শেখ ফরিদুদ্দীন মসউদ গঞ্জেশকর

শেখ ফরিদুদ্দীন মসউদ গঞ্জেশকর (১১৭৭-১২৬৯)  সুফিসাধক ও ইসলাম প্রচারক। পাকিস্তানের মূলতানে তাঁর জন্ম। এগারো বছর বয়সে তিনি কুরআন মুখস্থ করেন এবং মায়ের সঙ্গে  হজ্জ পালন করেন। বিভিন্ন ওস্তাদের নিকট ধর্মীয় শিক্ষা লাভ করে তিনি কুতুবুদ্দীন বখতিয়ার কাকীর মুরিদ হন এবং চিশতিয়া তরিকায় খিলাফত ও ‘গঞ্জেশকর’ (শর্করাভান্ডার) উপাধি লাভ করেন।

ফরিদুদ্দীন সমকালীন বিখ্যাত সুফি শাহাবুদ্দীন সুহ্রাওয়ার্দী, খাজা মঈনুদ্দীন চিশতী (রা.), বাহাউদ্দীন জাকারিয়া এবং জালালুদ্দীন তাবরিজির সান্নিধ্য লাভ করেন। তাঁর ফাওয়ায়েদুস সালেকীন, বদরুদ্দীন ইসহাকের ইসরারুল আউলিয়া, আমীর হাসান সিজ্জির ফওয়ায়েদুল ফওয়াদ এবং আমীর খসরুর আফজালুল ফওয়ায়েদ গ্রন্থে তাঁর জীবন ও কর্ম সম্পর্কে নানা তথ্য আছে। তিনি বহুলোককে  ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করেন। তাঁর  খানকাহ ও লঙ্গরখানা সকলের জন্য উন্মুক্ত ছিল।

ফরিদুদ্দীনের প্রধান খলিফাদের মধ্যে ছিলেন বদরুদ্দীন ইসহাক (জামাতা), নিজামুদ্দীন আউলিয়া, জালালুদ্দীন হাসুবী, আলী আহমদ সাবির, শেখ আরিফ প্রমুখ। তাঁর অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে উপমহাদেশে চিশতিয়া তরিকা জনপ্রিয়তা লাভ করে। কারও কারও মতে শেখ ফরিদুদ্দীন চট্টগ্রামের ষোলশহরের একটি টিলায় ত্রিশ বছর অধ্যাত্মসাধনা করেন। তাঁর চোখের পানিতে একটি ফোয়ারার সৃষ্টি হয় বলে প্রবাদ আছে, যা ‘শেখ ফরিদের চশমা’ নামে অভিহিত। সেখানে তাঁর  মাযার অবস্থিত। প্রতি বছর পাঁচই মুহররম তাঁর ওরস পালিত হয় এবং তাতে বহু লোকের সমাগম হয়।  [দেওয়ান নূরুল আনোয়ার হোসেন চৌধুরী]