শ্যামনগর উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''শ্যামনগর উপজেলা''' ([[সাতক্ষীরা জেলা|সাতক্ষীরা জেলা]])  আয়তন: ১৯৬৮.২৪ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২১°৩৬´ থেকে ২২°২৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°০০´ থেকে ৮৯°১৯´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে কালীগঞ্জ (সাতক্ষীরা) ও আশাশুনি উপজেলা, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর, পূর্বে কয়রা ও আশাশুনি উপজেলা, পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য ।
'''শ্যামনগর উপজেলা''' ([[সাতক্ষীরা জেলা|সাতক্ষীরা জেলা]])  আয়তন: ১৯৬৮.২৩ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২১°৩৬´ থেকে ২২°২৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°০০´ থেকে ৮৯°১৯´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে কালীগঞ্জ (সাতক্ষীরা) ও আশাশুনি উপজেলা, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর, পূর্বে কয়রা ও আশাশুনি উপজেলা, পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য ।


''জনসংখ্যা'' ৩১৩৭৮১; পুরুষ ১৬০২৯৪, মহিলা ১৫৩৪৮৭। মুসলিম ২৪৩২৫৭, হিন্দু ৭০১৫১, বৌদ্ধ ৫৬, খ্রিস্টান ২০ এবং অন্যান্য ২৯৭। এ উপজেলায় মুন্ডা, ভগবেনে, চন্ডাল, কৈবর্ত প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।
''জনসংখ্যা'' ৩১৮২৫৪; পুরুষ ১৫৩৪৪১, মহিলা ১৬৪৮১৩। মুসলিম ২৫২৫৪৫, হিন্দু ৬৪৮১৬, বৌদ্ধ , খ্রিস্টান ৩০ এবং অন্যান্য ৮৬০। এ উপজেলায় মুন্ডা, ভগবেনে, চন্ডাল, কৈবর্ত প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।


