শ্রীকৃষ্ণকীর্তন

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২৩:০৪, ৪ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Added Ennglish article link)

শ্রীকৃষ্ণকীর্তন  বৈষ্ণব কাব্য। রচয়িতা  বড়ু চন্ডীদাস। রচনাকাল সঠিকভাবে নির্ণীত না হলেও প্রাকচৈতন্য যুগের (খ্রিস্টীয় ১৪শ শতক) মনে করা হয়। মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে চর্যাপদের পরেই শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের স্থান। ১৩১৬ বঙ্গাব্দে (খ্রি. ১৯০৯) বসন্তরঞ্জন রায়বিদ্বদ্বল্লভ বাঁকুড়া জেলার বনবিষ্ণুপুরের কাঁকিল্যা গ্রাম নিবাসী দেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের নিকট থেকে এর  পুথি আবিষ্কার করেন। পুথিটির মাঝখানের এবং শেষের কয়েকটি পত্র না থাকায় এর নাম জানা যায়নি। তাই এর বিষয়বস্ত্ত কৃষ্ণলীলাবিষয়ক বলে নাম রাখা হয়েছে শ্রীকৃষ্ণকীর্তন। ১৩২৩ বঙ্গাব্দে (১৯১৬) এই নামে বসন্তরঞ্জনের সম্পাদনায়  বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ থেকে পুথিটি মুদ্রিত হলে গবেষক মহলে আলোড়নের সৃষ্টি হয় এবং  বাংলা ভাষার উদ্ভব ও ক্রমবিকাশ সম্পর্কে গবেষণার নতুন দ্বার উন্মোচিত হয়। পুথিটি থেকে  বাংলা লিপির বিবর্তন সম্পর্কেও অনেক ধারণা পাওয়া যায়।

শ্রীকৃষ্ণকীর্তন গীতি-আলেখ্য। রাধাকৃষ্ণের প্রণয়লীলা এর বিষয়বস্ত্ত। মোট ১৩ খন্ডে ৪১৮টি পদে এটি  বিন্যস্ত। খন্ডগুলি: জন্মখন্ড, তাম্বূল খন্ড, দানখন্ড, নৌকাখন্ড, ভারখন্ড, ছত্রখন্ড, বৃন্দাবন খন্ড, কালীয়দমন খন্ড, যমুনা খন্ড, হারখন্ড, বাণখন্ড, বংশীখন্ড ও বিরহখন্ড (রাধাবিরহ)। শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের মূল কাহিনী ভাগবত থেকে নেওয়া হলেও এতে বিভিন্ন  পুরাণ এবং জয়দেবের গীতগোবিন্দের  প্রভাব রয়েছে। কাব্যের প্রধান চরিত্র তিনটি কৃষ্ণ, রাধা ও বড়াই (দূতী)। কাব্যের চরিত্র-মধ্যে ঘাত-প্রতিঘাত আছে; বাক-বিতন্ডা, রাগ-দ্বেষ ইত্যাদি আছে। ফলে কাব্যটি গতিশীল ও নাট্যরসাশ্রিত হয়েছে। এতে গীতিরসেরও উপস্থিতি লক্ষণীয়। কাব্যটি শৃঙ্গাররসপ্রধান এবং ঝুমুর গানের লক্ষণাক্রান্ত। এটি পয়ার ও ত্রিপদী ছন্দে রচিত।  [দুলাল ভৌমিক]