩৫ || ১৫২৭৭  || ৩০.৫৮
| নোয়াগাঁও ৩৮ || ৬৭৬৭ || ১৮৪৬১ || ১৯৪০২ || ৩৬.
|-
|-
| পাকশিমুল ৪৭ || ৭০৩৪ || ১৮৮৭৮ || ১৭৭৮৫  || ২৮.৪০
| পাকশিমুল ৪৭ || ৭০৩৪ || ২০৭৮৯ || ২১০৬৮ || ৩১.
|-
|-
| শাহজাদাপুর ৯০ || ৭৭৭৩ || ১১৮১৪ || ১১৫২১  || ৩১.৪২
| শাহজাদাপুর ৯০ || ৭৭৭৩ || ১১৭৮৩ || ১২৪৯৮ || ৩৬.
|-
|-
| শাহবাজপুর ৮৫ || ৫৭২৪ || ১৩৭০৬ || ১৩০৯৩  || ৩৮.০৮
| শাহবাজপুর ৮৫ || ৫৭২৪ || ১৪৬৬৮ || ১৫০৮৯ || ৪৭.
|-
|-
| সরাইল ৭৬ || ৩৪৬৮ || ২১১৮২ || ২২২৭৩  || ৪১.৭০
| সরাইল ৭৬ || ৩৪৬৮ || ২২৫২৬ || ২৪৪০১ || ৫০.
|}
|}
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।


[[Image:SarailUpazila.jpg|thumb|right|400px]]
[[Image:SarailUpazila.jpg|thumb|right|400px]]
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' হাটখোলা জামে মসজিদ (সপ্তদশ শতাব্দী), সরাইল শাহী জামে মসজিদ (মুগল আমল), আরিফাইলের সাগরদীঘি মসজিদ (ষোড়শ শতাব্দী), জোড়া কবর (জাতীয় জাদুঘরের তত্ত্বাবধানে), বারিউরার হাতিরপুল জামে মসজিদ (মুগল আমল), হাবলিপাড়ার ইদারা (মুগল আমল)।
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' হাটখোলা জামে মসজিদ (সপ্তদশ শতাব্দী), সরাইল শাহী জামে মসজিদ (মুগল আমল), আরিফাইলের সাগরদীঘি মসজিদ (ষোড়শ শতাব্দী), জোড়া কবর (জাতীয় জাদুঘরের তত্ত্বাবধানে), বারিউরার হাতিরপুল জামে মসজিদ (মুগল আমল), হাবলিপাড়ার ইদারা (মুগল আমল)।


''মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি'' মুক্তিযুদ্ধের সময় উপজেলার বিটঘর এলাকায় পাকবাহিনী প্রায় ৭০ জন লোককে হত্যা করে। ১৯৭১ সালের ৫ মে মুক্তিযোদ্ধারা শাহবাজপুর পাকসেনা ক্যাম্প আক্রমণ করলে ৯ জন পাকসেনা নিহত হয় এবং এতে একজন মুক্তিযোদ্ধা আহত হন। তাছাড়া কালীকচ্ছ বাজারের উত্তরে মুক্তিযোদ্ধা গেরিলা দলের মাইন বিস্ফোরণে দুটি গাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে পাকবাহিনীর কয়েকজন অফিসার ও সরাইলের শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান নিহত হন।
''মুক্তিযুদ্ধ'' মুক্তিযুদ্ধের সময় উপজেলার বিটঘর এলাকায় পাকবাহিনী ৮০ জন লোককে হত্যা করে। ১৯৭১ সালের ৫ মে মুক্তিযোদ্ধারা শাহবাজপুর পাকসেনা ক্যাম্প আক্রমণ করলে ৯ জন পাকসেনা নিহত হয় এবং এতে একজন মুক্তিযোদ্ধা আহত হন। তাছাড়া কালীকচ্ছ বাজারের উত্তরে মুক্তিযোদ্ধা গেরিলা দলের মাইন বিস্ফোরণে দুটি গাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে পাকবাহিনীর কয়েকজন অফিসার ও সরাইলের শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান নিহত হন। সরাইল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাশে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা সম্বলিত একটি বেদী তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া উপজেলার ২টি রাস্তা ২ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার নামে নামকরণ করা হয়েছে।


''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন'' গণকবর ৩; স্মৃতিস্তম্ভ ৪ (বিটঘর গ্রাম, সরাইল অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গন, সরাইল ডিগ্রি কলেজ মাঠ, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা শেখ মেজবাহউদ্দিন স্মৃতিস্তম্ভ); স্মৃতিসৌধ ৪ (অাঁখিতারা, নোয়াগাঁও, কালীকচ্ছ-বারিউড়া সড়ক, শাহবাজপুর ইউপি অফিস সংলগ্ন)।
''বিস্তারিত দেখুন'' সরাইল উপজেলা, ''বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ'', বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ১০।