''জলাশয়'' যমুনা, রায়মঙ্গল, অর্পণগাছিয়া, মালঞ্চ, হাড়িয়াভাঙ্গা ও চুনার নদী এবং ভেট খাল উল্লেখযোগ্য।
''জলাশয়'' যমুনা, রায়মঙ্গল, অর্পণগাছিয়া, মালঞ্চ, হাড়িয়াভাঙ্গা ও চুনার নদী এবং ভেট খাল উল্লেখযোগ্য।
১৬ নং লাইন: ১৬ নং লাইন:
| শহর  || গ্রাম  || শহর  || গ্রাম
| শহর  || গ্রাম  || শহর  || গ্রাম
|-
|-
| - || ১২  || ১২৭  || ২১৬  || ১৪৪৮৭  || ২৯৯২৯৪  || ১৫৯  || ৫৪.৫৯  || ৩৮.৯৪
| - || ১৩ || ১২৬ || ২১৮ || ১৭২৫৪ || ৩০১০০০ || ১৬২ || ৬৬.৮৭ || ৪৭.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
২৪ নং লাইন: ২৪ নং লাইন:
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| ১০.৭৬  || ৫ || ১৪৪৮৭  || ১৩৪৬  || ৫৪.৫৯
| ১০.৮৯ || ৫ || ১৭২৫৪ || ১৫৮৪ || ৬৬.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
৩৪ নং লাইন: ৩৪ নং লাইন:
| পুরুষ  || মহিলা
| পুরুষ  || মহিলা
|-  
|-  
| আটুলিয়া ০৭  || ১০১৩৪  || ১৫১৯০  || ১৪৯৬২  || ৪৪.৫৯
| আটুলিয়া ১১ || ১১০৬ || ১৩৯৭৮ || ১৬৪৩৪ || ৫০.
|-
|-
| ঈশ্বরীপুর ৩৯ || ৬৮৫১  || ১৬২৭৬  || ১৫৩৩৯  || ৪০.০৭
| ঈশ্বরীপুর ৩৯ || ১২৬৩৪ || ১৬০২৬ || ১৬৮০৫ || ৪৮.
|-
|-
| কাশিমারী ৫৫ || ৮১৪৭  || ১২৩১৩  || ১৩৪২৪  || ৩৬.১৯
| কাশিমারী ৫৫ || ৮০২৫ || ১১৮৮০ || ১৪৭৭৭ || ৫০.
|-
|-
| কৈখালী ৪৭ || ১১০২৫  || ১২৭২৪  || ১২৬৩৮  || ৩৯.৯২
| কৈখালী ৪৭ || ১১০২৬ || ১১৪২৭ || ১৩১৮১ || ৪৯.
|-
|-
| গাবুরা ৩১ || ৯৭২৮  || ১৬২৭১  || ১৬১৪৬  || ৩১.৪০
| গাবুরা ৩১ || ১০১৯৫ || ১৫৩৯৮ || ১৫৭১৭ || ৩৫.
|-
|-
| নূরনগর ৭১ || ৬৭২৬  || ৮৭৫৯  || ৮৫৬১  || ৩৮.৩২
| নূরনগর ৭১ || ৬৭৫১ || ৮৮২৪ || ৯২১০ || ৫০.
|-
|-
| পদ্মপুকুর ৭৯ || ১০১১৬  || ১১৫৮৭  || ১১২৭১  || ৩৭.০৮
| পদ্মপুকুর ৭৯ || ১০১২৯ || ১২৪৮৯ || ১২১৬৪ || ৪৬.
|-
|-
| বুড়ি গোয়ালিনী ২৩ || ১০৫৩৩  || ১২৪৭৭  || ১১৮২৭  || ৩৮.৯৩
| বুড়ি গোয়ালিনী ২৩ || ১০৬৫১ || ১২২৩৭ || ১২৬৭৬ || ৪৫.
|-
|-
| ভুরুলিয়া ১৫ || ৫৯৪৩  || ৮৮০৯  || ৮৬৫০  || ৪১.০৭
| ভুরুলিয়া ১৫ || ৬০৩৭ || ৯৫৭৩ || ১০৪৬৬ || ৪৪.
|-
|-
| মুন্সিগঞ্জ ৬৩ || ১২১৩৫  || ১৬৯০১  || ১৬০৮০  || ৪২.৩৪
| মুন্সিগঞ্জ ৬৩ || ১০১৪২ || ১৫৪১৭ || ১৬৪১৫ || ৫০.
|-
|-
| রমজান নগর ৮৭ || ৯১৬৩  || ১১৬৪১  || ১০৮৬৩  || ৩৪.৪৬
| রমজান নগর ৮৭ || ১৫২২৭ || ১০৭০০ || ১১২৩১ || ৪৭.
|-
|-
| শ্যামনগর ৯৪ || ৭৪৮৬  || ১৪০২৯  || ১২৯০৪  || ৪৮.৩৮
| শ্যামনগর ৯৪ || ৭৫৫৮ || ১৫৪৯২ || ১৫৭৩৭ || ৬১.
|-
| সাতক্ষীরা রেঞ্জ ৯৭  || ৩৭৯২৭৫  || ৩৩১৭  || ৮২২  || ৪৮.৬৮
|}
|}
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।


[[Image:SayamnagarUpazila.jpg|thumb|right|400px]]
[[Image:SayamnagarUpazila.jpg|thumb|right|400px]]
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' বংশীপুর শাহী মসজিদ (মুগল আমলে নির্মিত), নুরুল্লা খাঁ মাযার (নূরনগর), শ্যামনগর জমিদার বাড়ি, ছয় গম্বুজবিশিষ্ট হাম্মামখানা (বংশীপুর), যশোরেশ্বরী মন্দির (ঈশ্বরীপুর), চন্ড ভৈরবের মন্দির (ঈশ্বরীপুর), যিশুর গির্জা (১৫৯৯), গোবিন্দ দেবের মন্দির (গোপালপুর, ১৫৯৩), জাহাজঘাটা নৌদুর্গ (খানপুর)।
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' বংশীপুর শাহী মসজিদ (মুগল আমলে নির্মিত), নুরুল্লা খাঁ মাযার (নূরনগর), শ্যামনগর জমিদার বাড়ি, ছয় গম্বুজবিশিষ্ট হাম্মামখানা (বংশীপুর), যশোরেশ্বরী মন্দির (ঈশ্বরীপুর), চন্ড ভৈরবের মন্দির (ঈশ্বরীপুর), যিশুর গির্জা (১৫৯৯), গোবিন্দ দেবের মন্দির (গোপালপুর, ১৫৯৩), জাহাজঘাটা নৌদুর্গ (খানপুর)।


''মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি'' ১৯৭১ সালের ৬ মে ৯ নং সেক্টর কমান্ডার এম.এ. জলিলের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধা ও পাকসেনাদের গাবুরায় সংঘঠিত লড়াইয়ে ১১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৯ আগস্ট উপজেলার গোপালপুরে মুক্তিযোদ্ধা ও পাকসেনাদের মধ্যে এক লড়াইয়ে মুক্তিযোদ্ধা সুবেদার ইলিয়াস খাঁ, আবুল কালাম আজাদ, আব্দুল কাদের ও আব্দুল জববার শহীদ হন। ৩ সেপ্টেম্বর মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক নবাব্দি ফকিরের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনীর গানবোট ধ্বংস করে এবং পাকবাহিনী পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। ৯ সেপ্টেম্বর রাজাকারদের সহায়তায় পাকসেনারা হরিনগর বাজারে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায় এবং ২৮ জন নিরীহ লোককে হত্যা করে। ১২ অক্টোবর মুক্তিযোদ্ধারা ভেটখালির রাজাকার ক্যাম্প আক্রমণ করলে রাজাকাররা ক্যাম্প ছেড়ে পালিয়ে যায় এবং মুক্তিযোদ্ধারা বিস্ফোরকের সাহায্যে ক্যাম্প জ্বালিয়ে দেয়।
''মুক্তিযুদ্ধ'' ১৯৭১ সালের ৬ মে ৯ নং সেক্টর কমান্ডার এম.এ. জলিলের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধা ও পাকসেনাদের গাবুরায় সংঘঠিত লড়াইয়ে ১১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৯ আগস্ট উপজেলার গোপালপুরে মুক্তিযোদ্ধা ও পাকসেনাদের মধ্যে এক লড়াইয়ে মুক্তিযোদ্ধা সুবেদার ইলিয়াস খাঁ, আবুল কালাম আজাদ, আব্দুল কাদের ও আব্দুল জব্বার শহীদ হন। ৩ সেপ্টেম্বর মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক নবাব্দি ফকিরের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনীর গানবোট ধ্বংস করে এবং পাকবাহিনী পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। ৯ সেপ্টেম্বর রাজাকারদের সহায়তায় পাকসেনারা হরিনগর বাজারে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায় এবং ২৮ জন নিরীহ লোককে হত্যা করে। ১২ অক্টোবর মুক্তিযোদ্ধারা ভেটখালির রাজাকার ক্যাম্প আক্রমণ করলে রাজাকাররা ক্যাম্প ছেড়ে পালিয়ে যায় এবং মুক্তিযোদ্ধারা বিস্ফোরকের সাহায্যে ক্যাম্প জ্বালিয়ে দেয়। উপজেলার হরিনগর ও কাতখালীতে ২টি বধ্যভূমি রয়েছে; গোপালপুর ও হরিনগরে ২টি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়েছে।


''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন'' বধ্যভূমি ২ (হরিনগর ও কাতখালী); স্মৃতিস্তম্ভ ২ (গোপালপুর ও হরিনগর)।
''বিস্তারিত দেখুন'' শ্যামনগর উপজেলা, ''বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ'', বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৯।


''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান''  মসজিদ ২৫১, মন্দির ৯৮, গির্জা ১, তীর্থস্থান ২, মাযার ৪। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: বংশীপুর শাহী মসজিদ (টেঙ্গা মসজিদ), নুরুল্লা খাঁ মাযার (নূরনগর), যশোরেশ্বরী মন্দির, চন্ড ভৈরবের মন্দির।
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান''  মসজিদ ২৫১, মন্দির ৯৮, গির্জা ১, তীর্থস্থান ২, মাযার ৪। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: বংশীপুর শাহী মসজিদ (টেঙ্গা মসজিদ), নুরুল্লা খাঁ মাযার (নূরনগর), যশোরেশ্বরী মন্দির, চন্ড ভৈরবের মন্দির।


