শিলায়িত কাঠ

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২৩:০৩, ৪ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Added Ennglish article link)

শিলায়িত কাঠ (Petrified Wood)  সাধারণ কাঠের ফাঁকা স্থানে এবং কোষের ভিতরের অংশে বিভিন্ন মণিকের উপাদান, যেমন- সিলিকা অথবা ক্যালসাইট ইত্যাদির অনুপ্রবেশের মাধ্যমে প্রস্তরীভূত কাষ্ঠ জীবাশ্ম। মণিকের প্রতিস্থাপন মাঝে-মধ্যেই এত নিখুঁতভাবে হয় যে, প্রস্তরীভূত প্রক্রিয়ায় কাঠের অভ্যন্তরীণ গঠন এবং বহিরাকৃতি যথাযথভাবে সংরক্ষিত থাকে। কখনো কখনো  কাঠের কোষের গঠন পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করা যায়। শিলায়িত কাঠ মণিকের রাসায়নিক প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে হয়। এই প্রতিস্থাপন সাধারণত ক্যালসিডনি মণিক দ্বারা সংঘটিত হয়, কিন্ত ওপাল ও অন্যান্য মণিকও কাঠের উপাদানকে প্রতিস্থাপন করে থাকে। যখন এই কাঠ প্রস্তরীভূত হয়, তখন এর পূর্বের কাঠামো একই অবস্থায় থাকে, কিন্তু একটি নতুন উপাদান কাঠের পূর্বের স্থান দখল করে।

প্রস্তরীভূত কাঠ একটি গুরুত্বপূর্ণ জীবাশ্ম, যা এর জন্মের সময়কার পরিবেশ সম্পর্কে ধারণা দেয়। অ্যারিজোনার জাতীয় স্তম্ভ বলে বিবেচিত সেখানকার শিলায়িত বনটি পুরোপুরি প্রস্তরীভূত হয়েছিল। এই প্রাচীন বনের অবশিষ্টাংশ ভূ-পৃষ্ঠের স্বল্প গভীরতায় সিলিকায়িত স্তর হিসেবে পাওয়া যায়। যেসমস্ত কাঠের প্রতিস্থাপন ক্যালসিডনি বা ওপাল মণিক দ্বারা হয়েছে তাদেরকে বিশেষভাবে ‘সিলিকায়িত কাঠ’ বলা হয়।

বাংলাদেশে বরেন্দ্রভূমি ও মধুপুর গড়ে  প্রস্তরীভূত শিলা পাওয়া যায়। এটি ডুপি টিলা স্তরসমষ্টির একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য এবং লালমাই পাহাড়শ্রেণিতে প্রচুর পরিমাণে দেখা যায়। কাপ্তাই হ্রদের একটি ছোট দ্বীপে ডুপি টিলা স্তরসমষ্টিতে প্রস্তরীভূত পাতার ছাপ পাওয়া গিয়েছে। আঞ্চলিকভাবে এই প্রস্তরীভূত শিলাকে ‘অসুরের হাড্ডি’ বলে এবং এটি দেশী ঔষধ হিসেবে ব্যবহূত হয়।

[কাজী মতিন উদ্দিন আহমেদ]