''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান''  মসজিদ ২৭৩, মন্দির ২৪, মাযার ৭, তীর্থস্থান ৩। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: সরাইল হাটখোলা জামে মসজিদ, আরিফাইলের সাগরদীঘি মসজিদ, আনন্দময়ী কালীমন্দির, মলাইশ গোপাল জিউর মন্দির, কালীকচ্ছ বাসুদেব মন্দির, কৃষ্ণ মন্দির, কুতুব শাহ মাযার, কালা শাহ মাযার, আয়েত আলী শাহ মাযার, শাহ রোকন উদ্দীন আনসারীর (র:) মাযার (শাহজাদাপুর), শেখ নাজিরের দরগাহ (সূর্যকান্দি), নিমবৈরাগীর মঠ, স্বামী আনন্দচন্দ্রের দয়াময় আশ্রম।
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান''  মসজিদ ২৭৩, মন্দির ২৪, মাযার ৭, তীর্থস্থান ৩। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: সরাইল হাটখোলা জামে মসজিদ, আরিফাইলের সাগরদীঘি মসজিদ, আনন্দময়ী কালীমন্দির, মলাইশ গোপাল জিউর মন্দির, কালীকচ্ছ বাসুদেব মন্দির, কৃষ্ণ মন্দির, কুতুব শাহ মাযার, কালা শাহ মাযার, আয়েত আলী শাহ মাযার, শাহ রোকন উদ্দীন আনসারীর (র:) মাযার (শাহজাদাপুর), শেখ নাজিরের দরগাহ (সূর্যকান্দি), নিমবৈরাগীর মঠ, স্বামী আনন্দচন্দ্রের দয়াময় আশ্রম।


''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৩২.৯%; পুরুষ ৩৬.%, মহিলা ২৯.%। কলেজ ২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৫, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১২৩, কিন্ডার গার্টেন ৭, মাদ্রাসা ১২। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: সরাইল ডিগ্রি মহাবিদ্যালয় (১৯৭০), সরাইল অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯৪), শাহবাজপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০৭), চুন্টা এসি একাডেমি (১৯৪১)।
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৪০.৯%; পুরুষ ৪২.%, মহিলা ৩৯.%। কলেজ ২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৫, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১২৩, কিন্ডার গার্টেন ৭, মাদ্রাসা ১২। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: সরাইল ডিগ্রি মহাবিদ্যালয় (১৯৭০), সরাইল অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯৪), শাহবাজপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০৭), চুন্টা এসি একাডেমি (১৯৪১)।


''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী'' বর্তমান: সরাইল যুগে যুগে, পরগনা, সরাইল বার্তা, মুক্তপ্রবাহ, অনুপম বার্তা, শ্বাশত সরাইল (ত্রৈমাসিক); অবলুপ্ত: পল­ী প্রদীপ, রায়ত বন্ধু, চুন্টা প্রকাশ (১৯২২); পাক্ষিক: বেলাশেষে (১৯৯৩)।
''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী'' বর্তমান: সরাইল যুগে যুগে, পরগনা, সরাইল বার্তা, মুক্তপ্রবাহ, অনুপম বার্তা, শ্বাশত সরাইল (ত্রৈমাসিক); অবলুপ্ত: পল­ী প্রদীপ, রায়ত বন্ধু, চুন্টা প্রকাশ (১৯২২); পাক্ষিক: বেলাশেষে (১৯৯৩)।
৮১ নং লাইন: ৮১ নং লাইন:
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য ৯, গবাদিপশু  ৬২, হাঁস-মুরগি ৬০, হ্যাচারি ২, কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র ১।
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য ৯, গবাদিপশু  ৬২, হাঁস-মুরগি ৬০, হ্যাচারি ২, কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র ১।


''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ৭৫ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৩ কিমি, কাঁচারাস্তা ২৮৯ কিমি; নৌপথ ১৪ নটিক্যাল মাইল।
''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ৪৮.১ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৩.৪ কিমি, কাঁচারাস্তা ৩২০.১ কিমি; নৌপথ ৫৫ কিমি।


''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি, গরু ও ঘোড়ার গাড়ি।
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি, গরু ও ঘোড়ার গাড়ি।
৯৩ নং লাইন: ৯৩ নং লাইন:
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''  ধান, গম, পাট, চামড়া, ময়দা, সরিষা।
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''  ধান, গম, পাট, চামড়া, ময়দা, সরিষা।


''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পলি­বিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৩৪.৮৩% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৮২.% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।