''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৩৯.৬৯%; পুরুষ ৪৭.৭৫%, মহিলা ৩১.৩৩%। কলেজ ৯, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৮৩, কমিউনিটি স্কুল ৩, মাদ্রাসা ৪৬। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: শ্যামনগর মহসীন কলেজ (১৯৭২), নকিপুর হরিচরণ মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯৯), নূরনগর আশালতা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫৫), ভুরুলিয়া নাগবাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৪৫), পাতাখালি মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৫৪), পাতাখালি সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৪৫), জয়নগর হামিদিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৬৩)।
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৪৮.%; পুরুষ ৫৩.%, মহিলা ৪৩.%। কলেজ ৯, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৮৩, কমিউনিটি স্কুল ৩, মাদ্রাসা ৪৬। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: শ্যামনগর মহসীন কলেজ (১৯৭২), নকিপুর হরিচরণ মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯৯), নূরনগর আশালতা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫৫), ভুরুলিয়া নাগবাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৪৫), পাতাখালি মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৫৪), পাতাখালি সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৪৫), জয়নগর হামিদিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৬৩)।


''পত্র-পত্রিকা''  অয়ন (১৯৯৭), প্রত্যয় (২০০১)।
''পত্র-পত্রিকা''  অয়ন (১৯৯৭), প্রত্যয় (২০০১)।
৮৭ নং লাইন: ৮৫ নং লাইন:
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য ২০, গবাদিপশু ৫২, হাঁস-মুরগি ৮১, হ্যাচারি ২৯।
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য ২০, গবাদিপশু ৫২, হাঁস-মুরগি ৮১, হ্যাচারি ২৯।


''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ৬৭ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৩৫ কিমি, কাঁচারাস্তা ৮১১; নৌপথ ৭৩ নটিক্যাল মাইল।
''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ৮৯ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৬৯ কিমি, কাঁচারাস্তা ১২৪৯।


''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি, ঘোড়ার গাড়ি, গরুর গাড়ি।
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি, ঘোড়ার গাড়ি, গরুর গাড়ি।
৯৯ নং লাইন: ৯৭ নং লাইন:
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''   চিংড়ি, ধান, পাট।
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''   চিংড়ি, ধান, পাট।


''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে .৪০% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৯.% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।


''প্রাকৃতিক সম্পদ''  এ উপজেলায় বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবন অবস্থিত। এছাড়া মৎস্য ও অন্যান্য প্রাণীজ সম্পদ উল্লেখযোগ্য।
''প্রাকৃতিক সম্পদ'' এ উপজেলায় বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবন অবস্থিত। এছাড়া মৎস্য ও অন্যান্য প্রাণীজ সম্পদ উল্লেখযোগ্য।


''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৩৫.৯৪, ট্যাপ ৬.৪৬%, পুকুর ৫০.৭৪% এবং অন্যান্য .৮৬%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।
''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৪৩.০%, ট্যাপ .% এবং অন্যান্য ৫৬.%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।


''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৪৪.৮৪% (শহরে ৮০.৭১% এবং গ্রামে ৪৩.১০%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৪৭.৪৭% (শহরে ২.৩৬% এবং গ্রামে ৪২.৩৫%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। তবে .৬৯% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৬২.% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩৩.% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে । তবে .% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।


''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১০, ক্লিনিক ৩৮।
''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১০, ক্লিনিক ৩৮।
১১৩ নং লাইন: ১১১ নং লাইন:
''এনজিও'' ব্র্যাক, আশা, কারিতাস, প্রগতি।  [মিজানুর রহমান]
''এনজিও'' ব্র্যাক, আশা, কারিতাস, প্রগতি।  [মিজানুর রহমান]


'''তথ্যসূত্র'''   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, শ্যামনগর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।
'''তথ্যসূত্র'''   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, শ্যামনগর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।


[[en:Shyamnagar Upazila]]
[[en:Shyamnagar Upazila]]

১৫:৪৪, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

শ্যামনগর উপজেলা (সাতক্ষীরা জেলা)  আয়তন: ১৯৬৮.২৩ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২১°৩৬´ থেকে ২২°২৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°০০´ থেকে ৮৯°১৯´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে কালীগঞ্জ (সাতক্ষীরা) ও আশাশুনি উপজেলা, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর, পূর্বে কয়রা ও আশাশুনি উপজেলা, পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য ।