''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৯৩.৮৬%, পুকুর ০.৫৮%, ট্যাপ ০.৭৯% এবং অন্যান্য ৪.৭৭%।
''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৯৫.%, ট্যাপ ০.% এবং অন্যান্য ৪.%।


''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৩৬.৬২% (গ্রামে ২৯.৩৭% ও শহরে ৭২.৬৯%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৫৫.২৬% (গ্রামে ৬২.৬৫% ও শহরে ১৮.৫১%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। .১২% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৫৭.% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩৯.% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। .% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।


''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে­ক্স ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৪, ক্লিনিক ৫, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১০, পশু চিকিৎসালয় ১।
''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে­ক্স ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৪, ক্লিনিক ৫, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১০, পশু চিকিৎসালয় ১।
১০৫ নং লাইন: ১০৫ নং লাইন:
''এনজিও'' ব্র্যাক, আশা।  [মো. আজাদ উদ্দিন ঠাকুর]
''এনজিও'' ব্র্যাক, আশা।  [মো. আজাদ উদ্দিন ঠাকুর]


'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; সরাইল উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।
'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; সরাইল উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।


[[en:Sarail Upazila]]
[[en:Sarail Upazila]]

১৭:৫৩, ৫ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

সরাইল উপজেলা (ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলা)  আয়তন: ২১৫.২৭ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°০০´ থেকে ২৪°১১´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৫৯´ থেকে ৯১°১৫´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে নাসিরনগর উপজেলা, দক্ষিণে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া সদর উপজেলা, পূর্বে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া সদর ও নাসিরনগর উপজেলা, পশ্চিমে ভৈরব ও বাজিতপুর উপজেলা।

জনসংখ্যা ৩১৫২০৮; পুরুষ ১৫২৩৮৯, মহিলা ১৬২৮১৯। মুসলিম ২৯১৮১৬, হিন্দু ২৩৩৩২, বৌদ্ধ ১, খ্রিস্টান ২০ এবং অন্যান্য ৩৯।

জলাশয় মেঘনা, তিতাস, বগদিয়া ও ভৈরব নদী এবং আকাশী বিল ও শাপলা বিল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন সরাইল উপজেলা গঠিত হয় ১৯৯০ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ৬৭ ১৪১ ৪৬৯২৭ ২৬৮২৮১ ১৪৬৪ ৫০.৭ ৩৯.১
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
১৪.১৩ ৪৬৯২৭ ৩৩২১ ৫০.৭
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
অরুয়াইল ১৩ ৫৫৫৬ ১৭৮৩৪ ১৮২৬৭ ৪৮.৩
উত্তর পানিশ্বর ৯৪ ৩৮১০ ১৭০৮৭ ১৯০৯৪ ৩৬.৫
কালীকচ্ছ ২৮ ৬৮৪৩ ১৪৬১০ ১৫৯৯২ ৪৩.৪
চুন্টা ১৯ ৬২২১ ১৪৬৩১ ১৭০০৮ ৩৪.০
নোয়াগাঁও ৩৮ ৬৭৬৭ ১৮৪৬১ ১৯৪০২ ৩৬.৯
পাকশিমুল ৪৭ ৭০৩৪ ২০৭৮৯ ২১০৬৮ ৩১.৩
শাহজাদাপুর ৯০ ৭৭৭৩ ১১৭৮৩ ১২৪৯৮ ৩৬.২
শাহবাজপুর ৮৫ ৫৭২৪ ১৪৬৬৮ ১৫০৮৯ ৪৭.১
সরাইল ৭৬ ৩৪৬৮ ২২৫২৬ ২৪৪০১ ৫০.৭

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ হাটখোলা জামে মসজিদ (সপ্তদশ শতাব্দী), সরাইল শাহী জামে মসজিদ (মুগল আমল), আরিফাইলের সাগরদীঘি মসজিদ (ষোড়শ শতাব্দী), জোড়া কবর (জাতীয় জাদুঘরের তত্ত্বাবধানে), বারিউরার হাতিরপুল জামে মসজিদ (মুগল আমল), হাবলিপাড়ার ইদারা (মুগল আমল)।

মুক্তিযুদ্ধ মুক্তিযুদ্ধের সময় উপজেলার বিটঘর এলাকায় পাকবাহিনী ৮০ জন লোককে হত্যা করে। ১৯৭১ সালের ৫ মে মুক্তিযোদ্ধারা শাহবাজপুর পাকসেনা ক্যাম্প আক্রমণ করলে ৯ জন পাকসেনা নিহত হয় এবং এতে একজন মুক্তিযোদ্ধা আহত হন। তাছাড়া কালীকচ্ছ বাজারের উত্তরে মুক্তিযোদ্ধা গেরিলা দলের মাইন বিস্ফোরণে দুটি গাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে পাকবাহিনীর কয়েকজন অফিসার ও সরাইলের শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান নিহত হন। সরাইল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাশে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা সম্বলিত একটি বেদী তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া উপজেলার ২টি রাস্তা ২ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার নামে নামকরণ করা হয়েছে।