জনসংখ্যা ৩১৮২৫৪; পুরুষ ১৫৩৪৪১, মহিলা ১৬৪৮১৩। মুসলিম ২৫২৫৪৫, হিন্দু ৬৪৮১৬, বৌদ্ধ ৩, খ্রিস্টান ৩০ এবং অন্যান্য ৮৬০। এ উপজেলায় মুন্ডা, ভগবেনে, চন্ডাল, কৈবর্ত প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।

জলাশয় যমুনা, রায়মঙ্গল, অর্পণগাছিয়া, মালঞ্চ, হাড়িয়াভাঙ্গা ও চুনার নদী এবং ভেট খাল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন শ্যামনগর থানা গঠিত হয় ১৮৯৭ সালে। বর্তমানে এটি উপজেলা।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ১৩ ১২৬ ২১৮ ১৭২৫৪ ৩০১০০০ ১৬২ ৬৬.৮৭ ৪৭.৫
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
১০.৮৯ ১৭২৫৪ ১৫৮৪ ৬৬.৮
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
আটুলিয়া ১১ ১১০৬ ১৩৯৭৮ ১৬৪৩৪ ৫০.১
ঈশ্বরীপুর ৩৯ ১২৬৩৪ ১৬০২৬ ১৬৮০৫ ৪৮.৮
কাশিমারী ৫৫ ৮০২৫ ১১৮৮০ ১৪৭৭৭ ৫০.৪
কৈখালী ৪৭ ১১০২৬ ১১৪২৭ ১৩১৮১ ৪৯.৯
গাবুরা ৩১ ১০১৯৫ ১৫৩৯৮ ১৫৭১৭ ৩৫.৯
নূরনগর ৭১ ৬৭৫১ ৮৮২৪ ৯২১০ ৫০.৪
পদ্মপুকুর ৭৯ ১০১২৯ ১২৪৮৯ ১২১৬৪ ৪৬.৮
বুড়ি গোয়ালিনী ২৩ ১০৬৫১ ১২২৩৭ ১২৬৭৬ ৪৫.৫
ভুরুলিয়া ১৫ ৬০৩৭ ৯৫৭৩ ১০৪৬৬ ৪৪.৩
মুন্সিগঞ্জ ৬৩ ১০১৪২ ১৫৪১৭ ১৬৪১৫ ৫০.১
রমজান নগর ৮৭ ১৫২২৭ ১০৭০০ ১১২৩১ ৪৭.৩
শ্যামনগর ৯৪ ৭৫৫৮ ১৫৪৯২ ১৫৭৩৭ ৬১.৭

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ বংশীপুর শাহী মসজিদ (মুগল আমলে নির্মিত), নুরুল্লা খাঁ মাযার (নূরনগর), শ্যামনগর জমিদার বাড়ি, ছয় গম্বুজবিশিষ্ট হাম্মামখানা (বংশীপুর), যশোরেশ্বরী মন্দির (ঈশ্বরীপুর), চন্ড ভৈরবের মন্দির (ঈশ্বরীপুর), যিশুর গির্জা (১৫৯৯), গোবিন্দ দেবের মন্দির (গোপালপুর, ১৫৯৩), জাহাজঘাটা নৌদুর্গ (খানপুর)।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের ৬ মে ৯ নং সেক্টর কমান্ডার এম.এ. জলিলের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধা ও পাকসেনাদের গাবুরায় সংঘঠিত লড়াইয়ে ১১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৯ আগস্ট উপজেলার গোপালপুরে মুক্তিযোদ্ধা ও পাকসেনাদের মধ্যে এক লড়াইয়ে মুক্তিযোদ্ধা সুবেদার ইলিয়াস খাঁ, আবুল কালাম আজাদ, আব্দুল কাদের ও আব্দুল জব্বার শহীদ হন। ৩ সেপ্টেম্বর মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক নবাব্দি ফকিরের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনীর গানবোট ধ্বংস করে এবং পাকবাহিনী পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। ৯ সেপ্টেম্বর রাজাকারদের সহায়তায় পাকসেনারা হরিনগর বাজারে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায় এবং ২৮ জন নিরীহ লোককে হত্যা করে। ১২ অক্টোবর মুক্তিযোদ্ধারা ভেটখালির রাজাকার ক্যাম্প আক্রমণ করলে রাজাকাররা ক্যাম্প ছেড়ে পালিয়ে যায় এবং মুক্তিযোদ্ধারা বিস্ফোরকের সাহায্যে ক্যাম্প জ্বালিয়ে দেয়। উপজেলার হরিনগর ও কাতখালীতে ২টি বধ্যভূমি রয়েছে; গোপালপুর ও হরিনগরে ২টি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়েছে।