বিস্তারিত দেখুন সরাইল উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ১০।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান  মসজিদ ২৭৩, মন্দির ২৪, মাযার ৭, তীর্থস্থান ৩। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: সরাইল হাটখোলা জামে মসজিদ, আরিফাইলের সাগরদীঘি মসজিদ, আনন্দময়ী কালীমন্দির, মলাইশ গোপাল জিউর মন্দির, কালীকচ্ছ বাসুদেব মন্দির, কৃষ্ণ মন্দির, কুতুব শাহ মাযার, কালা শাহ মাযার, আয়েত আলী শাহ মাযার, শাহ রোকন উদ্দীন আনসারীর (র:) মাযার (শাহজাদাপুর), শেখ নাজিরের দরগাহ (সূর্যকান্দি), নিমবৈরাগীর মঠ, স্বামী আনন্দচন্দ্রের দয়াময় আশ্রম।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪০.৯%; পুরুষ ৪২.১%, মহিলা ৩৯.৮%। কলেজ ২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৫, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১২৩, কিন্ডার গার্টেন ৭, মাদ্রাসা ১২। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: সরাইল ডিগ্রি মহাবিদ্যালয় (১৯৭০), সরাইল অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯৪), শাহবাজপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০৭), চুন্টা এসি একাডেমি (১৯৪১)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী বর্তমান: সরাইল যুগে যুগে, পরগনা, সরাইল বার্তা, মুক্তপ্রবাহ, অনুপম বার্তা, শ্বাশত সরাইল (ত্রৈমাসিক); অবলুপ্ত: পল­ী প্রদীপ, রায়ত বন্ধু, চুন্টা প্রকাশ (১৯২২); পাক্ষিক: বেলাশেষে (১৯৯৩)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৬, ক্লাব ২০, মহিলা সংগঠন ৩৪, সিনেমা হল ১।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬০.৬৭%, অকৃষি শ্রমিক ৩.৭৭%, শিল্প ১.১১%, ব্যবসা ১৩.৬৭%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.০৫%, চাকরি ৫.৫%, নির্মাণ ০.৮৩%, ধর্মীয় সেবা ০.৩৬%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ২.৩৪% এবং অন্যান্য ৯.৭%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৯.৭২%, ভূমিহীন ৪০.২৮%। শহরে ৩৮.৫৫% এবং গ্রামে ৬৩.৯৮% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, পাট, সরিষা, ডাল, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি  তিল, তিসি, কাউন, ভুট্টা, অড়হর।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, জাম, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে, নারিকেল।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৯, গবাদিপশু  ৬২, হাঁস-মুরগি ৬০, হ্যাচারি ২, কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র ১।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৪৮.১ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৩.৪ কিমি, কাঁচারাস্তা ৩২০.১ কিমি; নৌপথ ৫৫ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরু ও ঘোড়ার গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা ময়দাকল, বরফকল, ইটভাটা, ওয়েল্ডিং কারখানা।

কুটিরশিল্প লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, তাঁতশিল্প, সূচিশিল্প, বাঁশ ও বেতের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ১৭, মেলা ৪। সরাইল বিকাল পাকশিমুল বাজার, তাডিউড়া বাজার, কালীকচ্ছ বাজার, গরুর হাট (সরাইল) এবং বাঘাচাঁন মিয়ার মেলা, শাহবাজপুর মেলা ও গাজীকালুর বারুণী মেলা (সরাইল) উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য  ধান, গম, পাট, চামড়া, ময়দা, সরিষা।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৮২.১% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৫.৮%, ট্যাপ ০.২% এবং অন্যান্য ৪.০%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৫৭.৭% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩৯.৪% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ২.৯% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে­ক্স ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৪, ক্লিনিক ৫, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১০, পশু চিকিৎসালয় ১।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৮৯৭ সালের ১২ জুন প্রচন্ড ভূমিকম্পে এবং ১৯৮৩ সালে ও ২০০৪ সালের ২৮ এপ্রিল ঘূর্ণিঝড়ে এ অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষ ও ১৯৫৪ সালের মন্বন্তর এবং ১৯৭৪, ১৯৮৮, ১৯৯৮ ও ২০০৪ সালের বন্যায় উপজেলার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।

এনজিও ব্র্যাক, আশা।  [মো. আজাদ উদ্দিন ঠাকুর]

তথ্যসূত্র  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; সরাইল উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।