বিস্তারিত দেখুন শ্যামনগর উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৯।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান  মসজিদ ২৫১, মন্দির ৯৮, গির্জা ১, তীর্থস্থান ২, মাযার ৪। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: বংশীপুর শাহী মসজিদ (টেঙ্গা মসজিদ), নুরুল্লা খাঁ মাযার (নূরনগর), যশোরেশ্বরী মন্দির, চন্ড ভৈরবের মন্দির।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৮.৬%; পুরুষ ৫৩.৮%, মহিলা ৪৩.৯%। কলেজ ৯, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৮৩, কমিউনিটি স্কুল ৩, মাদ্রাসা ৪৬। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: শ্যামনগর মহসীন কলেজ (১৯৭২), নকিপুর হরিচরণ মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯৯), নূরনগর আশালতা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫৫), ভুরুলিয়া নাগবাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৪৫), পাতাখালি মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৫৪), পাতাখালি সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৪৫), জয়নগর হামিদিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৬৩)।

পত্র-পত্রিকা  অয়ন (১৯৯৭), প্রত্যয় (২০০১)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৭, নাট্যদল ৪, সার্কাস পার্টি ১, নাট্যমঞ্চ ১, সিনেমা হল ২, মহিলা সমিতি ৩, ক্লাব ৮২।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৪.৯৮%, অকৃষি শ্রমিক ৬.০২%, শিল্প ০.৬১%, ব্যবসা ১৪.৬০%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.৫৮%, চাকরি ৩.৫৩%, নির্মাণ ০.৯৪%, ধর্মীয় সেবা ০.১৬%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.২০% এবং অন্যান্য ৭.৩৪%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৬.৬৯%, ভূমিহীন ৪৩.৩১%। শহরে ৫৪.৫৮% এবং গ্রামে ৫৬.৭৯% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি-ফসল  ধান, পাট, গম, আলু, সরিষা, তিল, তিসি, ডাল, শাকসবজি।

বিলুপ্ত ও বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি  পাটনাই ধান, তালমুগুর ধান।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ২০, গবাদিপশু ৫২, হাঁস-মুরগি ৮১, হ্যাচারি ২৯।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৮৯ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৬৯ কিমি, কাঁচারাস্তা ১২৪৯।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, ঘোড়ার গাড়ি, গরুর গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা চামড়াজাত শিল্প, তেলকল, বরফকল।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, তাঁতশিল্প, সূচিশিল্প, বাঁশের কাজ, কাঠের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৪২, মেলা ৬। শ্যামনগর হাট, নওয়াবেঁকী, ভেটখালি, হরিনগর, মুন্সিগঞ্জ, গাবুরা ও নূরনগর বাজার এবং ঈশ্বরীপুর বারুণী মেলা, কাটাখালি শিবমেলা ও শ্যামনগর বৈশাখী মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য   চিংড়ি, ধান, পাট।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৯.৮% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

প্রাকৃতিক সম্পদ এ উপজেলায় বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবন অবস্থিত। এছাড়া মৎস্য ও অন্যান্য প্রাণীজ সম্পদ উল্লেখযোগ্য।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৪৩.০%, ট্যাপ ০.৮% এবং অন্যান্য ৫৬.২%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৬২.৭% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩৩.০% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে । তবে ৪.৩% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১০, ক্লিনিক ৩৮।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ২০০৯ সালের ২১ মে সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস আইলার আঘাতে এ উপজেলায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

এনজিও ব্র্যাক, আশা, কারিতাস, প্রগতি।  [মিজানুর রহমান]

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, শ্যামনগর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।